আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল-মাহমুদ, ফরহাদ মাজহার কিংবা সলিমুল্লাহ গং-এরাঃ লাইনের প্রথমে থাকা মানুষ

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই । কাদঁতে আসিনি ফাসিঁ দাবী নিয়ে এসেছি ।

স্কুল জীবনে নিশ্চয়ই এসেম্বিলিতে দাড়ানোর অভিজ্ঞতা আছে সবার । অতীব দুঃখের সাথে বলতে হয় এই এসেম্বিলি নামক যন্ত্রনায় সবার সামনে কিংবা সামনের দিকে দাড়ানো আমার জন্য বাধ্যতামুলক ছিল । বলা বাহুল্যে যে তা বলাই বাহুল্য প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত আমি সগর্বে সব্বার প্রথমে দাড়াইয়্যা সার্কাস এর দলনেতা হিসেবেই ছিলাম ।

কিন্তু আমার সেই শখ আর আহলাদ ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠিবার পর থেকেই কমিতে লাগিল । বড় হচ্ছি বলে কথা !!!! আমার উচ্চতা সেই হারে না বাড়িলেও আমি সব্বার শেষে দাড়াইয়্যা বান্দারামি করতাম । আর আমার মতো স্বল্প দৈর্ঘ্যের সতীর্থ শুধু গজরাইত, কিছু কইত পারত না । কেননা স্কুলে বান্দারামি সহ অন্যান্য বিষয়েও শ্রেষ্ঠতের সুবাদে আমার এই সুবিধা ভোগ, স্বল্প দৈর্ঘ্যের হয়ে দীর্ঘদেহীদের কাতারে দাড়ানো । আসল প্রসংগে আসি, প্রসংগ ফরহাদ মজহার এণ্ড গং ।

পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যাহার সর্বদা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে চায় । আর বিখ্যাত মানুষদের জন্য সেটা একধরণের রোগ । সেই বিখ্যাতদের দিনকাল পড়তির দিকে থাকলে প্রয়োজনে নিজের নাক ভাংগিয়া হলেও পত্রিকার হেড লাইন হতে চায় । সেইটা হালে বিখ্যাত পরের অভাগাদের গল্প । কিন্তু তার থেকেও ভয়ংকর হয় সেই মানুষের যাদের অযুত সম্ভবনা থাকে ।

কিন্তু সকল সম্ভবনা অংকুরেই বিনষ্ট হয় । এরা সম্ভবনাকেই বাস্তব মনে করে ধরাকে সরা জ্ঞান করে । কিন্তু প্রকৃত বাস্তবে এদেরই বলে লোকটার খুবই সম্ভবনা ছিল কিন্তু টিকতে পারল না ,শেষ পর্যন্ত পাবনা !!! সেই রকম খুবই সম্ভবনাময় আরো ভালো কবি ছিলেন আমাদের আল মাহমুদ । ছিলেন বলা ঠিক নয় কেননা তার সৃষ্টি এখনও আছে । তিনি ছিলেন উদারপন্থি মুক্তমনা মানুষ ।

মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য । আর তার বন্ধু কাম রাইভেল ছিলেন শামসুর রাহমান । তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে চাকরি টিকিয়ে রেখে ছিলেন । আর আল মাহমুদ যুদ্ধ শেষে পরবর্তীতে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের সাথে তাদের মুখপাত্র বনে যান । আর শামসুর রাহমান ১৯৭১ এর ভুল দ্বিতীয়বার করেননি ।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে বড় মনে করে তার জন্যই সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন । দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য । আর তাই আল মাহমুদের মতন একজন বিদ্বান অযুত সম্ভবনার কবি অনেকাংশেই পরিত্যাজ্য । শুধু মাত্র সবার সামনে থাকতে , লাইনের সামনে দাড়ানোর নেশায় আল মাহমুদ কখন নিজের লাইন ভেংগে খাটো ভংগুর একটি লাইনের সামনে দাড়িয়েছেন শুধু সামনে থাকতে পারবেন বলে । আর তার আসল লাইনে তিনি পিছিয়ে পড়ছিলেন সেই ক্ষোভেই নিজের স্বত্তাকে অস্বিকার করে লাইনের সামনে দাড়ানোর সেই নেশার কাছে তিনি পরাজিত হলেন ।

নিজের মুক্তমন উদার চিত্তের বদলে বেছে নিলেন লাইনে সামনে দাড়নোর বিনিময়ে অন্য পথ । ফরহাদ মজহার কিংবা সলিমুল্লাহ খান; হাল আমলের জ্ঞানীগুণী মানুষ । ফরহাদ মজাহার তারপরও কিছু সাহিত্য কর্ম করেছেন আর সেখানে সলিমুল্লাহ খান স্রেফ নবীশ । ঊনিশ শতকের ফ্যাশন তাদের পেয়ে বসেছে । প্রতিষ্ঠিত স্বীকৃত বিষয়কে অস্বিকার করার যে ফ্যাশন সেটাই তারা নিয়েছে ।

ফরহাদ মজহার বলল, মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী জঙ্গী, তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তুলনা করলেন ইসলামি(!!!) জঙ্গীদের সাথে । কিছু লোক তাতেই বাহবা দিলেন । বলা বাহুল্য যে এই কিছু লোক কারা !!! নাজমুল হুদা তারচেয়ে ও অনেক দামি কথা বলেছে, জামাত শিবির অখণ্ড পাকিস্থান চেয়ে কোন দোষ করিনি । শুধু নাজমুল হুদা বলেছে বলে কথাটা বেহুদা হয়ে যায় ফরহাদ মজহার বলেই তা জ্ঞানীগুণীর কথা হয়ে যায়!!! সলিমুল্লাহ খানরা বলে বসলেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কোন সাহিত্যিক নন । তার লেখা এতো অপাঠ্য যে সলিমুল্লাহ খানরা তা পড়ে উঠতে পারিনি ।

সলিমুল্লাহ খানের আর কোন যোগ্যতা না থাকলেও কোন কিছু কে অগ্রাহ্য করার গুণ কিংবা ফ্যাশন আছে সেটা আমার জানা । আবার অগ্রাহ্য বস্তুকে তথাকথিত যুক্তি দিয়ে গ্রাহ্য করার অচেষ্টা এরা করে । তবে শুনেছিলাম তিনি নাকি পণ্ডিত ব্যাক্তি ব্যাপক পড়াশুনা । কিন্তু যে পাঠক ইলিয়াস পড়তে পারেনা সে তাহলে কেমনতর পাঠক ?? আমার মনে সন্দেহ জাগে । ইলয়াসের 'খোয়াবনামা " পড়ার পর কোন নতুন কিংবা নবীশ পাঠক হলেই বলতাম দাত খিচে "খোয়াবনামা"র প্রথম ৪০ পৃষ্ঠা পড়ে ফেলবি, সেটুকু পড়তেই কষ্ট তারপর আর কষ্ট করতে হবেনা ।

আপনা-আপনিই পড়া হয়ে যাবে । আমরই ভুল সলিমুল্লাহ কেও সেভাবেই পড়তে বলা উচিত ছিল । আসলে এরা লাইনের প্রথমে থাকা মানুষ । যদি লাইন পিছিয়ে পড়ে তবে সাথে সাথে লাইন ভাংগতে এরা দ্বিধা করে না । আরেকটি লাইন বানিয়ে তার প্রথমে থাকা চাই ।

যে করেই হোক লাইনের প্রথমে থাকা চাই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.