আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইক্লোন সিডর: খাদ্য, পানি, কাপড়, বাসস্থানের হাহাকার

বিক্ষিপ্ত জীবন. . . কখনো হাসায় . . . কখনো কাদাঁয় . . . আবার কখনো নির্ভেজাল অন্ধকার ঘিরে ফেলে চারদিক থেকে . . .

তাফালবাড়ী, বাগেরহাট : সড়ক পথে বাগেরহাট দিয়ে তাফালবাড়ী পর্যন্ত গাড়ী নিয়ে যাওয়া যায়। এবারের সাইক্লোনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা সাউথখালি’র পাশের গ্রাম বা বাজার তাফালবাড়ী। সেখানে এই নিয়ে তিনবার যেতে হলো আমাকে। প্রথমবার অল্প স্বল্প ত্রান নিয়ে, দ্বিতীয়বার শরনখোলা ও সাউথখালি এলাকা নিয়ে লেখার প্রয়োজনে আর সর্বশেষ বা তৃতীয়বার হচ্ছে আজকে। আজকে গিয়েছিলাম সাইকোন সেল্টার ও স্কুলগুলো সম্পর্কে খোঁজ নিতে।

তাফালবাড়ীতে বসে কথা হয় সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। তাদেরই একজন আব্দুল জলিল ১৫ নভেম্বরের কথা স্বরন করেন এভাবে, আমরা বিভিন্নভাবে সরকারের সিগন্যালের কথা শুনেছিলাম। কিন্তু আগের মাসের সুনামি’র সিগন্যালের কথা মনে করে কেউ তেমন একটা গুরুত্ব সহকারে নেই নি। তারপরেও সাইক্লোন সেল্টারে যাই সাড়ে নয়টার দিকে। কিন্তু রেড ক্রসের স্থানীয় প্রতিনিধিদের তত্ত্বাবধানে থাকা সাইক্লোন সেন্টার দুটি তালাবদ্ধ ছিলো।

ফলে ভেতরে ঢুকতে পারিনি। অপর স্থানীয় বাসিন্দা আসাদ জানান, তাফালবাড়ীর সাইকোন সেন্টারটি তালাবদ্ধ থাকায় অনেকে মনে করেছিলো যে ঘুর্নিঝড় বোধহয় হবে না। তারপরও পাঁচ সাতজন দরজার কাছে বসে ছিলো। এরই মধ্যে রাত দশটার দিকে শুরু হয় তান্ডব। হঠাৎ পানির প্রচন্ড ধাক্কা আছড়ে পড়ে তাফালবাড়ীতে।

ভাসতে থাকে মানুষ। এরই মধ্যে সাইকোন সেল্টারের দরজা খোলার ব্যবস্থা করা হয়। ভাসতে থাকা মানুষ কেউ সাতরিয়ে আবার কেউ ভাগ্যের জোরে সাইকোন সেল্টারে আশ্রয় নিতে সম হয়। তবে সেসময় আমাদের চোখের সামনেই অনেককে ভেসে যেতে দেখেছি। তাদের বাঁচার আকুতি দেখেছি কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।

তাফালবাড়ী তথা সাউথখালি ইউনিয়নে নিয়মিতই ঢুকছে ত্রান। তবে সেটার সুষম বন্টন নেই। আমি অবাক হয়েছি বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ত্রানের বহর দেখে। উত্তরাঞ্চল যাদেরকে আমরা মঙ্গাক্রান্ত বলি তারাও ত্রান নিয়ে হাজির হচ্ছে দক্ষিনাঞ্চলে। এই দৃশ্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।

ঢাকাসহ বিভিণœ বিভাগীয় শহর থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে কিংবা শিক্ষার্থীরাও ত্রান বা নগদ টাকা এনে বিলি করছে। তবে এসব উদ্যোগ পুরোপুরি চাহিদা মেটাতে পারছে না। আর সুষম বন্টন ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলো সবার কাছে পৌছাচ্ছেও না। আর তাই অনেক এলাকাতেই মানুষ এখনো ত্রানের জন্য অপোয় আছে। অবশ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।

ছোট ছোট লঞ্চে করে অনেক এলাকায় ত্রান পৌছে দিচ্ছে তারা। আমার সাথে দুইজন জাপানী সাংবাদিক আছে। জাপানের "The Mainichi" সংবাদ পত্রে কাজ করে ওরা। ওদের পত্রিকায় আজকের প্রধান শিরোনাম "They lost everything"। সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শরনখোলা ও খুড়িয়াখালি এলাকার বর্তমান অবস্থা।

আজকে থেকে ঘুর্নিঝড় দুর্গতদের সাহায্যের জন্য ত্রান সংগ্রহও করবে উক্ত পত্রিকা। ছবি সৌজন্য: Aftenposten

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.