আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা লিংকের তেলেসমাতি - ০১

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

বাংলাদেশের অন্যতম বড় মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক। বাংলালিংক এদেশে আসায় কলরেট ভীষণ কমেছে। বাংলালিংকের দেশ প্যাকেজটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমার লেখার বিষয়টি মূল বিষয় বাংলালিংক হলেও আমি মনে করি সমস্যাটি আমার ব্যক্তিগত। ২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আমি বাংলালিংকের একটি দেশ স্ট্যান্ডার্ড সিম কিনি।

দারুণ একটি প্যাকেজ। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই প্যাকেজটিতে টিএন্ডটি ইনকামিং সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে। এর আগে সমস্ত মোবাইল অপারেটর টিএন্ডটি ইনকামিংএর জন্য একটি ট্যারিফ ধরত। যাকগে, সিম কেনার পর আমার পরিচিত সবাইকে এসএমএস করে জানিয়ে দিলাম যে আমি নতুন সিম কিনেছি। তারা যেন এখন থেকে আমার নতুন নাম্বারে যোগাযোগ করে।

মাসখানেক এই নতুন সিম ব্যবহার করে বুঝলাম আমার মোবাইল ফোন বিল অনেক কমে গেছে। কারণ টিএন্ডটি ইনকামিং এর জন্য কোন বিল দিতে হচ্ছে না। সমস্যাটা শুরু হল দেড় মাস পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। হঠাৎ করে আমার ফোন বন্ধ। সবাই আমার টিএন্ডটি নাম্বারে ফোন করে বকাঝকা করে।

সবার প্রশ্ন, আমি কেন ফোন বন্ধ করে রেছেছি। আমি যথারীতি আমার কাগজপত্র নিয়ে বাংলালিংকের মতিঝিল কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে জানালেন, সিম হারিয়ে গেছে এ কথা বলে আমার নাম্বারের মূল কাগজপত্র দেখিয়ে সিম তুলে নিয়ে গেছে আরেকজন ব্যক্তি। তাই আমার সিমটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমার মাথায় হাত।

কাস্টমার কেয়ারের ভদ্রলোক বললেন, যেহেতু সিমটি নারায়ণগঞ্জ থেকে তোলা হয়েছে, তাই আমাকে আমার মূল কাগজপত্র সহ নারায়ণগঞ্জে তাদের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। পরদিন আমার কাগজপত্র নিয়ে নারায়ণগঞ্জে বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করলাম। তারা বলল, তারাই অন্য একজন দাবিদারকে সিম দিয়ে দিয়েছে। আমার সামনে তারা কয়েকবার সিম গ্রহণকারী ব্যক্তির নাম্বারে ফোন করল। ও প্রান্তে রিং হলেও কেউ ফোন রিসিভ করল না।

তারা আমাকে বলল আমি যেন দু তিন দিন পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করি। তারা আমার অন্য একটি মোবাইল ফোন নাম্বার ও অফিসের টেলিফোন নাম্বার রেখে আমাকে বিদায় করে দিল। সপ্তাহখানেক কেটে গেল। বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ার থেকে আমাকে কেউ ফোন করল না। আমি বুঝে ফেললাম, হয় তারা ভুলে গেছে, নয় তো কোন সমাধান করতে পারেনি।

যাই হোক, এক সপ্তাহ পরে আমি আমার মূল কাগজপত্রসহ তাদের সাথে যোগাযোগ করলাম। তারা জানাল, গত এক সপ্তাহ যাবৎ তারা বহুবার নতুন সিম গ্রহণকারী ব্যক্তির সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। কেননা তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ। আমি তাদের কাছে সিদ্ধান্ত চাইলাম।

তারা ঢাকায় তাদের বসের সাথে ফোনে কথা বলল। তাদের বস সিদ্ধান্ত দিল যে, সিমটির মালিক আমি। তাই আমাকেই তারা সিমটি ফিরিয়ে দিল। ৫০টাকা রিপ্লেসমেন্ট চার্জ রেখে তারা একটি নতুন সিম আমার নামে বরাদ্দ দিল। আর ওই ভদ্রলোকের সিমটি বন্ধ করে দেয়া হল।

আমি নতুন করে সিম পেলাম ২০০৬ সালের ২২ নভেম্বর। কিন্তু একই ঘটনা আবার ঘটেছে। গত ২৭ আগস্ট ২০০৭ তারিখে সকাল থেকেই আমার মোবাইল বন্ধ। আমি ভাবলাম মোবাইল ফোনটা অনেক পুরোনো হয়েছে। হয় তো সেটাই সমস্যা করছে।

বিকেলে আমার স্ত্রী আমার অফিসের টেলিফোনে কল দিল। সে জিজ্ঞেস করল যে, আমার মোবাইল ফোনটা কোথায় ? আমি জানালাম, মোবাইল ফোন আমার সাথেই আছে। সে আমার কথা বিশ্বাস করল না। বলল,‍‍তোমার নাম্বারে ফোন করে শুনলাম এক মহিলা ফোনে কথা বলছে। কোন মহিলাকে ফোনটা দিয়ে দাওনি তো ? স্ত্রীর এই প্রশ্নে আমি হতবাক।

বুঝলাম, আবারও আমার সিম অন্য কেউ তুলে নিয়ে গেছে। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.