আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নূপুর

আমাকে চাই আমার মতো করে । kingshuk2kingshuk@gmail.com

বিজয় তখন অনার্স ২য় বর্ষে পড়ে । একদিন তার বাসায় কিছুদিনের জন্য বেড়াতে এল তার এক আত্মীয় । আত্মীয় বলতে বিজয়ের বড় কাকীর ভাগ্নী । নাম বর্ষা ।

সে একাদশ শ্রেনীতে পড়ে । বিজয়ের সাথে তার আগে কখনও পরিচয় ছিল না । এবারই প্রথম পরিচয় হল । এ বাড়ীতে বর্ষার সমবয়সী কোন মেয়ে নেই । সে কারণেই বিজয়ের সাথে বর্ষার সময় কাটানোর জন্য কথাবার্তা একটু বেশী হলো ।

বিজয়দের গ্রামে একটা প্রাইমারী স্কুল আছে । সেই স্কুলের প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশ সুন্দর । স্কুলের সামনে বিশাল সবুজ মাঠ । স্কুলের পেছনে এবং দুপাশে বিশাল দিঘী । বিকেলে মাঠের সবুজ ঘাসে বসতে খুব ভাল লাগে ।

প্রতিদিন বিকেল বেলা বিজয় ও বর্ষা গ্রামের মেঠোপথে ঘুরে বেড়ানোর পর ঐ মাঠে কিছু সময়ের জন্য বসতো এবং গল্প করতো । এর মধ্যে একদিন বর্ষা নূপুর পায়ে ঘুমিয়ে ছিল । সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখে তার এক পায়ের নূপুর নেই । কিছুক্ষণ খোজাখুজি করার পর নূপুর পাওয়া গেল না । অন্যান্য দিনের মতো বিকেলে স্কুলের মাঠে বসে বর্ষা নূপুর হারানোর ঘটনাটা শেয়ার করলো ।

তখন বিজয় বললো ভালো করে খোজে দেখলে নূপুর পাওয়া যাবে । বর্ষা বলে আমি খোজেছি পাওয়া যাবে না । এভাবে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বর্ষা বলে নূপুর যদি পাওয়া যায় তবে আপনাকে একটা গিফট দেব । কি গিফট? আপনি কি চান? তুমি কি দিবে? আপনি যা চান । আমি যা চাইব তাই? হ্যা তাই ।

ভেবে বলেছ? হ্যা । আমি তো তোমাকেও চাইতে পারি ! সেটা আপনি চাইবেন না । ঠিক আছে । আমি তোমার কাছ থেকে সময়মতো চেয়ে নেব এই বলে বিজয় সেদিনের মতো প্রসংগটার ইতি টানে । তারপর থেকে বিজয় মনে মনে ভাবে কি চাইতে পারতো সে? চাইলে সে বর্ষাকেই নিজের করে চাইতে পারতো ।

কিন্তু পরক্ষনেই চিন্তা করে সে কেবল অনার্স পড়ে । পরিবারের বড় সন্তান সে । অন্যদিকে বাবা গত হয়েছেন হাইস্কুলে পড়াকালীন সময়ে । বাবা মায়ের স্বপ্ন পড়াশুনা শেষ করবে । ছোট ভাইবোন আছে তাদের দেখশোনা করতে হবে ।

তো এটাও চাওয়া সম্ভব না । দুসপ্তাহ পর বর্ষা চলে গেল । যাওয়ার সময় বলে গেল আপনি কিছু চাইলেন না আমার কাছে । বিজয় বললো পরে কোন সময় চেয়ে নেব । তখন মোবাইল ছিল না ।

তাই যোগাযোগ তেমন হতো না । যদি বেড়াতে যেত তখনই দেখা এবং কথা হতো । এর পর ৩/৪ বছর দুজনের মধ্যে কোন যোগাযোগ নেই । এরমধ্যে বর্ষার বিয়ে হয়ে গেছে । স্বামী ব্যবসায়ী ।

একদিন বর্ষা তার আত্মীয়ের মাধ্যমে বিজয়ের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে একদিন ফোন দিল । প্রথমে নিজের পরিচয় দেয়নি । বিজয় কন্ঠ চিনতে পারেনি । সেই অনেকদিন আগে কথা হয়েছিল । বর্ষা নিজের পরিচয় দেয়ার পর অনেক কথা হলো ।

বর্ষার বিয়ের কথা এবং আরও অনেক কথা । একপর্যায়ে বর্ষা বললো আপনি আমার কাছে একটা কিছু চেয়ে নেয়ার কথা ছিল । চাইলেন না তো কোনদিন ? বিজয় বললো আমি যা চাইতাম তা যখন তোমার দেয়ার ক্ষমতা ছিল তখন আমার চাওয়ার সামর্থ ছিল না, আজ আমার চাওয়ার সামর্থ আছে কিন্তু তোমার দেয়ার সামর্থ নেই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।