আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীর সমঅধিকার বনাম পুরুষের প্রসব যন্ত্রনা



নারীর সমঅধিকার বনাম পুরুষের প্রসব যন্ত্রনা (১ম কিস্তি) কষ্ট করবে নারী আর ফল ভোগ করবে পুরুষ তা হতে পারেনা। কোন সন্তানের জন্ম এবং বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে মৌলিক ৩টি কষ্টকর ধাপ অতিক্রম করতে হয়। তা হল গর্ভধারণ, প্রসব যন্ত্রনা এবং দুধপান। ১০ মাস ১০ দিন ব্যাপী দীর্ঘ এবং চরম কষ্টকর গর্ভধারণ, মৃত্যুসম প্রসব যন্ত্রনা এবং আড়াই বছর ব্যাপী অসহ্য জ্বালাতন নিয়ে দুধপান। এছাড়াও আরও কত যে কষ্ট আছে কম বেশী সবই আমাদের জানা।

এই তিনটি কষ্টকর যাতনা আর সীমাহীন দুর্ভোগের তিনটিই করে থাকেন সন্তানের প্রিয় ‘মা’ জননী। অথচ কোন সন্তানের উপর মা এবং বাবার অধিকার আলোচনা করলে দেখা যায় সন্তানের উপর বাবাই বেশী অধিকার দাবী করেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর পুরুষই সন্তানকে পেয়ে যায় বা নিয়ে যায়। কিন্তু একটি সন্তান বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীর ত্যাগ তীতিক্ষা অনেক বেশী। বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় প্রায় পুরো দায়িত্বই নারীর।

কিন্তু তাই বলে যদি নারীরা দাবী করেন যে এখন থেকে নারী ঐ সব কাজ একা করতে পারবেনা বরং পুরুষকেও সন্তান জন্ম দানে গর্ভধারন অথবা প্রসব কষ্ট বা দুধপান যে কোন একটা করতে হবে। আচ্ছা তাহলে কি এই সমঅধিকার নারীকে দেয়া সম্ভব? সম্ভব নয়। জানি না হয়তো তারা আমেরিকাতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পুরুষ গর্ভবান লোকটি অথবা কয়েক বছর আগে পিজি হাসপাতালে পুরুষের পেটে তারই ভাইয়ের ভ্রুণ পাওয়ার উদাহরন দেয় কিনা। যাই হোক যদি এমন হয় তা যে নারীর জন্য কতটা বিব্রতকর তা নিচের ঘটনা পড়লেই বুঝতে পারবেন। একবার সকল নারীরা একত্র হয়ে বণী ইসরাঈলের নবীর নিকট দাবী করলো যে , সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে তিনটি কষ্টের তিনটিই নারীরা করে অথচ পুরুষ সন্তানের সমান অধিকারী এমনকি বেশী।

সুতরাং তিনটির মধ্যে কিছু কাজ পুরূষকে দিতে হবে। নারীদের কঠোর আন্দোলনের পর তাদেরকে বলা হল ঠিক আছে তোমরা কোন কষ্টটা পুরুষকে দিতে চাও তা ঠিক কর। পুরুষকে কোনটি দেয়া হবে এই সিদ্ধান্তের জন্য নারীনেত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক চলছে। তখন একজন প্রস্তাব করলো গর্ভধারণ যেহেতু দীর্ঘ সময়ের কষ্টের কাজ তাই পুরুষকে গর্ভধারণের কাজটি দেয়া হোক। কিন্তু পর্যালোচনা করে দেখা গেল গর্ভ ধারনের এই সময়টুকু স্বামী স্ত্রীকে খুব ভালবাসে, কাছে কাছে থাকে, ভাল ভাল খাবারের ব্যাবস্থা করে, কষ্টকর কোন কাজ করতে হয়না।

তাই সিদ্ধান্ত হল না গর্ভধারণ পুরুষকে দেয়া যাবেনা। যাইহোক আরেকজন প্রস্তাব করলো যে, দুধপানের দীর্ঘ বিরক্তিকর কাজটিই তাহলে পুরুষকে দেয়া হোক। এই প্রস্তাবের পর্যালোচনা করে দেখা গেল যদি তাই হয় তাহলে নারীর শারীরিক যে অবয়ব তা আর থাকবেনা। ফলে নারীর আকর্ষণ কমে যাবে। তখন কেউ আর নারীর দিকে আগ্রহ বা উৎসুক হয়ে তাকাবেনা।

নারীর প্রতি কিছুটা অবহেলা হবে। সুতরাং এই বোকামীও করা যাবেনা। তাই এই প্রস্তাবও বাদ। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হল যে, প্রসব যন্ত্রনার বিষয়টি পুরুষকে দেয়া হবে। যাই হোক নারীনেতৃরা তাদের সিদ্ধান্ত নবীকে জানিয়ে দিল।

তখন তিনি স্রষ্টার নিকট প্রার্থনা করে সেই ব্যবস্থা করলেন। ফলে ঐদিনই দেখা গেল একটি নারীর সন্তান হল অথচ ঐ মহিলা কোন প্রসব বেদনায় কষ্ট পাননি এবং খুব সহজেই সন্তান জন্ম নিল। এতে সাধারণ মহিলারা খুব খুশি হলেও ঐসমাজের পুরুষ বিদ্বেষী তথা বিশৃংখলা কারী কিছু প্রগতিশীল নারীনেত্রী নবীকে এসে বললো যে, শর্ত ছিল মহিলা কষ্ট পাবেনা সেই কষ্ট পাবে পুরুষ। অথচ ঐ মহিলার স্বামী সন্তান জন্মের সময় কোন কষ্ট পাননি কেন? নবী বললেন দেখ নারীতো কষ্ট পায়নি তাতে তোমাদের তো আর কোন কথা থাকার কথা না। পুরুষ বিদ্বেষী নারীরা বললো, না শর্ত মোতাবেক পুরুষকে প্রসব যন্ত্রনায় নারীর মত কাৎরাতে হবে।

নবী বললো আচ্ছা ঠিক আছে, তবে তোমরা খবর নাও দেখি গতকাল যখন ঐমহিলার সন্তান হচ্ছিল তখন পাশের বাড়ীর অমুক যুবক চিৎকার দিয়ে এত মূর্চ্ছা গেল কেন? আর কিছুক্ষণ পর আবার কেনইবা থেমে গেল? খবর নিয়ে দেখা গেল ঘটনা সত্যি। একটি যুবক হটাৎ চিৎকার দিতে লাগলো এবং একটু পর থেমে গেল। নারীরা বললো তাতে কি হয়েছে। ঐ মহিলার স্বামীতো কোন কষ্ট পায়নি। তখন নবী যে তথ্য দিলেন তার জন্য নারী নেত্রীরা প্রস্তুত ছিলেননা।

তা হল এই মহিলার গর্ভে জন্ম নেয়া এই শিশুটি মুলত ঐ চিৎকারকারী যুবকেরই সন্তান। অথ্যাৎ এই সন্তানটি অবৈধ। এভাবে দেখা গেল সন্তান জন্মায় এই বাড়ীতে আর চিৎকার দিয়ে মুর্চ্ছা যায় ঐ বাড়ীতে। সন্তান হয় এই মহিলার চিৎকার দেয় দেবর অথবা কাজের লোক বা প্রতিবেশী ইত্যাদি। এই ঘটনা সাধারণ মহিলারদের চেয়ে প্রগতিবাদী নারীদের ক্ষেত্রেই বেশী ঘটতে ছিল।

এবং সেই প্রগতিবাদীদের চরিত্র সবার সামনে উন্মোচিত হল। তখন নারী নেত্রীরা চিন্তা করলো এভাবে চলতে থাকলে সবারই গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। তাই নারী নেত্রীরা পুনঃরায় দাবী করলো যে, পুরুষের কষ্টের দরকার নেই যেভাবে ছিল সেভাবেই থাকুক। ফলে প্রসব যন্ত্রনা আগের মতই নারীর কাছে চলে গেল। এখন কথা হল যদি বর্তমান সমাজের নারীদেরকে প্রস্তাব দেয়া হয়য়ে ঐ সময়ের মত এখন আবার সন্তান জন্মকালীন প্রসব যন্ত্রনা নারীর না সন্তানের পিতার হবে।

তাহলে প্রগতিবাদী কয়জন নারী মেনে নেবে তা বলা মুস্কিল। যাইহোক আমি বলতে চাচ্ছিযে, সেই সমাজ বা বর্তমান সমাজে অবৈধ সন্তান জন্মানোর ঘটনা খুব বেশী নয়। কিন্তু আমার কথা হল আল্লল্লাহ প্রদত্ব পদ্ধতির বাইরে গেলে তা যেকোন মানুষের জন্যই বিব্রতকর হতে পারে। তাই নয়কি? (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।