আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিলিং ব্যাড

এই ব্লগের যাবতীয় কর্মকান্ড জুনায়েদ খানের অনুর্বর মস্তিষ্কের অহেতুক পাগলামি ! বৈ কিছু নয়।

ঘটনা-১: ১৭ জানুয়ারি ২০১১। কুড়িগ্রামের অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তে খেতাবেরকুঠি নামক এলাকায় বিএসএফ এর গুলিতে ফেলানী খাতুন নামের এক কিশোরীর নির্মম মৃত্যু। ফেলানী বাবার সঙ্গে দিল্লীতে গৃহকর্মীর কাজ করত। দেশে বিয়ে ঠিক হয়েছিল তার।

কিন্তু বিয়েটা আর হয়নি ফেলানীর। বাবা নূরুল ইসলাম কাঁটাতারের বেড়া পার হলেও ফেলানী পারেনি। কাঁটাতারে কাপড় আটকে যায় তার। ভয়ে চিৎকার করে উঠে ফেলানী। ফেলানীর চিৎকারে সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া দেয় বিএসএফ।

কাঁটাতার বেয়ে টপটপ করে গড়িয়ে পড়ে কিশোরী ফেলানীর রক্ত। সীমান্তের ঐ কাঁটাতারেই পাঁচ ঘণ্টা ঝুলে থাকে ফেলানীর লাশ। ঘটনা-২: ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে পুরনো প্রেমিক আব্দুস সামাদ রাজুর ইটের আঘাতে গুরুতর আহত কলেজ ছাত্রী আফসারী আক্তার স্বর্ণার নির্মম মৃত্যু। ১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা।

আনন্দমোহন কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী স্বর্ণা বাকৃবির বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঘুরতে এসেছিল তার ছেলে বন্ধুর সাথে। স্বর্ণার পিছু নেয় রাজু। কৌশলে স্বর্ণার ঐ বন্ধুটিকে সরিয়ে দেয় সে। তারপর স্বর্ণার মাথা ও মুখে ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে রাজু। থেথলে যায় স্বর্ণার চোখ-মুখ।

চোয়াল থেকে দাঁত খুলে পড়ে। তারপর পুরো পাঁচদিন ধরে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে স্বর্ণা। অবশেষে ৬ সেপ্টেম্বর সকালে যুদ্ধে ক্ষান্ত দেয় সে। উপরের দুটিই হত্যাকাণ্ড। একটির ঘাতক বিদেশী, অন্যটির দেশী।

একটির বিচার করেছে বন্ধুদেশ ভারত আর অন্যটি এখনো শুরুই হয়নি। শুরু হলে তা দেশেই শুরু হবে। কচ্ছপের গতিতে চলতে চলতে একদিন জ্বালানী অভাবে থেমে যাবে। তারপর ডাইন্যামিক বাঙালি থেমে যাওয়া এ বিষয়টিকে একদিন ভুলে যাবে। সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশী হত্যা নতুন কোন বিষয় নয়।

বিএসএফ গুলি করবে আর বাংলাদেশীরা বুক পেতে দেবে। এটাই নিয়ম। এতে আবার বিচারের কি আছে? কেন যে বোকারা ফেলানী হত্যার বিচার চাইতে গিয়েছিল! খামোখা শুধু সময় অপচয়। বিএসএফ কি কখনো পাপ করতে পারে? পাপ করবে শুধু বিডিআর! শাস্তি হলে বিডিআরের হবে বিএসএফ এর কেন?? বিডিআর দের গণহারে শাস্তি হয়েছে। অনেক পরিবার পথে বসেছে।

কলঙ্কিত বিডিআরের নাম চেঞ্জ করে বিজেবি করা হয়েছে। দেশের মানুষ খুশি হয়েছে, ভারতের মানুষও খুশি হয়েছে। প্রমাণ অভাবে কাউকে বেকসুর খালাস দেয়া হয় নি! ফেলানী হত্যারও বিচার হয়েছে। ফেলানীর বাবা-মামা ভারত গিয়ে সাক্ষ্য দিয়ে এসেছে। নুরুল ইসলাম ভেবেছিল তার মেয়ের হত্যাকারীর উপযুক্ত শাস্তি হবে আর আমরা, দেশের আমজনতা ভেবেছিলাম সীমান্ত হত্যাটা এবার কমবে।

আমাদের আশায় গুড়েবালি। অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস দেয়া হল! নৃশংস এক হত্যাকান্ডের আইনি বৈধতা দেয়া হল; বৈধতা পেল সীমান্ত হত্যাকান্ড! দেশের মানুষ চুপচাপ! যেখনে রাঘব বোয়ালরা কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না সেখানে চুনোপুঁটিরা কি করবে? দু’এক জন মুখ খুললেও তাতে আওয়াজ হচ্ছে না। ফেলানী মরলে দেশের কিচ্ছু হবে না, কিন্তু ভারত খেপলে অনেক কিছুই হয়ে যাবে! শেম অন ইউ ইন্ডিয়া! তোর প্রতি যে রেসপেক্টটা ছিল তা চলে গেছে! স্বর্ণা মরেছে। মানব বন্ধন হচ্ছে, প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। ঘাতক রাজু পলাতক।

আমি তীব্র আন্দোলন আশা করছি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আশা করছি। আমাদের দেশে এমন স্বর্ণার সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। আর কোন স্বর্ণার থেথলে যাওয়া মুখ আমরা দেখতে চাই না, স্বর্ণা হত্যার বিচারে ভারতীয় প্রতিফলন দেখতে চাইনা, বিচারের বাণীকে নিভৃতে কাঁদাতে চাই না। এটা বাংলাদেশ, ভারত নয়! আমি গণজাগরণ চাই, বখাটে রাজুদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।