আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরেন্দ্র ভূমি আর সোনা মসজিদের দেশে

আল বিদা

গত বছরের জুন মাসের কোন এক বুধবার দুপুরের পর মতিঝিল থেকে তেজগাও অফিসে ফিরছি। গাড়ীতে কলিগরা কথা বলতে বলতেই প্ল্যান হল রাজশাহী যাওয়ার। আমাদের কলিগ জাহিদের বাড়ী রাজশাহী (যদিও বলে রাজছাহী) আর শ্বশুড়বাড়ী চাপাই। ঠিক হল পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি আর জাহিদ স্বপরিবারে আর সাজ্জাদ একা মোট ৫ জন রাজশাহী রওনা হব। উদ্দেশ্য শুধুই ঘুরাঘুরি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মধ্যে সব কাজ শেষ করে (কি এমন কাজ করি) আমি বাসায় আসলাম ব্যাগ নিতে আর জাহিদ গেল বৌ আর ব্যাগ আনতে। অফিসের গাড়ী দিয়েই চুপিসারে আমরা গাবতলী রওনা হলাম। তেজগাও থেকে সাজ্জাদ আর কারওয়ান বাজার থেকে আমার বৌ লীমাকে গাড়ীতে তুললাম। মাত্র ৩০০/- টাকার এসি বাসে বিকেল ৫টায় রওনা হয়ে রাত ১০ টায় পৌছে গেলাম। পথে যমুনা ব্রীজ দেখলেও অন্ধকারে চলনবিল দেখা হল না।

তবে নাটোরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় কেমন যেন বিহ্বল হয়ে গেলাম। বহু জায়গায়,কবিতায়, গল্পে, গানে এই নাটোর আর বনলতার কথা শুনেছি। রাজশাহীর জজকোর্ট স্টেশন এলাকায় জাহিদদের বাড়ী। তার পরিবারের সবাই একেবারেই মাটির মানুষ। আমাদের জন্য তার বাবা মা আর বোন দুলাভাই ভাগ্নে অপেক্ষা করছিল।

সহজেই আমরা তাদের সাথে মিশে গেলাম। পরদিন ঘুম থেকে উঠেই দেখি জাহীদের শ্বশুর তার Voxy microbus পাঠিয়ে দিয়েছেন (আফসোস আমার শ্বশুরের গাড়ী নাই)। প্রথমে রাজশাহী শহড় ঘুরলাম। ছুটির দিনেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বিআইটি, জেলা স্কুল, কলেজ ঘুরে দেখলাম। তারপর একটানে চাপাই।

পথে পরল সুন্দর সুন্দর নামের জায়গা, নসিমন গাড়ী আর সেই বরেন্দ্র ভূমি। আবারও আমরা নস্টালজিক হই বরেন্দ্র ভূমি দেখে। চাপাই জাহিদের শ্বশুরবাড়ীতে দেখা করেই রওনা হলাম মহানন্দা পেরিয়ে সোনা মসজিদ বর্ডারের দিকে। পথে পড়ল ঐসময়ের বিখ্যাত কানসাট। চারদিকে আম, পেয়ারা, লিচুর বাগান।

বাড়ী, ধানক্ষেতের আল, রাস্তার ধার সবখানেই ফলের বাগান। এযাত্রায় সোনা মসজিদ পর্যন্তই গেলাম। সাক্ষী হওয়ার জন্য এই মসজিদে জুম্মার নামাযও পড়লাম। ফেরার পথে হুট করে ঠিক করলাম আম কিনব। কানসাট থেকে ২ খাচি আম কিনে নিলাম।

দুপুরে জাহিদের শ্বশুরবাড়ীতে বহু প্রকারের রান্না খেয়ে রাজশাহী ফিরলাম সন্ধ্যায়। কিন্তু আমরা জাহিদের বাড়ী না ঢুকে বসলাম পদ্মানদীর পাড়ে। আহা সে কি অপরূপ!!! দুঃখিত যে নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখলাম তা আমি বর্ননা করতে পারবনা। ঐদিনই রাতের বাসে ঢাকায় ফিরলাম। এযাত্রায় জাহিদের ২ পরিবার যে আপ্যায়ন করল তা নাকি রাজশাহীবাসীর বৈশিষ্ট্য।

অনেক স্থান ঘুরে আনন্দ পেয়েছি কিন্তু রাজশাহী শুধুই যে ভাল লাগল তা না কিছু ঐতিহাসিক নস্টালজিক স্থান দেখারও সৌভাগ্য হল আর সুযোগ হল সহজ সরল বিনয়ী কিছু ভাল মানুষের দেখা পাওয়ার।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।