আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে যা দরকার ...

leo_abdullah@yahoo.com

লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভাস এই দুয়ের সামান্য পরিবর্তন আপনার ক্যন্সারের ঝুকি কমাতে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। এ বিষয়ে জানতে পড়ুন আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি এবং আমেরিকান ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েসনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে লেখাটিতে। সকলেই আমরা জানি অনেক খাবার আছে যা স্বাস্থের জন্য ভালো আর কিছু খাবারের ব্যাপারে ‘না’ বলাটা বেশ কঠিন। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির এক পরিসংখ্যানে আমাদের পছন্দের সেরা পাচটি খাবারের সন্ধান পাওয়া গেছে, সুসংবাদ হলো এই খাবারগুলো কেবল ভাল ডায়েটের জন্যই উপযুক্ত নয় বরং অনেক ক্ষেত্রেই এগুলো ক্যন্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও সেরা খাবারের এই তালিকার শীর্ষে আছে ডার্ক চকোলেট, এরপর পিজা (এবং অন্যান্য ইটালিয়ান খাবার)।

কেক এবং কুকিস আছে তৃতীয়তে, এরপর হ্যামবার্গার এবং সবশেষে সীফুড। তো এসব খাবারের মধ্যে আপনার পছন্দের আইটেমগুলোও আছে নিশ্চয়ই। খুশি হয়ে ডান হাতের কাজ শুরু করার আগে জেনে নিন এসব খাবার খাওয়ারও কিছু নিয়ম আছে যাতে ক্যান্সারের ঝুকি কমে। খাবারগুলো একবারে পেটপুরে খেয়ে ফেলবেন না, অল্প পরিমাণে খান, সাথে বেশি করে নিন রোগ নিরাময়কারী খাদ্য উপাদান যেমন ফল, সবজি, শস্য ও দানাদার খাবার। প্রোটিনের এই ক্ষুদে উৎসগুলো গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে স্থূলতার সাথে অনেক ধরনের ক্যান্সারের সম্পর্ক আছে।

কলিন ডোয়েল আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির নিউটৃশন এবং ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি ডিরেক্টর। তিনি বলেছেন, যত ধরনের ক্যান্সারে মৃত্যু ঘটে তার এক তৃতীয়াংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব পুষ্টি সম্মত খাবার, শারীরিক কাজকর্ম এবং দেহের সঠিক ওজন বজায় রাখার মাধ্যমে। : : ক্যান্সার দুরে রাখতে পছন্দের সামান্য হেরফের করুন কোন একটা খাবার যখন আপনি অপছন্দ করেন তখন সেটার মধ্যে যতই পুষ্টিকর উপাদান থাকুকনা কেন সেটা আপনার খাবার সম্ভাবনা কম। মানুষ যেভাবে পছন্দের খাবার বাছে সেটা মাথায় রেখে বিজ্ঞানীরা আগ্রহের খাবার গুলোর মধ্যেই স্বাস্থ্য সুবিধা খোজার চেষ্টা করেছে। আসলে আমাদের পছন্দের অনেক খাবারের মধ্যেই স্বাস্থ্যকর উপাদান আছে, হয়তো একটু কম পরিমণে-এই যা।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ডার্ক চকলেটের কথা যাতে ফ্যাবোনাল নামের স্বাস্থপ্রদ ক্যামিকেল আছে (যদিও একই সংগে এতে ফ্যাট এবং শ্যুগারও আছে প্রচুর)। পিজাতে আছে প্রচুর লাইকোপিন। এই উপাদানটি রোগ প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে কিন্তু একই সাথে এটি উচ্চমাত্রার ফ্যাট সমৃদ্ধও বটে। আর একারণেই সংযত থাকার অভ্যাসটা জরূরী। এক টুকরো ভেজি বা প্লেইন পিজা খান কিন্তু ওই একটিতেই থামুন এবং সাথে সালাদ যোগ করে নিন, পরামর্শ দিয়েছেন ডোয়েল।

অথবা একটা বিস্কুট খেয়ে আপনার মুখকে মিষ্টি করে তুলুন - সাথে একপিস ফল খেয়ে নিন। : : খাদ্য গ্রহণে স্মার্ট হোন এবং ক্যান্সার দুরে রাখুন প্রাকৃতিক খাবার সমৃদ্ধ ডায়েটই সেরা যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে আশযুক্ত খাদ্য যেমন ফলমূল, সবজি, দানাদার শস্য ইত্যাদি - বলেছেন আমেরিকান ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েসনের মুখপাত্র ডেভিড গ্রেটো। রোগকে দুরে রাখে এমন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্যামেটরি উপাদান সমৃদ্ধ বিশেষ কিছু ‘সুপার’ ফুড আছে। আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ ক্যন্সার রিসার্চের মতে এই খাবারগুলো হলো: জাম, আঙ্গুর, আঙ্গুরের রস, ফুলজাতীয় সবজি যেমন বাধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি, গাঢ় সবুজ রংয়ের পাতাওয়ালা শাক-সবজি, টমেটো, রসুন, সয়াবিন, গৃনটি ইত্যাদি। এক্সপার্টরা একমত যে ওই সব অতিমাত্রায় পুষ্টিকর খাবার থেকেই আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরি আসা উচিত।

কিছু কিছু খাবারের ব্যাপারে আপনার পুরোপুরি সংযম বজায় রাখা উচিৎ - এ ব্যাপারেও তারা একমত। অবশ্যই খাবার দাবারের ব্যাপারটা ক্যান্সার প্রতিরোধ সমীকরণের একটা অংশ মাত্র। গ্রোটোর মতে, আমরা সবাই চাই এমন একটা ম্যাজিক বুলেট কিম্বা গোপন পুষ্টির খবর যেটা ক্যান্সার প্রতিরোধের সরলতম উত্তর। কিন্তু বিষয়টা আসলে এতটা সরল নয় বরং একটু জটিলই বটে। ক্যান্সারের জন্য কেবল খাবারই দায়ী নয়, আরও প্রভাবক আছে।

এর মধ্যে বংশগত কারণ এবং লাইফস্টাইল অন্তর্ভুক্ত। আগাগোড়া স্বাস্থপ্রদ একটা লাইফস্টাইলের দরকারি বিষয় গুলো হলো: > ধুমপান না করা > হালকা এক্সারসাইজ করা > পুষ্টিকর ডায়েট অনুযায়ি খাওয়া দাওয়া করা > স্বাস্থসম্মত ওজন নিয়ন্ত্রন করা কার্যত ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে দেহের সঠিক ওজন বজায় রাখাটা খুবই দরকারি। গ্রটো বলেছেন, মাত্রাতিরিক্ত বডি মাস ইন্ডেক্স (বিএমআই) এর সাথে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের সম্পর্ক আছে এমনটাই দেখা গেছে ১০০ এরও বেশি কিনিক্যাল স্টাডি থেকে। ডোয়েল তার বক্তব্যে আরো বলেছেন স্থূলতা এবং ক্যান্সারের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি সত্যিই অবিশ্বাস্য, বিশেষত মেনোপজ পরবর্তি সময়ের ব্রেস্ট ক্যন্সার এবং কোলন ক্যান্সার। : : আপনার লাইফস্টাইলের দিকে খেয়াল রাখুন শেষ লাইনে এসে এটাই বলা যায় ক্যান্সারকে দুরে রাখতে বড় একটা ছবি তৈরী করতে হবে আপনার মনে।

সিরিয়াস ভাবে নিয়মিত হালকা এক্সারসাইজ করতে হবে, পরিপূর্ণ ডায়েট বজায় রাখতে হবে, ধূমপান করা চলবে না এবং সর্বোপরি দেহের স্বাভাবিক ওজন ধরে রাখতে হবে। আর তা হলেই যদি ক্যান্সারের ঝুকিটা কার্যকরী ভাবে কমানো যায়। লাইফস্টাইলের ওই সব দিক বজায় রাখার সাথে সাথে আপনার পছন্দনীয় উপায়ে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখুন। যেমন নামাজ পরা, প্রার্থনা করা, মেডিটেশন করা আর পর্যাপ্ত ঘুম। এসবই আপনাকে দেবে ক্যান্সার এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরূদ্ধে উপযুক্ত সুরক্ষা।

: : তামিম আব্দুল্লাহ : :

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.