আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অদ্ভুত ছবিগুলো-৩



বাইরে অসম্ভব মন খারাপ করা একটা ভোর । কুটকুটে কাল মেঘে আকাশ ছেয়ে আছে, যেন রবীঠাকুরের সারাজীবনের সমস্ত লেখার কালিগুলো কেউ ঝপাং করে আকাশে ঢেলে দিয়েছে। ঝমঝম বৃষ্টিতে সমস্ত ঢাকা শহর সারারাত স্নান করেছে। এখন ক্লান্ত বৃষ্টি ঝিরঝির করে ঝরছে, সাথে শোঁ শোঁ আওয়াজে বাতাস। পল্লবীর একটা অতি জ্বরাজীর্ন হলদে রঙের একতলা তিন কামরার বাড়ি।

বাইরে বসার ঘরে সস্তার একসেট বেতের সোফা, কয়েকটি চেয়ার আর আটপৌরে একটা বিছানা। উপরে টিনের চালে বৃষ্টির একটানা গান হয়েছে সারারাত। এখন ক্লান্তিতে গুনগুন করে গাইছে, মাঝে মাঝে বেশ বেসুরো। ঘড়িতে ঠিক ৪টা বাজে। টিনের চালে বৃষ্টির খেলার সাথে সেকেন্ডের কাটার টিকটিক শব্দ বেশ একটা ছন্দ তৈরি করেছে।

সেই সাথে তাল মিলিয়ে হাসানের খুব ইচ্ছা করছে একটু শিষ দিতে কিন্তু রাতের ঠিক এই শেষ মুহুর্তে ব্যাপারটা শোভন নয়। তাছাড়া ভেতর থেকে অনবরত কাশির শব্দ এসে একটা ছন্দপতন ঘটাচ্ছে। আজ প্রায় তিনমাস হল বাবার কাশি এবং দিনদিন এটা বেড়েই চলছে। কিছুক্ষন হল বাবার কাশিটা আর শোনা যাচ্ছে না, সম্ভবত বৃষ্টির মতই ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আজ আর হাসানের ঘুম আসবে না।

প্রায় আধাঘন্টার মতন হয়েছে তার ঘুম ভেঙ্গেছে আর তখন থেকেই তীব্র একটা প্রতীক্ষা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির জন্য রাতে সব জানালা বন্ধ করে দিয়েছিল তাই ঘুম ভাঙ্গতেই উঠে যেয়ে পায়ের দিকের জানালাটা খুলে দিয়েছে হাসান। গায়ে হালকা সবুজ রঙের ফতুয়া আর সাদা একটা পায়জামা পরনে। টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা টেনে নিয়ে আধশোয়া হয়ে তৃপ্তির সাথে খেল। সাথে সাথেই একটা সিগারেটের নেশা পেয়ে বসল তাকে।

সস্তার সিগারেটের প্যাকেটটা টেনে নিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে দীর্ঘ একটা টান দিল হাসান। তারপর ঠোঁট গোল করে কয়েকটা ধোঁয়ার বলয় ছেড়ে দিল টিনের চালের দিকে। ধোঁয়ার উর্ধগতির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হাসান অনুভব করল তার সাফল্যের উত্তোরন। সবেমাত্র শুরু হয়েছে সাফল্যের মুখ দেখা। মুখে তার স্মিত হাসি, ঠোঁটের কোনা দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.