আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পোশাক শিল্পে অসন্তোষ ছড়াতে দেশী-বিদেশী ইন্ধন



গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে ইন্ধন দিচ্ছে কিছু এনজিও। এসব এনজিওর পেছনে রয়েছে রহস্যময় বিদেশী তহবিল। এছাড়া বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশে ঈর্ষাকাতর দেশগুলোরও ইন্ধন রয়েছে এসব শ্রমিকদের উসকে দেয়ার পেছনে। ঢাকা ইপিজেড ও রাজধানীর বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় সংঘটিত সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে এক গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, শ্রমিক অধিকারের নামে কিছু এনজিও গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত।

এর মধ্যে কিছু এনজিও আছে যারা বিদেশী এনজিওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসাবেও কাজ করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সেন্টার ফর সলিডারিটি ইউনিয়ন ও ন্যাশনাল গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন অন্যতম বলে সূত্রটি জানায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংগঠন আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার এ্যান্ড কংগ্রেস অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশন (এএফএলসিআইও) এসব সংগঠনকে নানাভাবে সহায়তা দিয়ে থাকে। উক্ত অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের প্রসারে ঈর্ষাকাতর কোনো কোনো দেশ পরিকল্পিত শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির মাধ্যমে সুবিধা নিতে চায়। এসব দেশ বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টায় নিয়োজিত এনজিওগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ নানাভাবে ইন্ধন দিয়ে থাকে।

তাদের এসব তৎপরতার ফলে বাংলাদেশের ইপিজেডসহ গোটা গার্মেন্ট সেক্টরে মাঝে-মধ্যেই অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রেতারা বাংলাদেশে ওয়ার্ক অর্ডার কমিয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য দেশের প্রতি ঝুঁকছে। সূত্র জানায়, ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে নির্ধারিত পরিমাণের শুল্কছাড় পেয়ে আসছে। জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) নামের এই সুবিধার ফলে বাংলাদেশের বার্ষিক সাশ্রয়ের পরিমাণ গড়ে ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এএফএলসিআইও বেশ কিছুকাল যাবৎ বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিলের জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে।

তাদের এই তৎপরতার পেছনেও পার্শ্ববর্তী একটি দেশের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। কিছুদিন আগে সংগঠনটি বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিলের জন্য ইউএসটিআর (ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেডস রিপ্রেজেনটেটিভ) দফতরে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে। মূলত তার পর থেকেই বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বিষয়ে আগামী ৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর দফতরে শুনানি রয়েছে। ওই শুনানি সামনে রেখে ইতিমধ্যেই বিজিএমইএ এবং বহুজাতিক কোম্পানী ইয়ংওয়ান করপোরেশনের পক্ষ থেকে পৃথক আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে।

কিন্তু ওই শুনানিকে সামনে রেখেই সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো এখানে শ্রমিক অসন্তোষ উসকে দেবার চেষ্টা করছে। সূত্র জানায়, জিএসপি সুবিধা বাতিল হলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর নতুন করে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তখন আন্তর্জাতিক ক্রেতারা ধীরে ধীরে বাংলাদেশ বিমুখ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের প্রায় ৭০০ গার্মেন্টস কারখানা কাজ না পেয়ে বন্ধ হতে বসেছে। ব্যাংকগুলোও এসব কারখানাকে ঋণ দিতে চাইছে না।

আর ঋণ না পেলে কারখানাগুলো আসন্ন ঈদ মৌসুমে শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন ও বোনাস দিতে পারবে না। তখন শ্রমিক অসন্তোষ আরো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত রাজনীতিকরা এই সম্ভাব্য শ্রমিক অসন্তোষের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরকারের ভিত নড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল ধারণা করছে। । ।

ইত্তেফাক : ২৪.০৯.২০০৭ । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.