আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতীয়রা এখনও মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করে, পাকিস্তানীরা করে না



ভারতীয়রা এখনো বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করে। পাকিস্তানীরা করে না। বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ কে ভারতীয় বাহিনী কিভাবে শেষ সম্মান দেখিয়েছে , এই রিপোর্ট তার প্রমান । অথচ পাকি রা বীরশ্রেষ্ট মতিউর রহমানকে 'গাদ্দার' আখ্যায়িত করে অবমাননা করতে চেয়েছিল ! তার পরও কিছু বাঙালী ( পাকি বীজাক্ত),পাকিদের বন্দনায় ব্যস্ত ! ================================== দৈনিক ভোরের কাগজ ডিসেম্বর ১১, ২০০৭, মঙ্গলবার : অগ্রহায়ণ ২৮, ১৪১৪ আপডেট বাংলাদেশ সময় রাত ৩:০০ ------------------------------------- বীরশ্রেষ্ঠ ফিরলেন ------------------- এম ফিরোজ মিয়া, কুমিল্লা থেকে : স্বাধীনতার দীর্ঘ ৩৬ বছর পর দেশের মাটি স্পর্শ করলো স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় সৈনিক বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ। গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটায় বাংলাদেশ রাইফেলসের লে. কর্নেল নূরে আলম ও লে. কর্নেল আব্দুল মুকিম সরকার ভারতীয় বিএসএফ-এর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দেহাবশেষ গ্রহণ করেন।

দেশের মাটিতে এই বীর সেনানীর দেহাবশেষকে শ্রদ্ধায় জানা হাজার হাজার নারী-পুরুষ, ছাত্রছাত্রী, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। গতকাল সোমবার ভারতীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় ভারতের ত্রিপুরা সার্কিট হাউজে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করেন। এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার হাতিমারা ছড়ার আম্বাশা গ্রামের আব্দুল আলীর পারিবারিক কবরস্থান থেকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সামনে বীরশ্রেষ্ঠের দেহাবশেষ উত্তোলন করা হয়। বেলা সোয়া ১টায় ত্রিপুরার সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার কমল চক্রবর্তী ও সোনামুড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে আশ্চার্যের নেতৃত্বে ত্রিপুরা সার্কিট হাউস থেকে কফিনে করে বীরশ্রেষ্ঠের দেহাবশেষ বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয় এবং দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে ভারত সীমান্তের শ্রীমন্তপুরে এসে পৌঁছে। ভারতীয় বিএসএফ-এর ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি চৌকস দল যথাযোগ্য মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠের দেহাবশেষের কফিন গাড়ি থেকে নামিয়ে সুসজ্জিত মঞ্চে নেয়।

এ সময় ১০ সদস্যের বিএসএফ দল স্বাধীনতা সংগ্রামের এই বীরযোদ্ধাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করে। এরপর হামিদুর রহমানের দেহাবশেষে ভারত সরকারের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এদের মধ্যে ছিলেন ত্রিপুরার নগর চেয়ারপারসন শ্যামল চক্রবর্তী, বিএসএফ-এর সেকেন্ড কমান্ডিং অফিসার অবনী যোগী, সোনামুড়া পুলিশের এসডিএস অনিন্দ কুমার, কমল চক্রবর্তী, শ্রীমন্তপুরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ভুবন জাকির, সোনামুড়ার পুলিশ ইন্সপেক্টর অশোক পাল প্রমুখ। ভারতীয় সীমান্তে প্রায় ৩০ মিনিটের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ২টা ৪০ মিনিটে বিএসএফ বিডিআর-এর কাছে বীরশ্রেষ্ঠের দেহাবশেষ হস্তান্তর করে। ২টা ৪৩ মিনিট স্বাধীনতার ৩৬ বছর পর বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ দেশের মাটি স্পর্শ করে।

২টা ৫৫ মিনিট কুমিল্লা বিবির বাজারের কটক বাজার সীমান্ত থেকে যথাযথ মর্যাদায় ধীরলয়ে বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি চৌকস দল বিবির বাজার স্থলবন্দর তৈরিকৃত মঞ্চে কফিনটি নিয়ে আসে। এ সময় ১৪ ইস্ট বেঙ্গলের মেজর মোঃ পারভেজের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল দেশের মাটিতে এই বীরশ্রেষ্ঠকে গার্ড অফ অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। পরে সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার ও জিওসি মেজর জেনারেল আব্দুল হাফিজ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল কাশেম মাহবুব বীরপ্রতীক, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মনজুরুল রহমান, পুলিশ সুপার মীর শহীদুল ইসলাম পিপিএমসহ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বীরশ্রেষ্ঠের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে লে. কর্নেল মোঃ সফিউল আলম চৌধুরী বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন।

এ সময় বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ছোট ভাই ফজলুর রহমানসহ ৭ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিকাল পৌনে ৪টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ বিবিরবাজার স্থলবন্দর থেকে কুমিল্লা সেনানিবাসে মোটর শোভাযাত্রাসহ নিয়ে যাওয়া হয়। বিবিরবাজার স্থলবন্দর থেকে কুমিল্লা শহর হয়ে কুমিল্লা সেনানিবাস পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিমি দীর্ঘ রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, ছাত্র-ছাত্রী, আবাল বৃদ্ধ বনিতা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে হাত নেড়ে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কুমিল্লা সেনানিবাসে রাতযাপনের পর আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় দেহাবশেষ নিয়ে সড়কপথেই ঢাকার পথে রওনা হবে প্রতিনিধিদল। সচিব জানান, ঢাকায় আনার পর বীরশ্রেষ্ঠের দেহাবশেষ সরাসরি জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে নিয়ে যাওয়া হবে।

রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ সকাল সাড়ে ১০টায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুরের দেহাবশেষ গ্রহণ করবেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ওই সময় সেখানে ২১ বার তোপধ্বনি করা হবে। রাষ্ট্রপতির পর প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে শোভাযাত্রাসহ হামিদুরের দেহাবশেষ মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে নিয়ে আরেক বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সমাধির পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনঃসমাধিস্থ করা হবে বলে সচিব জানান।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.