আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুস্বাগতম কসোভো!!

কম্পিউটার বিশারদ পেশায়, নেশায় যুক্তিবাদী

সুস্বাগতম কসোভো !! নতুন আরেকটি দেশ পথচলা শুরু করল গতকাল। সংবাদটা পাবার পর থেকে বেশ ভাল লাগল, অবশেষে কিছু একটা পজিটিভ বেরিয়ে এলো মীমাংসা হিসাবে। অনেকদিন ধরেই আমি নজর রেখে চলেছি এই ছোট্ট ভূখন্ডের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ওপর। যুগোশ্লাভিয়ার স্বৈরাচারী শাসক, তারপরে আলবেনিয়ানদের বিতাড়িত করা, শেষে ন্যাটো আর কসোভো লিবারেশন আর্মির হাত ধরে উলটো কসোভোর সার্বদের ওপর প্রতি-আক্রমণ এবং সব শেষে প্রেসেডিন্ট নির্বাচন ও স্বাধীনতা ঘোষণা। ২০০৬ থেকেই বিভিন্ন টানাপোড়েন চলছিল কসোভোর স্বাধীনতা নিয়ে।

জাতিসংঘ কিছুতেই মীমাংসায় পৌঁছতে পারছিল না চিন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে। এর মাঝেই ফেব্রুয়ারিতে হল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ডেমোক্রাটিক পার্টির হয়ে ভোটে জিতলেন লিবারেশন আর্মির পুরোনো কম্যান্ডার হাসিম থাচি। উল্টোদিকে চাপ আসছিল সার্বিয়া থেকেও। তারাও স্বাধীন কসোভোকে কোনোভাবেই মেনে নেবেনা বলে দাবী জানিয়েছিল অনেকদিন ধরেই।

এরকম জটিল প্রেক্ষাপটে গতকাল ঘোষণা হয়েই গেল কসোভোর স্বাধীনতা। কিন্তু সাথে সাথেই টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেল আন্তর্জাতিক মহলে - কে কে কসোভোকে স্বীকৃতি দেবে আর কে কে দেবে না - তা নিয়ে। মূলত আমেরিকা, ব্রিটেন আর ফ্রান্স স্বীকৃতি দিতে রাজি, আর অরাজী চিন ও রাশিয়া। এ ছাড়া যারা স্বীকৃতি দিতে পারে তাদের মধ্যে আছে সৌদি, পাকিস্তান, ইটালী, জাপান, আলবেনিয়া, জার্মানী, টার্কি ও সুইজারল্যান্ড। আর দেবে না বলে মনে করা হচ্ছে বসনিয়া, সাইপ্রাস, গ্রিস, রোমানিয়া, চেক রিপাবলিক, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, জর্জিয়া ইত্যাদি অধিকাংশ দেশ।

ভারত সরকারও ধীরে চল নীতি অবলম্বন করছে। শ্রীলঙ্কার বিরোধিতার কারণ উত্তরাংশে অবস্থিত তামিল ভুখণ্ড - যা একই ভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারে ভবিষ্যতে। সার্বিয়ার প্রস্তাবিত পতাকাটা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পতাকার সাথে মেলে - ম্যাপ আঁকা আছে পতাকায়। কসোভোতে সংখ্যালঘু সার্বদের কি হবে সে নিয়ে অবশ্য সবারই মাথাব্যাথা চলছে। আসলে সারা যুগোস্লাভিয়াতেই বিভিন্ন জাতির লোকজনে পকেট-টেরিটরিতে বসবাস করে - অনেকটা স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতীয় উপমহাদেশের মত।

তাদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গার ঘটনাও কম নয়। তাই এরকম একটা পার্টিশনের ফলে উদ্বাস্তুর সংখ্যা বাড়বে ছাড়া কমবে বলে মনে হয় না। অনেক সার্বরা আগেই উতখাত হয়েছে বসনিয়া আর ক্রোয়েশিয়া থেকে, এবার বাকিরা ফিরবে কসোভো থেকেও। তবে কোনো অবস্থাতেই স্বাধীন কসোভো থেকে ফিরে যাওয়া আর সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সার্বরা এবার আবার ঘরে ফেরার জন্য বাক্স গূটোতে শুরু করে দিয়েছে।

আর আলবেনিয়ানদের মার খাবার দিন শেষ - এখন তারা আনন্দের সাথে নতুন দেশ গড়ার কাজে জেগে উঠবে। বিস্তারিত এখানে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।