আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত ১৯ এবং ১৯৬ প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা

যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর।

ইফ ইউ আর বিলিভার, ইউ আর মাই ফেন্ড। ইফ ইউ আর ডিজবিলিভার, প্লিজ....ইগনোর মি। (আপনি যদি বিশ্বাসীদের একজন হন তাহলে আপনি আমার বন্ধু।

আপনি যদি অবিশ্বাসী হন, দয়া করে আমাকে এড়িয়ে চলুন। ) কিছুদিন আগে ব্লগে ১৯৬ প্যালিনড্রোমিক সমস্যা নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম। বিশ্বের তাবৎ গণিতজ্ঞরা আধুনিক সব কম্পিউটারের সাহায্যে বছরের পর বছর চেষ্টা করেও ১৯৬ সংখ্যাটির প্যালিনড্রোমিক নাম্বার বের করতে পারেন নি। বেশ ক'জন পাঠক বিষয়টি খুব মজার বলেছেন এবং নাম্বার নিয়ে নতুন কিছু লেখা ব্লগে ছাড়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। আমি দীর্ঘদিন ধরে এই ১৯৬ সংখ্যাটি নিয়ে ভাবছি।

আমার ভাবনার বিষয়- ১৯৬ সংখ্যাটি কেনো প্যালিনড্রোমিক হচ্ছে না। লক্ষ লক্ষ বার ইটারেশন করেও কেন ১৯৬ এর প্যালিনড্রোমিক নাম্বার জানা যাচ্ছে না যেখানে অন্য যে কোন পূর্ণ সংখ্যা ২ থেকে সর্বোচ্চ ২০/৩০ বারের মধ্যেই প্যালিনড্রোমিক হয়ে যাচ্ছে। গণিতজ্ঞরা এই সমস্যাটির নাম দিয়েছেন ‌'কোয়েস্ট ফর ১৯৬ অ্যালগরিদম। সূত্রটা দিলে পাঠকরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন। একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বুঝানো যাক।

১৯৫ সংখ্যাটিকেই প্যালিনড্রোমিক করার চেষ্টা করি। ১৯৫ কে উল্টিয়ে লিখলে ৫৯১। সংখ্যা দুটোকে যোগ করলে হয় ৭৮৬। যেহেতু প্যালিনড্রোমিক হয়নি তাই এটিকে আবার উল্টিয়ে লিখে মূল সংখ্যার সাথে যোগ করতে হবে। যেমন- ৭৮৬+৬৮৭=১৪৭৩।

১৪৭৩+৩৭৪১=৫২১৪ ৫২১৪+৪১২৫=৯৩৩৯ এই ৯৩৩৯ একটি প্যালিনড্রোমিক নাম্বার। কারণ এই স্যংখাটিকে উল্টিয়ে পড়লেও নয় তিন তিন নয় (৯৩৩৯) ই হবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে ১০ হাজার এর নিচের শতকরা ৮০ ভাগ পূর্ণ সংখ্যাই ৪ বা তার কম ধাপে প্যালিনড্রোমিক হয়ে যায়। শতকরা ৯০ ভাগ ৭ বা তার কম ধাপে প্যালিনড্রোমিক হয়। ৮৯ হচ্ছে এমন একটি সংখ্যা যেটি ২৪ ধাপে প্যালিনড্রোমিক হয়।

গণিতজ্ঞরা এরকম সংখ্যা কতগুলো আছে তা জানার চেষ্টা করছেন। একজন গণিতজ্ঞ ০ থেকে আরম্ভ করে ১৮ ডিজিট পর্যন্ত সংখ্যার প্যালিনড্রোমিক নাম্বার বের করেছেন। ১৭ ডিজিট পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৩৬ ধাপ লেগেছে। ১৮ ডিজিট এর সব ক'টি সংখ্যার প্যালিনড্রোমিক হয়ে গেছে ২৩২ ধাপের মধ্যেই। '১৯৬' সংখ্যাটির প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা বের করা যাচ্ছে না।

পাগল গণিতজ্ঞরা সর্বশেষ সেপ্টেম্বর ২, ২০০৮ তারিখে ১৯ ডিজিটের 1,186,060,307,891,929,990 এই সংখ্যাটি ২৬১ ধাপে প্যালিনড্রোমিক করে ছেড়েছেন। এটি 44562665878976437622437848976653870388884783662598425855963436955852489526638748888307835667984873422673467987856626544 সংখ্যার একটি অংকে পৌঁছে প্যালিনড্রোমিক হয়েছে। '১৯৬'তিন ডিজিটের একটি সংখ্যা। তিন ডিজিটের যত সংখ্যা আছে সবই প্যালিনড্রোমিক হয়ে গেছে। ১৮৭ এবং ৮৬৯ এই দুটি সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৩ ধাপে প্যালিনড্রোমিক হয়েছে।

কিন্তু ১৯৬ সংখ্যাটি ২৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৩৬ বার ইটারেশন করেও এর প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা বের করা যায় নি। ১৯৬ সংখ্যাটির পূর্বের সংখ্যা হচ্ছে ১৯৫। এই সংখ্যাটি উল্টিয়ে লিখে মূল সংখ্যার সাথে যোগ করলে হয় ৭৮৬। সংখ্যাটিকে কি পরিচিত মনে হচ্ছে? হ্যাঁ পাঠকরা ঠিকই ধরতে পেরেছেন। "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" লিখতে আরবি যতগুলো ১৯ টি বর্ণ লাগে এবং তাদের গাণিতিক সমষ্টি হচ্ছে ৭৮৬।

তাই বলা যায় ১৯৬ সংখ্যাটির পূর্বের সংখ্যাটি অর্থাৎ ১৯৫ সংখ্যাটি 'দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহর নামে' বা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম- এই আয়াতটির প্রতিনিধিত্ব করে। কোরআনে ১১৪ টি সূরা আছে। প্রতিটি সূরার প্রথমেই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আছে ১ টি সূরা ছাড়া। কোরআনের নবম সূরা তাওবা (ইংরেজিতে Repentance) এই সূরাটিতে নেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংখ্যায় ১১৩ হওয়ার কথা।

কিন্তু আল্লাহর সুক্ষ্ম গাণিতিক নিদর্শনের স্বাক্ষী হচ্ছে কোরআনের ২৭ তম সূরা নামল। ইংরেজিতে The sura “Ant”. ৩০ তম আয়াতে বলা হয়েছে-'ইহা সুলায়মানের নিকট হইতে এবং ইহা এই ঃ দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে, (৩১) অহমিকাবশে আমাকে অমান্য করিও না, এবং আনুগত্য স্বীকার করিয়া আমার নিকট উপস্থিত হও। ' এই ১১৪ টি সূরা এবং ১১৪ বার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম- ১৯ সংখ্যাটি দ্বারা বিভাজ্য। কোরআনের ৭৪ নং সূরা মুদ্দাসসির “The Hidden”, এ আল্লাহ স্পষ্টভাবে ১৯ সংখ্যাটি বলে দিয়েছেন এভাবে- 30- Over it is 19 31- We appointed angels to be guardians of fire, and we assigned their number as a trial for disbelievers. .......... ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর বাংলা তরজমায় বলা হয়েছে, সাকার-এর তত্ত্বাবধানে রহিয়াছে ১৯ জন প্রহরী। (৩১) ........কাফিরদের (অবিশ্বাসীদের) পরীক্ষাস্বরূপই আমি উহাদের এই সংখ্যা উল্লেখ করিয়াছি.......... এই ১৯ সংখ্যাটির সাথে কোরআনের প্রতিটি কথা, প্রতিটি উক্তি এমনভাবে জড়িয়ে আছে যে, আল্লাহর একত্ববাদে কারও কোন সংশয় থাকা উচিত নয়।

কোরআনে 'ওয়াহিদ' শব্দটি ১৯ বার আছে যা দ্বারা আল্লাহর একত্ববাদের কথা ১৯ বার বলা আছে। আরবি চারটি বর্ণের সমন্বয়ে গঠিত এই শব্দটির আরবি গাণিতিক মান হচ্ছে ১৯। ১৯৬ সংখ্যাটির সাথে ১৯ সংখ্যাটি জড়িত। এই ১৯ সংখ্যাটি কি যে রহস্যময় তা একমাত্র রাব্বুল আ'লামিনই জানেন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে এই রহস্যময় ১৯ সংখ্যাটির মাহাত্ম্য প্রকাশিত হয়।

ড. রাশাদ খলিফ নামক একজন ইজিপশিয়ান-আমেরিকান কেমিস্ট আল্লাহর ইচ্ছায় এই রহস্যটি উদঘাটনে সমর্থ হন। কোরআনের প্রতিটি বর্ণ, প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি আয়াত যে আল্লাহর পাঠানো এবং কোরআন নাযিল হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এর বিন্দুমাত্র হেরফের হয়নি এবং আল্লাহই যে কোরআনের হেফাজতকারী তা ৭৪ নং সূরা মুদ্দাসসিরের ৩০ নং আয়াতটিই অকাট্য প্রমাণ। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.