আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইসা গেছি মামুজান আইসা গেছি: একদিন সকালে উঠিয়া রামপাল...

মন আমার ডাইনে বায়ে লাফ দেয়, কখনোই রাস্তা মত যায় না। ধর্ম কর্ম আমারে মানায় না, তাই আমার বাপও আমারে ভালা পায় না। তয় আমি বড়ই খাইতে ভালোবাসি, কারন মৌসুমী ফলেই আছে জগতের সুখ!

গতকাল রাতেই কমলাপুর ল্যান্ড করলাম। সে এক আজব অনুভূতি, বলে বুঝানো দুস্কর। আমার সাথে থাকা 'ধনেশ পাখি' শাহরুখ খালি ঝিমাইতেছে রানীক্ষেতের মুরগীর মতো।

ঝিমাবেনাই কেন, কক্সবাজারে সুন্দরী খাইতে গিয়া মাল নিয়া যেই ঝামেলার মধ্যে পড়লো তাও তো কম না। বাসায় ঢুকিতেই কাশেম কাকারে (দারোয়ান) জিগাইলাম,"কোনো বুড়া লোক কি আমারে খুজছিলো?" সে অবাক দৃস্টিতে তাকাইয়া বলিলো," কালকে আবার আসতে পারে। এইটাই তো বইলা গেলো। " আজব ঝামেলার মধ্যে পড়লাম। বাপে আমার পিছনে চুইঙ্গামের মতো লাইগা আছে।

আমি শাহরুখের মোবাইলটা নিয়া আব্বাকে দিলাম ফোন। -হ্যালো, আব্বা, স্লামালিকুম। -তুমি কোথায়? -জ্বী, আমি কেবল স্টাডী ট্যুর সেরে বাসায় আসলাম। আপনি এখন কোথায়? -আমি আজ রাতে খুলনায় রওনা দিয়ে দিছি। শোনো তুমি একটা কাজ করবা সেইটা হলো... আমি হালে পানি পাইলাম।

সে যেই কাজই দিক না কেন, আমি মনোযোগ দিয়া সেই কাজ করিবো। তার মানে রাত ফুরালে সে খুলনা। রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে হেলান দিয়ে নওরীনরে ফোন দিলাম রুটিন কাজ হিসেবে। তারপর ২ টার সময় ঘুম আর ঘুমের মধ্যে চিন্তা করতে লাগলাম কক্সবাজার ট্যুর। জয় বাংলালিংক! কক্সবাজার ট্যুর আসলে বাবার চিঠিটা পেয়ে মাথা আমার সিক্সটি নাইন হয়ে যায়।

কি করবো কিছু বুঝতে ছিলাম না। শাহরুখের মুখে লুঙ্গী গুজেও শান্তি পাচ্ছিলাম না। কারন আমার রেকর্ড কোনো সময়ই হোয়াইট ছিলো না, সব যেনো কালো টাকাওয়ালাদের মতো অন্ধকার। তাই প্রাথমিক একটা চিন্তা নিয়ে শাহরুখের কাছে যেতেই সে দিলো একটা লাফ। কারন সে কোথা থেকে শুনেছে কক্সবাজারে নাকি টাকা দিলেই বার্মীজ! কি মজা! ও দেখি এক লাফেই রাজী।

তখন আমি বললাম," তুই ৩ হাজার টাকা, আর আমার হাতে আছে ১৫০০টাকা। ঠিক আছে। " ওর মুখটা প্রথমে শুকিয়ে গেলেও পরে আবারও খুশী। তার ওপর আবার বললাম নওরীনকে অফার দেয়া যায় কি না, ও তো শুনেই হা! গেলাম দুজনে মিলে নওরীনের বাসায়। দরজা খুললো নওরীনের মা।

আমি প্রথমে থতমত খেয়ে গেলাম। আন্টিকে একটা সুন্দর করে সালাম দিয়ে নওরীনের নাম বলতেই কি সোহাগ! আমরা একটু অবাক হলাম। নওরীন আসলো, তাকে বললাম পুরো ব্যাপারটা। সে শুনেই একটা চিতকার দিয়েও দিলো না। তবে ওর অফারটা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।

কারন আমরা অতটা আশা করিনি,যেনো মেঘ না চাইতেই জলোচ্ছ্বাস। ওর অফারটা অনেকটা এরকম ওর দুই কাজিন (দুইটাই মেয়ে আমাদের উপর নীচ বয়স হবে) আর তিন বান্ধবী-ওরাও নাকি রিসেন্টলি এমন প্লান করছে। আমার পাশে বসা শাহরুখের দিকে একবার তাকিয়ে আমি হা দেখি ওর জিহবা প্রায় বেরিয়ে, আর চোখ দুইটা জ্বল জ্বল। আমি বললাম," তা তোরা কখন রওনা হবি?" ও তখন ভিতরে চলে গেলো। একটু পর মন খারাপ করে বের হলো।

বললো ওর নাকি শুক্রবার বড় ভাই আসছে জার্মানী থেকে-সে আবার আরেক ঘটনা। ওর ভাই নাকি জার্মানীতে নোকিয়া কোম্পানীতে চাকরী করতো ৩ বছর ধরে। ইদানীং নোকিয়া নাকি গনহারে ছাটাই করছে। খোদ জার্মানীতেই নাকি ২৫০০ কর্মী ছাটাই। সেটার ক্রশফায়ারে তার ভাই পড়েছে।

কিন্তু চাকরী গেলে মানুষের কপাল পোড়ে তার কপাল আরো খুলছে। কারন সে দেশে এসেই বিবাহ করছে। তার হবু ওয়াইফের ছবি দেখলাম। আমার চোখ সেইখানেই আকাশে উঠে গেছে, আর শাহরুখের কথা কিছু বলতে পারলাম না। নওরীন মন খারাপ করে বললো," হবূ ভাবী কেমন সেক্সী, দেখেছিস?" আমি তখন বললাম," এমন ভাবে বলছিস যেনো তুই ওরকম না হয়ে তোর মন খারাপ!" ও বললো, "আরে ধুর, ভাবলাম এতদিন পর কক্সবাজার যাবো এখন এই বালের বিয়ে!" আমি তখন বললাম," আচ্ছা, আমাকে হাজার পাচেক টাকা দিতে পারবি?" ও ততক্ষনাত দিয়ে দিলো।

এরকম বড়লোক বান্ধবী থাকলে খুব সুবিধা, টাকা নিলে আর দিতে হয় না। চলে গেলাম কমলাপুর সোজা, কাটলাম টিকিট চট্টগ্রামের। বাসায় এসে গুছালাম সব জমা কাপড়। কাশেম কাকার হাতে গছিয়ে দিলাম ৫০ টাকা, বললাম, যে আসুক বলে যেনো ভার্সিটি থেকে স্টাডি ট্যুর টু কক্সবাজার! কাশেম কাকা কিছুক্ষণ নোটটা কচলালো, বোঝাতে চাইলো সবকিছুর দাম উর্ধ্বমুখী। গেলো আরও ৫০ টাকা অবশ্য এটা শাহরুখের পকেট থেকে।

(চলুক বাকী পর্বে!)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।