আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের সংবাদপত্র, জরুরি অবস্থা ও যায়যায়দিন

জেনুইন গোপাল - নো ভেজাল

আইজ যায়যায়দিন পত্রিকায় প্রতিচিত্র সম্পাদক বরুন শঙ্কর বাংলাদেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়া একখান লেখা নাজিল করছেন। সরকারের দালালি করতে গিয়া আসল কথাডা লেখায় বাইর হইয়া গেছে । এই লোক যায়যাযদিনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের পদ দখল নিছেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, জরুরি অবস্থা ও ডিজিএফআইয়ের ভূমিকা বরুন শঙ্কর দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং ডেইলি নিউএজের সম্পাদক নুরুল কবিরের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত ১০, ১১ ও ১২ মে ২০০৮ জাতীয় প্রেস কাবে জাতীয় দৈনিকগুলোর সম্পাদকদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জরুরি অবস্থা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও ডিজিএফআইয়ের বর্তমান ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

তাদের মতে, বর্তমানে সাংবাদিকরা ভয়-ভীতির মধ্যে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নাম উল্লেখ করে তারা সরাসরি আঙুল তোলেন ডিজিএফআইয়ের ভূমিকা নিয়ে। ডিজিএফআই নাকি বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে তাদের সঠিক দায়িত্ব পালনে বাধা দিচ্ছে। প্রবীণ সম্পাদক আতাউস সামাদ স্পষ্ট জানান, নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবিরকে সরিয়ে সেখানে ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে সম্পাদক বানানোর জন্য মালিকপকে চাপ দিচ্ছে ডিজিএফআই। সভায় উপস্থিত আরেক সম্পাদক জানালেন, ১১ তারিখের সভায় উপস্থিত ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দুজন পরিচালককে ১২ তারিখের সভায় যোগ না দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

ওই দুই ব্যক্তি ১২ তারিখের মুলতবি সভায় উপস্থিত হননি। ১১ তারিখের সভায় উপস্থিত সম্পাদকদের মধ্যে ডেইলি স্টার-এর মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো-এর মতিউর রহমান, ইত্তেফাক-এর রাহাত খান ১২ তারিখের সভায় যোগ দেননি। ১২ তারিখের মুলতবি সভায় আতাউস সামাদ নিউএজ-এর কথা উল্লেখ করেই দৈনিক যায়যায়দিন সম্পর্কে মন্তব্য করেন। দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদকের পরিবর্তনও নাকি ডিজিএফআইয়ের নির্দেশে ঘটেছে। ডিজিএফআই কোন স্বার্থে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক পরিবর্তন করার জন্য চেষ্টা করছে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এক বিরাট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য তারা মিডিয়াকে ব্যবহার করতে চায়।

তিনি বলেন, আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে জরুরি অবস্থা তুলে দেবেন। কিন্তু ভাষণ শুনে বোঝা গেল জরুরি অবস্থা তোলা হবে না এবং ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা রাজনীতিবিদদের প্রতি নির্দেশ দানের ভঙ্গিতে কথা বলেছেন। উপস্থিত সম্পাদকরা এ বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করেননি। সভায় গৃহীত প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নুরুল কবির প্রস্তাব পড়ে শোনান। প্রস্তাবটি তিনি আগেই লিখে রেখেছিলেন।

সরাসরি ডিজিএফআইয়ের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়। কিন্তু অন্যান্য সম্পাদক আপত্তি করায় প্রস্তাবটি বাতিল করে পুনর্লিখিত হয়। পুনর্লিখিত প্রস্তাবে সরাসরি ডিজিএফআইকে আক্রমণ করার বাক্যগুলো তুলে নেয়া হয় এবং একটি যুক্তিপূর্ণ প্রস্তাব লিখিত হয়। প্রস্তাবটি বিভিন্ন পত্রিকায় পাঠানো হয়। সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে আতাউস সামাদ জানান, ১১ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে প্রতিটি টিভি চ্যানেল ওই দিবস উপলে অনুষ্ঠান প্রচার করে।

বিশেষ করে এনটিভিতে যে আলোচনা হয় সবই নাকি ডিজিএফআইয়ের প্রস্তাব এবং তাদেরই তদারকিতে পুরো অনুষ্ঠান নির্মাণ এবং প্রচারিত হয়। এনটিভিতে যা-ই ঘটুক না কেন, কোনো মন্তব্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকবো। কিন্তু নিউএজ এবং যায়যায়দিন সম্পর্কে তিনি যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। দৈনিক যায়যায়দিন-এর সম্পাদক শফিক রেহমান পদত্যাগ করলে যায়যায়দিন-এর স্বত্বাধিকারী এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরী নিজের পছন্দে শহীদুল হক খানকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক পদে নিয়োগ দেন। আতাউস সামাদ কোথা থেকে এসব তথ্য পেলেন তা আমরা জানি না।

তবে তার মতো একজন সর্বমান্য বর্ষীয়ান সাংবাদিকের মুখ থেকে ডিজিএফআইকে দোষারোপ করে জরুরি অবস্থার সুযোগে সংবাদপত্র জগতের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে, এ কথা শুনে আমরা যতোটা না মর্মাহত তার চেয়ে অনেক বেশি বিস্মিত হয়েছি। যে সময় প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করলেন ঠিক তখনই দুজন সম্পাদকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বচ্ছ পানিকে ঘোলা করার এ চেষ্টাটি কি শোভনীয়? আমরা আমাদের যার যার অবস্থান থেকে দেশের উন্নতি ও মঙ্গল চাই। ঘোলা পানির ফলাফল ২০০৬ সালে দেখেছি, ২০০৭ সালেও দেখেছি, ২০০৮ সালে দেখতে চাই না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.