আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

য়্যাস ফর্মুলা - ৫

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

আমাদের রপ্তানীকারণ সংঘের কিছু নীতিমালা পুনর্লিখিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এখন কিছু ক্লাসিফাইড মিশন হাতে নিতে পারি। যেমন রপ্তানীর আদলে আমরা কিছু বর্জ্য দেশ থেকে বাইরে নিক্ষিপ্ত করতে পারি। বর্জ্যগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে কোরআন বিরোধি নারী নীতিমালা প্রতিরোধ কমিটি। প্রধান উপদেষ্টা সংগত কারণে একটা স্ট্রাটেজিক মিটিং এ আমাদের নিমন্ত্রণ করলেন।

সেখানে নিদৃষ্ট সময়ের পূর্বেই আমরা কনফারেন্স রুমের বাইরের ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করতে থাকি। এমন সময় সভার অন্যান্য নিমন্ত্রিতরা আসতে শুরু করেন। তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সংগঠন আহকামে শরীয়াহ হেফাজত কমিটির দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী, ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান যাইনুল আবেদীন (সুধীমহলে যাউরা আবেদীন নামে পরিচিত), কোরআন বিরোধী নারী নীতিমালা প্রতিরোধ কমিটির আজিজুল হক, ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমিনী ছিলেন। সাঈদী, আজিজুল হক, যাউরা আবেদীন আর আমিনীর সুন্নতী পায়জামায় বেশ স্পষ্টভাবে ইমানদন্ড পরিদৃশ্যমান হওয়াতে আমরা এই ইমান রপ্তানীর বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত হলাম। সব মিলে মোটামুটি দশবারোজন নারীবিরোধী সভ্য সভায় উপস্থিত।

ইদানিং যে সমস্যার কারণে তাদের বায়তুল মোকাররম সহ অন্যান্য মসজিদে মিছিল মিটিং করা দুঃসহ হয়ে গেছিল সেটা হচ্ছে নারী মুসল্লীদের আধিক্য। নারী নীতিমালা প্রণয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরীর পরে গার্মেন্টসের লাখো লাখো নারী শ্রমিক মসজিদে নামাজ পড়া শুরু করেছিল। জুমার নামাজে নারী শ্রমিকরা বেপর্দা মসজিদে গমন করা শুরু করলো। বায়তুল মোকাররমের খতীব ও নারী বিরোধীরা প্রতিবাদ করাতে বস্রবালিকারা উল্টো নারী বিরোধীদের বোরখা পড়ে চলতে বলে। এতে দেশব্যাপি একটা নারী বিপ্লব সংগঠিত হলো।

যোগ দিল সর্বস্তরের নারীরা। ফলে মসজিদে পুরুষদের আধিপত্য ক্ষুন্ন হলো; মহল্লা, গ্রাম, শহর সর্বত্রই নারী মুসুল্লীরা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ। কোথায় গেল কোরআন বিরোধী নারী নীতিমালা নিয়ে উচ্চবাচ্য, আসল ইমানদন্ডের উত্তেজনায় ইসলামী রাজনীতির জোশে লাগলো ভাটার টান! প্রধান উপদেষ্টা প্রথমেই আমাদের পাকিস্থানের ডিমান্ড নোট দেখালেন। সেখানে মহিলাদের মসজিদমুখী করার জন্য কোন পদ্ধতিই তেমন কার্যকর হচ্ছে না। উপরন্তু তাদের নারী নীতিমালা নিয়ে মৌলভীদের তেমন কোন সাড়া শব্দ নাই।

যারজন্য পাকিস্থানের নারীরা তেমন প্রতিক্রিয়াশীলও হয়ে ওঠেনি। এমন অবস্থায় আজিজুল হক, সাঈদী, আমীনি ও যাউরা আবেদীনদের রপ্তানীমূল্য বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। পাকিস্থানের ডিমান্ড নোটে এদের নাম পর্যন্ত উল্লেখ করা আছে। নারী বিরোধী মিছিল মিটিং করে নারীদের হয়তো খেপিয়ে তুলতে পারবে! আমিনী, সাঈদী, আজিজুল হক আর যাউরা আবেদীন চেয়ারে বসার পর থেকেই কিছুক্ষণ পরপর ওঠবস করছিলেন। মনে হচ্ছে, তাদের নিতম্বে লাথির পরিমাণ বেশীই হয়ে গেছে।

আমি জানতে চাইলাম, হুজুরেরা কি একটু বেশী লাথি খেয়েছেন? আমিনী বললেন, আরে না না! এ অন্য সমস্যা, ঠিক বুঝবেন না আপনারা? প্রধান উপদেষ্টাও বিষয়টা নিয়ে উৎকণ্ঠিত হলেন। হুজুরের চেয়ারে কি কোন সমস্যা? আমীনি মনে হলো ব্যাথায় আরো কাতরে উঠলেন। বললেন, আসলে সমস্যাটা করেছে এই নারী শ্রমিক মুসুল্লীরাই। তারা আমাদের পরিবারে দাওয়াতী কর্মকান্ড পরিচালনা করায় মেয়েছেলেরা সবাই মসজিদমুখী হলোতো বটে সেই সাথে আমাদের শয্যাগ্রহণও বাদ দিল। কি বলেন? আপনারা বুঝেছেন আমরা মিছিল মিটিং ছেড়েছি নারীদের আধিক্যে? তা নয়।

আসলে এদের সাথে মসজিদে গেলে মসজিদকে বেহস্তের বাগান আর নারী মুসুল্লীদের হুর মনে হয়! প্রধান উপদেষ্টা জোরে বলে ওঠেন, আসতাগফিরুল্লাহ! কোরআন বিরোধী নারী নীতিমালা প্রতিবাদ কমিটির সভাপতি বলেন, সেজন্য আমরা মসজিদ ছাড়লাম, ইমানীদন্ড সবসময় উত্তেজিত থাকে বলে মসজিদে গিয়ে মনযোগ যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে। আমরা সবাই একযোগে বলে উঠি, তারপর তারপর? আমিনী এরপর কোনমতে উঠে দাড়ালেন চেয়ার ছেড়ে। নিজের সাগরেদদের দেখিয়ে বললেন, এরা এদের ইমানী উত্তেজনা এখন আমার পেছনের রাস্তা দিয়ে নিবারণ করে! আপনারই বলেন, আমাদের পাকিস্থানে রপ্তানী করা এ অবস্থায় কতটুকু লাভজনক হবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।