আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিঃস্বার্থ ক্রন্দন - What is Cry

(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ - ইহা একটি গবেষণামূলক জ্ঞানের লিখা। রস খুজিয়া হতাশ হইলে লেখক দায়ী নহে)
ভেবেছিলাম আস্ত একখানা এসো নিজে করিই লিখে ফেলব - এসো নিজে করি - কিভাবে কাঁদবেন / How to cry। পরে মনে হল এত বিস্তারিত গবেষণায় কাজ নেই। অল্প কথায় কাজ সেরে মানে মানে কেটে পড়ি। প্রশ্ন হল- মানুষ কেন কাঁদে? উত্তর হল, মনে দুঃখ হলে কাঁদে।

আনন্দ হলেও কাঁদে বটে তবে অতো জটিলতায় না যাই। আপাতত দুঃখের কান্না নিয়েই কথা বলি। এইবারে দুঃখও হল মোটের উপর দুই প্রকার। অ্যানালগ দুঃখ আর ডিজিটাল দুঃখ। অ্যানালগ দুঃখ হলে মানুষ মা বা স্ত্রীর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে কান্দে।

ডিজিটাল দুঃখ হলে ফেসবুকের কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে কান্দে। আপাতত জটিলতা কমাতে অ্যানালগ দুঃখও বাদ দেই। ডিজিটাল দুঃখ আবার দুই প্রকার- নিজের দুঃখ আর জন মানুষের দুঃখ। প্রেমিকা গাল দিয়েছে, প্রেমিক অন্য মেয়ের স্ট্যাটাসে লাইক দিয়েছে, মনডা উদাস, গা ম্যাজ ম্যাজ করে, পেটে গ্যাস হয়েছে এসব ব্যক্তিগত দুঃখও বাদ দেই এবার। বাকি রইল জন মানুষের দুঃখ, দেশ ও দশের সমস্যার জন্য দুঃখ।

এই দুঃখে কিভাবে কাঁদবেন সেটা নিয়ে হালকা আলাপ আলোচনার জন্যই প্রসঙ্গের অবতারণা।
মুজতবা আলীর বইতে পড়েছিলাম। আফগান ব্যাটার বউ মরে গেছে তার কোন চেতভেত নাই। বউ গেলে বউ পাওয়া যাবে। সন্তান মরে গেছে তেমন কোন চেতভেত নাই।

সন্তান আরও বানানো যাবে। কিন্তু ভাই মরার পর তার গড়াগড়ি দিয়ে কান্না। ভাই গেলে ভাই আর কই পাব এই বলে। বেশী পাকনা লোকেরা এখন আফগানীর সাথে ডক্টর ইউনুস এর মিল খুঁজে পেতে পারেন, সেই জন্য লেখক দায়ী নহে। সে যাই হোক, কথা হচ্ছে কান্না কার কখন কি কারণে আসবে বলা মুশকিল।

আফগানীর চেয়ে আমাদের অবস্থা আরও খারাপ। মা বউ পোলাপান মরে ভূত হয়ে গেলে চেতভেত নাই, পাশের বাসার কাজের বুয়া মরে গেলে হাপুস কান্না। এখন আবার আমাকে রেসিস্ট, সাম্রাজ্যবাদী, পুঁজিবাদী বলে গাল দিতে পারেন অনেকে। কাজের বুয়া গরিব বলে তার মৃত্যুতে কি কিছু আসে যায়না, পাষণ্ড কোথাকার। অবশ্যই আসে যায়।

কিন্তু সিনটা একবার ভাবুন। ভদ্রলোক মায়ের মৃত্যুর সময় চোখমুখ শক্ত করে বলেছেন, হায়াত মউত সবই তার হাতে। মৃত্যু নিয়ে মন খারাপের কিছু নেই, সবই অমোঘ নিয়তি। দুইদিন পরে তিনি যদি পাশের বাড়ি গিয়ে ওগো কুলসুমের মা গো , তুমি কই গেলাগো, কে এখন এদের ঘর মুছে দিবে, থালা বাসন কে মাজবে বলে আছাড়ি পিছাড়ি দিয়ে বিলাপ শুরু করেন তাইলে ব্যাপারটা একটু ইয়ে হয়ে গেল না? এখন আপনি যদি সত্যি নরম মনের মানুষ হয়ে থাকেন তবে কিন্তু কোন সমস্যা নেই। সেক্ষেত্রে শুধু মায়ের মৃত্যুতেও আপনাকে একটু কাঁদতে হবে।

নো কমেন্টস, কোন প্রতিক্রিয়া নেই, হায়াত মউত তার হাতে বলে পিনপিনানি সংলাপ শুরু করলে বুঝতে হবে আপনার মন আর ইয়ে একইরকম। কখন নরম আর কখন শক্ত হবে বোঝা মুশকিল।

আমাদের দেশে নিত্যনতুন সমস্যা লেগেই আছে, লেগেই আছে। সুতরাং আর যাই হক কাঁদার জন্য ইস্যুর অভাব হবেনা কখনোই। সুতরাং নিঃস্বার্থভাবে কাঁদতে হলে আপনাকে প্রায় সবসময়েই কাঁদতে হবে।

এবারে উদাহরণ দেয়ার জন্য দেশের কিছু সাম্প্রতিক সমস্যা তুলে ধরি। সমস্যা বা কাঁদার উপযোগী ঘটনাগুলোকে দুইভাগে ভাগ করি। লাল ইস্যু আর নীল ইস্যু। যেহেতু আমরা আন্তর্জাতিক জাতি তাই আভ্যন্তরীণ সমস্যার সাথে কিছু আন্তর্জাতিক সমস্যাও চামে চিকনে ঢুকিয়ে দিলাম।
লাল ইস্যু ........................ ৭১ এর গণহত্যা কাদের মোল্লার বিচার গোলাম আজমের বিচার শাহাবাগ সাঈদীর চন্দ্রাভিজান সাঈদীর ফোনসেক্স ফটিকছড়ি হত্যা রামু, উখিয়া ও টেকনাফে বৌদ্ধ বিহার ও হিন্দুদের মন্দিরে তাণ্ডব সাতক্ষীরার হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর তাণ্ডব ব্লগার রাজীব হত্যা চার ব্লগার গ্রেফতার বাশার ও সিরিয়া
নীল ইস্যু ........................ হেফাজতে ইসলাম ও মতিঝিলে হত্যা রানা প্লাজার হত্যা ত্বকী হত্যা সাগর রুনি হত্যা ডেস্টিনি ও হলমার্ক কেলেঙ্কারি আবুল ও পদ্মা সেতু সুরঞ্জিত ও কালো বিড়াল বিশ্বজিৎ হত্যা লিমন ও র‍্যাব ফেলানী হত্যা দিগন্ত ও আমাদের দেশ বন্ধ মাহমুদুর ও আদিল গ্রেফতার ওবামা ও সিরিয়া রোহিঙ্গা সমস্যা মিসর সমস্যা
লাল নীলে ভাগ করার পেছনে তেমন কোন গুরু রহস্য নেই।

সামান্য গবেষণায় মনে হল যাদের নীলে কান্না পায়, লালে তাদের তেমন কিছু যায় আসে না। বরং মাঝে মাঝে হাসিও পায়। আবার কান্না পেলেও তখন প্রশ্ন আসে ঠিক কত পরিমাণের কান্না পায়। অশ্রু মাপার জন্য Schirmer's test এ কিছু বিশেষ রকমের কাগজ ভিজিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় বটে। তবে কিছু কিছু ইস্যুতে আমাদের অনেকের কান্নার পরিমাণ এত বেশী যে ওইসব পিনপিনে কাগজ টাগজ দিয়ে তা মাপা যাবেনা।

লিটার কে লিটার, গ্যালনকে গ্যালন পরিমাণে অশ্রু কি আর ওভাবে মাপা যায়? তারচেয়ে বরং প্রতিসেকেন্ডে সারা দেশে কত লিটার চোখের পানি বইছে তা দিয়ে একটা লিটার পার সেকেন্ড একক বানানো যায় কান্না মাপার জন্য। যেমন নিচের ছকে আমাদের কিছু ইস্যু, সেই ইস্যুতে মৃত্যুর পরিমাণ আর মানুষের কান্নার পরিমাণ তুলে ধরলাম।

Death Count হিসেব করলাম উইকি মুইকি ঘেঁটে। শুধু হেফাজত গণহত্যার ক্ষেত্রে অধিকারের আদিলের ৬১ কেই ধরে নিলাম আপাতত। জানি দুষ্ট লোকে নানা কথা বলছে, এই তালিকায় নাকি একজনের নাম একাধিকবার আছে।

অনেকের অস্তিত্ব নেই। তারপরেও নীল অশ্রু পার্টিদের খুশী রাখতে দিলাম আরকি ৬১ এর সাথে আরও একটা ফাও দিয়ে ৬২ বানিয়ে দিলাম। এবারে অশ্রুর পরিমাণ। এটা এক্কেবারে বৈজ্ঞানিকভাবে জরীপ করে ১০০ ফেসবুকারদের এভারেজ নিয়ে বানিয়েছি। PhD থিসিসে নানারকমের গ্রাফ আর উপাত্ত সুবিধামত ডানে বামে টানাটানি করতে করতে আমার খাসলত একটু খারাপ হয়ে গেছে।

তারপরেও মনে করেন বড়োজোর দুই এক লিটার এদিক সেদিক হতে পারে হিসেবে। এর বেশী না।
তো প্রথমে যদি মৃত্যুর সংখ্যা হিসেব করে এই কয়টা ইস্যুকে একটু বার প্লট করি তাইলে এইরকম কিছু একটা দাড়ায়।

নাহ, ঠিক ফেয়ার হল না। তিরিশ লাখের পাশে অন্য যে কোন সংখ্যাই ছোট লাগে।

এমনকি রানা প্লাজার মতো ভয়াবহ একটা জিনিসকেও ছোট দেখা যাচ্ছে এর পাশে। বরং একখানা বাবল প্লট করি।

নাহ এটাই ঠিক জুত হচ্ছে না। একটা বড় গোল্লা অসভ্যের মতো তাকিয়ে আছে। রানা প্লাজাকে ছোট একটা বিন্দু মনে হচ্ছে।

হেফাজতকে টেনেটুনে ৬২ বানানোর পরেও তার বিন্দু খালি চোখে দেখা যাচ্ছেনা। এরচেয়ে বরং এক্স অক্ষে মৃত্যুর সংখ্যা আর ওয়াই অক্ষে কান্নার পরিমাণ বসিয়ে একখানা স্ক্যাটার প্লট করি।

এখানেও তিরিশ লাখের পাশে বাকি সংখ্যাকে শূন্য মনে হচ্ছে। তবে ক্রন্দনের পরিমাণের একটা বেশ তুলনামুলক চিত্র বোঝা যাচ্ছে। এবারে একটা উদাহরণ দেই।

ধরা যাক আপনি জনৈক ডিজিটাল মানবতাবাদীর ক্রন্দন ট্র্যাক করা শুরু করলেন। খুব সহজ কাজ, তার ফেসবুকে গিয়ে তার ক্রন্দনগুলোর রেকর্ড দেখুন। যেমন আমার করা গবেষণার একটা রেকর্ড নীচে দিলাম। এক্কেবারে রিয়েল লাইফ ক্রন্দনের সময়ানুক্রমিক লগ এটা, কোন টেম্পারিং ছাড়া।
ফেলানী হত্যার রায় প্রত্যাখ্যান করে ক্রন্দন ওবামা সিরিয়াতে বোমা মারতে যাচ্ছে এজন্য ক্রন্দন পদ্মা সেতু দুর্নীতি নিয়ে ক্রন্দন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ক্রন্দন ড. ইউনুসের জন্য ক্রন্দন অধিকারের শুভ্রের জন্য ক্রন্দন ব্রাদারহুডকে আমেরিকান-ইসরাইল-সৌদি সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীরা পুটু মারায় ক্রন্দন ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনের জন্য ক্রন্দন ড. জাফর ইকবালে নাস্তিকতা ছড়ানো নিয়ে ক্রন্দন দুষ্টু সমাজব্যবস্থার কারণে ঐশীর বখে যাওয়াতে ক্রন্দন মিতা হক টেনেটুনে সবার বুরকা খুলে ফেলায় ক্রন্দন রানা প্লাজার জন্য ক্রন্দন যুবলীগের সহায়তায় পান্না মাস্টার এত এত রেপ করে ফেলায় ক্রন্দন জন্মদিনে তাজউদ্দীনের জন্য ক্রন্দন পিলখানায় নিহত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ক্রন্দন
খেয়াল করলেই বুঝে যাবেন, সবই নীল কান্না।

ফলাফল, পাড়ার পোলাপান ছাগু ছাগু বলে আপনাকে উত্যক্ত করার চেষ্টা করবে। তার মানে এই নয় সে নীল কান্না কাঁদলে আপনি ছাগু। তবে শুধুই নীল কান্না কাঁদলে ... আবার জিগায়। সুতরাং এটা কখনোই নিঃস্বার্থ ক্রন্দন হবেনা, ছাগ-স্বার্থ ক্রন্দন হবে। আবারও বলছি।

মন দিয়ে খেয়াল করে দেখুন। মাঝেমাঝে নীল কান্নায় কোন সমস্যা নেই। কিন্তু শুধু নীল কান্নায় সমস্যা হেজ। ঠিক যেমন পাশের বাড়ির কাজের বুয়ার মৃত্যুতে কাঁদলে সমস্যা নেই, নিজের ভাইয়ের মৃত্যুতে কাঁদলে তো সমস্যা নেইই। গোল বাঁধে তখনই যখন মায়ের মৃত্যুতে আপনি নিরপেক্ষ! তাজউদ্দীনের মৃত্যু বা পিলখানার হত্যা নিজের ভাই হারানোর মতোই কষ্টকর।

তবে সেই দুঃখে কেঁদে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিনে কেকে কেটে উৎসব লাগিয়ে দিলে আপনার কান্না দেখলে কুমিরও লজ্জা পাবে যে।
মাঝেমাঝে বোধ হয় ফেলানির জন্য কোটি লোকের যে কান্না তার কয়টি ফেলানির জন্য আরও কয়েক লাখ ফেলানিদের লাশ ধামাচাপা দেয়ার জন্য। ভারতকে যে অবিশ্রান্ত গালি বর্ষণ করা হচ্ছে সেই গালির কতটুকু ভারতকে টলানোর উদ্দেশ্যে আর কতটুকু নিজ দেশকে টলানোর উদ্দেশ্যে। আজকে যে বাংলাদেশে মৌলবাদের দৌড়াত্ব বেড়ে চলছে, লক্ষ মানুষ খুনের দায়ভার নিয়ে গোলাম আজম তিন বেলা আপেল আঙ্গুর খাচ্ছে, রাজাকারের বিচার হবার সম্ভাবনা আস্তে আস্তে শূন্যের কোঠায় নেমে আসছে এই সকল সমস্যার কোন আশু সমাধান আমার জানা নেই। তবে ভারত সমস্যার সমাধান হয়তো খুবই সরল।

প্রথমে সহজ সত্যি কথাটি মেনে নিন। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্ব খুব বেশী না ভারতের কাছে। আমাদের কূটনীতিক বা রাজনীতিবিদ কারোরই সেই ক্ষমতা বা প্রজ্ঞা নেই ভারতকে ধমক দিয়ে অথবা মাথায় হাত বুলিয়ে আমাদের দাবী আদায় করে নেয়। সেরকম ক্ষমতা আর প্রজ্ঞা যাদের ছিল আমরা তাদের গুলি টুলি করে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছি অনেক আগেই। এখন যারা আছে তারা যাবে আর আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে, আমরা জানতে পেরেছি দোষটা আসলে আমাদেরই ছিল বলে নাচতে নাচতে ফিরে আসবে।

ফ্ল্যাগ মিটিং, আলোচনা, স্মারকলিপি পেশ, হাইকমিশনের সামনে প্রতিবাদ ইত্যাদি করেও তেমন লাভ নেই। করার মতো কাজ একটিই আছে, সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা। ভারতের পণ্য, মিডিয়া, টিভি চ্যানেল বর্জন করা। সেইজন্য আপনাকে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে, ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে গিয়ে মিটিং মিছিলের দরকার নেই। নিজের বাসায় এসে নিজের পরিবারের সাথে কনসাল্ট করুন।

পাড়ার ডিশ ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করুন। দেখুন ভারতীয় টিভি বর্জন করার জন্য সবচেয়ে কৌশলগত উপায় কোনটি। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে মনে হয় যদি সীমান্ত ইস্যুতে ভারতকে ধরে নাড়া দিতে চান তবে তাদের মিডিয়া বাণিজ্য ধরে নাড়া দিন। কাজটা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। ভারতেরই মহাত্মা গান্ধী বলে একজন কিভাবে কাজটি করতে হয় সেটার উদাহরণ দেখিয়ে গিয়েছেন।

আর যদি ভারতকে নাড়া দেয়ার উদ্দেশ্য না হয়ে আপনার ক্রন্দনের উদ্দেশ্য হয় নিজের দেশকে ধরে নাড়া দেয়া তবে জপতে থাকুন ... ফেলানীর মৃত্যু এবং এই অবিচার মানিনা ...আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম ...ইন্ডিয়া হইতে পাকিস্তান উত্তম ...স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানের শোষণ থেকে স্বাধীনতার পরের ইন্ডিয়ার শোষণ আরও ভয়াবহ ...পাকিস্তান আমাদের যত লোক মেরেছে , ইন্ডিয়া তার থেকে বহুগুন বেশী মানুষ মেরেছে ... ইত্যাদি ইত্যাদি। বাস্তবতা হল মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। বাঙ্গালীর ভারত প্রতিবাদের দৌড় নিজ গ্রামের কিছু মন্দির ভাঙ্গা পর্যন্তই। নিজ ঘরে জীবন মানে জি-বাংলা চালিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দৌড়াদৌড়ি করা পর্যন্তই। তারপরেও অবাস্তব স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে যে লোকজন ক্ষেপে উঠে মন্দির না ভেঙ্গে নিজ বাড়ির টেলিভিশন ভাঙ্গছে।

সবাই এক হয়ে নিজ পরিবারকে বোঝাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেল ছাড়াও বেঁচে থাকা যায়।
সে যাই হোক। কান্নার কথা বলে শুরু করেছিলাম। লাইনে থেকে সেই কান্নাতেই ফিরে যাই। অল্প কথায় নিঃস্বার্থ ক্রন্দন আর কুমীরের ক্রন্দনের মাঝে পার্থক্য বুঝাতে চেয়েছিলাম।

ম্যালা কথা বলে ফেললাম। কাঁদুন মন খুঁজে কোন সমস্যা নেই। এমন অদ্ভুত দেশে জন্মেছি আমরা যেখানে এক কান্নার দাগ মুছতে না মুছতেই অন্য কান্নার কারণ তৈরি হয়ে যায়। মিসরের জন্য কাঁদুন, সাথে সিরিয়ার জন্যও একটু কাঁদুন। হেফাজতের অবহেলিত অবুঝ শিশুদের জন্য কাঁদুন, সেইসাথে গোলাম আজমের ফাঁসি না হবার তীব্র অপমানেও একটু কাঁদুন।

বিশ্বজিৎ এর জন্য কাঁদুন, সেইসাথে বুয়েটের দীপের জন্যও একটু কাঁদুন। মতিঝিলে মৃত হেফাজতের কর্মীদের জন্য কাঁদুন, সেইসাথে ফটিকছড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা মানুষদের জন্যও একটু কাঁদুন।
পাশের বাড়ির কাজের বুয়ার মৃত্যুতে কাঁদুন, ভাইয়ের মৃত্যুতে কাঁদুন। তবে সেইসাথে মায়ের জন্যও একটু হলেও কান্না রাখুন। তবেই না হবে নিঃস্বার্থ ক্রন্দন।


সোর্স: http://www.sachalayatan.com/     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.