আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাচ্চাকালের পুংটা খেলা .......... ছোটপুলাপানদের পড়া নিষেধ

sabujs@yahoo.com
ছোটবেলায় আমাদের চারজনের একটা গ্রুপ ছিল । আর সেই গ্রুপের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল নিত্যনতুন খেলা আবিষ্কার করা । নিচে তার কয়েকটার বর্ননা দেওয়া হৈল .......... ডাক্তার ডাক্তার খেলা : এই খেলায় বড় সাইজের ব্যাঙ এর প্রয়োজন পড়ত। যেহেতু কোন ব্যাঙই স্বেচ্ছায় ভলান্টিয়ার হৈতে চাইতো না তাই তাহাদের জোর করিয়া খেলায় অংশগ্রহন করানো হৈত। বাবু ছিল ব্যাঙ ধরায় উস্তাদ।

খালি বড়শি নিয়া বড় হলুদ ব্যাঙ ( অনেকে তাহাকে বাউয়া ব্যাঙ বলে থাকে ) এর মুখের সামনে নাচাইলে ব্যাঙ বিরক্ত হৈয়া তাহা টপ করিয়া গিলিয়া ফেলিত। তারপর তাকে উপ্রে উঠাইয়া হার্ডবোর্ডের সাথে বোর্ডপিন দিয়া আটকাইয়া খেলার জন্য প্রস্তুত করা হৈত। লিটন কাকা ছিল আমাদের খেলার দিকনির্দেশক এবং গুরু। আমার উপর দায়িত্ব থাকতো কাপড়ে দেয়ার নীল সংগ্রহ করা। সেই নীল পানিতে গুলাইয়া সিরিন্জে ভরা হৈত।

অত:পর লিটন কাকা তা নিজ হাতে ব্যাঙের শরীরে ইনজেকশন রুপে প্রদান করতো। বলাবাহুল্য ব্যাঙপ্রজাতি এই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হৈতে না পাইরা স্বেচ্ছায় অতিস্বত্তর পরলোক গমন করতো। হেডস্যার হেডস্যার খেলা : এইটা ছিল একটা ভয়ংকর মজাদার খেলা। মফস্বলের স্কুল ছিল বৈলা আমাদের স্কুলে কয়েকদিন পর পর নতুন টিচাররা ট্রেনিং এর জন্য আসতো। তো স্বাভাবিক নিয়মেই তারা প্রথমে স্কুলের কিছুই চিনতো না।

সেই ক্যালকুলেশন অনুযায়ী এই খেলাটা তাদের জয়েনিং এর প্রথম তিন চারদিনের ভেতরে খেলতে হৈত। খেলার নিয়ম অনুযায়ী আমাদের একজন টিফিন টাইমে নতুন স্যারের রুমে ঢুইকা খুব ভদ্রভাবে লম্বা একটা সালাম দিয়া বলতো --------- ' স্যার, হেডস্যার আপনাকে সালাম জানাইছে । এক্ষুনি একটু আপনাকে তার রুমে যাইতে বলছে। '' ......... এই কথা বলা শেষ হওয়া মাত্র তাকে ঐ স্যারের রুম থাইকা হাওয়া হৈয়া যাইতে হৈত ......... এক্কেবারে তিন চারদিনের জন্য। আর নতুন স্যার তখন হেডস্যারের রুমে যাইয়া বলতো ------- স্যার আমাকে ডেকেছেন?? তখন হেডস্যার অবাক হৈয়া বলতো .... কৈ , না তো !!! ...........তখন নতুন স্যার দ্বিগুন অবাক হৈয়া বলতো ..... কিন্তু ঐ ছেলেটা যে বললো আপনি আমাকে ডেকেছেন ??? কিন্তু '' ঐ ছেলেটাকে '' পরবর্তী তিন চারদিনের ভেতরে আর কোথাও খুইজা পাওয়া যাইতো না ............. কাউমাউ গোসল খেলা : এই খেলাটা একটু বিপজ্জনক ছিল ।

বাবুদের বাসাটা ছিল একদম রাস্তার পাশে। প্রতিদিন অফিস টাইমে প্রচুর মানুষ সেই রাস্তা দিয়া চলাচল করতো। রাস্তার উপরে কারেন্টের তারে ছিল কাকের আস্তানা । যাহোক অফিস টাইম হৈলে আমি আর বাবু মিলে চুনের সাথে ওয়াটার কালার মিশাইয়া একটা সাদা থকথকে পদার্থ তৈরী করতাম । দেখতে তা হৈত হুবহু কাকের বিষ্ঠার মতো ( ওয়াক থু ) ।

অত:পর ছাদে উইঠা সেই সাদা জিনিস কোন অফিসগামী আঙ্কেলের মাথার উপর নিক্ষেপ করতাম। আর যদি তা জায়গামতো পড়তো তাহলে তার পরের সিনারি হৈত দেখার মতো। আঙ্কেল উপ্রে তাকাইয়া সমগ্র কাউয়াপ্রজাতির চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে বাসার দিকে পুনরায় গোসলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হৈত। তাই আমরা এই খেলাটার নাম দিয়েছিলাম 'কাউমাউ গোসল খেলা'। যাহোক , খেলাগুলা ভালই চলতেছিল ।

কিন্তু কাউমাউ গোসল খেলাটা একবার 'ফ্রেন্ডলি ফায়ার' হৈয়া ভুলবশত বাবুর বড়চাচার উপ্রে অ্যাপ্লাই করার পর থাইকা আমাদের সবগুলো খেলা চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষিত হৈছিল । আর তাহার শাস্তি যে কি হৈছিল তাহা মনে করলে এখনো আমার শরীরের লোম্বাগুলা খাড়াইয়া খাড়াইয়া উঠে ..........
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।