আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাতালের সোজা রাস্তা

সুদুরে সকালের ডাক শোনা যায়, ভোরের লাল আভার পরেই শুভ সকাল

একদেশে দুই মাতাল ছিল, মনে করি এদের একজনের নাম “এ” এবং আর একজনের নাম “বি”। এরা দু‘জনেই অত্যন্ত সততার সাথে কি করে নিজের ভাল এবং মানুষের অমঙ্গল করা যায় এ নিয়ে গবেষণায় মগ্ন থাকেন। এ মাতাল দু‘জন প্রতিদিন নেশা করে একই পথে বাড়ি ফেরে। গ্রামের এ পথটি একটু আঁকাবাঁকা। একদিন নেশা করে হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাতাল “এ” “বি” কে বললঃ এঃ জানিস রাস্তাটা আমার বাপ বানাইছিল।

বিঃ যাহ! এতো বড় একটা রাস্তা একজন মাইনষে বানায় কেমনে? এঃ খুব সোজা - - বিঃ কি রকম? এঃ আমার বাপ পরথমে, ঘুমাইয়া একটা সবুজ রাস্তার স্বপ্ন দেখছে। বিঃ হুম্ - - এঃ তারপর, ঘুম থিকা জাইগা মাঠের মাঝখানে দাড়াইয়া ভাষণ দিছে ,অমনি রাস্তা হইয়া গেছে। বিঃ তোরে নেশায় ধরছে - - এঃ সত্যি সে একাই বানাইছে, আর কোন লুক লাগে নাই। কসম - - বিঃ তোর কথা মানতে পারলাম না। এঃ কেন্ - - বিঃ এই রাস্তা বানাইসে “মজার জাদরেল মিয়া” এঃ এইডা আবার কেঠা? বিঃ আমার ফরম আত্মীয়।

রাস্তা লাই উনি রেডুতে ভাষাণ দিছেন। এঃ ভাষাণ? বিঃ হ! উনি রেডুতে ভাষাণ দিছেন আর রাস্তা হইয়া গেছে। এঃ চিন্তার কথা একই রাস্তা দু‘ই জনে কেমনে বানাইলো? বিঃ বাদ দে ওগো কতা। আয় আমরা একটু নিজেগো কষ্ট কমাই। এঃ কেমনে? বিঃ রাস্তাডাতো হয় তোর বাপের, নাইলে আমার ফরম আত্মীয়ের - - কথা ঠিক? এঃ কথা ঠিক - - বিঃ তাইলে আমাগো সুবিধা সবাইর আগে? এঃ ঠিক - - বিঃ তাইলে আয়! রাস্তাডা ঠেইলা, সোজা আমাগো বাড়ির উঠানে নিয়া যাই - - এঃ তোর মাথায় উনেক বুদ্ধি - - আমাগো রাস্তা আমাগো বাড়ি যাইবো, মাইষের বাড়ির সামনে দিয়া যাইবো কেন? বিঃ তাইলে আয় ঠেলি - - এঃ হ - - অতপরঃ দু‘জনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাস্তা সোজা করার কাজে লেগে যায়।

রাস্তা ঠেলতে ঠেলতে দু‘জনে ঘর্মাক্ত হয়ে নিজ নিজ জামা খুলে ফেলে। এ সময় এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল এক চোর। দুর থেকে সে দু‘ মাতালের কার্যকলাপ দেখে চুপি চুপি তাদের পেছনে আসে এবং দু‘জনের জামা নিয়ে নেয়। মাতাল দু‘জন তা বুঝতেও পারেনা। জামা নিয়ে কিছু দুর যাওয়ার পর চোর দেখে ওদের পকেটে কোন টাকা-পয়সা নেই।

তখন রাগ হয়ে সে বেশ কিছু দুরে জামা দু‘টো ছুড়ে ফেলে দিয়ে চলে যায়। মাতাল দু‘জন রাস্তা ঠেলতেই থাকে। রাতের আকাশে যখন ভোরের লালীমা দেখা দেয়, তখন কান্ত দু‘মাতাল থামে। মাতাল “এ” প্রশ্ন করেঃ এঃ কতদুর ঠেললাম? বিঃ দাঁড়া পেছনে জামা রাখছিলাম। দেখি জামা কতদুরে - - এঃ বাপরে বাপ! অনেক দুর ঠেলছিতো - - বিঃ হ! ঐ - - দেখ, জামা অনেক দুরে - - এঃ রাস্তা অনেক সোজা হইছে।

আইজকার মতো ক্ষ্যামা দে - - কাইল আবার ঠেলুম। বিঃ হ! চল বাড়ি যাই - - ভোর হইয়া গেছে পরায় - - এরপর তারা তাদের নিজেদের রাস্তা প্রতি রাতেই সোজা করতে থাকে। নিঃসন্দেহে উদ্দেশ্য মহৎ। নিজের রাস্তা নিজের বাড়ির উঠানে নিয়ে যাবে, এতো অন্যায় কিছু না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.