আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুর্নীতিবাজকে নয় দুর্নীতিকে ঘৃণা করুন--৩য় অংশ



অপরাধ দমন সম্পর্কে দু-ঘরানার দার্শনিক বেশ সরব। ১ম ঘরানার দার্শনিকগন মনে করেন---অপরাধের জন্য অপরাধী নিজেই দায়ী। তাই অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে সমাজের অপরাধ প্রবনতা কমবে। ২য় ঘরানার দর্শনিকরা মনে করেন---অপরাধী নির্দোষ তারা অন্যদের চেয়ে ভিন্ন হতে পারেনা। সমাজ ব্যবস্থাই তাদের অপরাধীতে পরিনত করে।

তাই প্রথমে প্রয়োজন সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন। দেশে দেশে কালে কালে অন্যায়ের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে কিন্তু মানুষের অপরাধ প্রবনতা কমেছে একথা বলা যাবেনা। অন্য দিকে মানুষ অপরাধী হয়ে জন্ম নেয় না, সমাজব্যবস্থার মধ্য থেকেই একসময় সে অপরাধী হয়ে ওঠে। তাই ২য় ঘরানার দার্শনিকের অবস্থান অধিকতর যুক্তিযুক্ত। একইভাবে দুর্নীতি রোধে শাস্তি প্রদান সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারেনা।

যে সমাজে টেবিলের উপরের তলার দুর্নীতি (মালয়েশীয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের ভাষায় ব্যাপক দুর্নীতি অর্থে) হয়ে থাকে সেখানে দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দেওয়ার পদক্ষেপ নানা প্রশ্নের জন্ম দেয় কেননা কেউই গোটা সমাজকে শাস্তি দিতে পারেনা। পেছন ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাব, সমাজের কোন রড় অংশ অন্যায়ের সাথে জড়িত থাকলে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করা হয়। গনঅবস্থানের প্রতি সম্মান জানিয়ে গনতান্ত্রিক মানসিকতার নেতৃবৃন্দ এ ধরনের ক্ষমার ব্যবস্থা করে থাকেন। আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা যে, মনুষ কখনোই অন্যায় করতে পারেনা (ব্যাক্তি পর্যায়ে অন্যায় হতেই পারে)। তাই যখন এ সমাজের মানুষ দুর্নিতীতে আক্রান্ত হয় তাকে আমরা খারাপ বলি কি করে? দুর্নীতি এখানে সামাজিক সংস্কৃতির অংশ আর এ সংস্কৃতিতে বেড়েওঠা কেউ দুর্নীতিগ্রস্ত হলে কোন পরিমাপ যন্ত্রেই তাকে আমরা মন্দ বলতে পারিনা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।