আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ কি ভুমিকা বিশ্ব গণমাধ্যমের !!

Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার পলাতক আসামি বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায়ের পর দেশব্যাপী ঘৃণিত এই মানুষটিকেই মহান মানুষ হিসেবে পরিচিত করার প্রয়াস চালালো কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তানের কিছু সংবাদমাধ্যমসহ সুপরিচিত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি, রয়টার্স, এপি ও এএফপি এ প্রচারণা চালায়। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘বাংলাদেশ ক্লারিক আবুল কালাম আযাদ সেনটেন্সড টু ডাই ফর ওয়ার ক্রাইমস’। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একটি আদালত ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য একজন সুপরিচিত মুসলিম ধর্মপ্রচারককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এএফপি’র প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘টেলিভানজেলিস্ট টু হ্যাং ফর বাংলাদেশ ওয়ার ক্রাইমস’।

এতে বলা হয়, দেশটির বিরোধীদল বিএনপি ও জামায়াত এ মামলাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং প্রহসনমূলক বলে মন্তব্য করেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘ইসলামিক কারিক সেনটেন্সড টু ডেথ ফর বাংলাদেশ ওয়ার ক্রাইমস’। এতে বলা হয়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের মামলার প্রথম রায়ে বাংলাদেশের বিতর্কিত ট্রাইব্যুনাল একজন জনপ্রিয় ইসলামী টিভি উপস্থাপককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। বিরোধী দলগুলো এ বিচারকে রাজনৈতিক প্রহসন বলে মন্তব্য করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বাংলাদেশের প্রথম যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার খবরে বাচ্চু রাজাকারকে তারা অভিহিত করলো ক্লেরিক (Cleric) বা ধর্মযাজক হিসেবে।

ফরিদপুর শহরে শ্রীঅঙ্গন প্রভু জগদ্বন্ধু আশ্রমে পাকিস্তানি বাহিনী এনে প্রার্থনারত মহানাম সম্প্রদায়ের ৮ যাজককে হত্যায় সহায়তাকারী বাচ্চু রাজাকারকে কোন বিবেচনায় যাজক বলা হচ্ছে তা কিন্তু ব্যাখ্যা করে নি বিবিসি, রয়টার্স, এপি বা এএফপি। বাচ্চু রাজাকারের রায় কেন বিতর্কিত তারও ব্যাখ্যা নেই তাদের রিপোর্টে। রাজাকার পরিচয় ফাঁস হওয়ার কারণেই যে বাচ্চুকে টেলিভিশনের ‘ছওয়াল জবাব’ অনুষ্ঠান থেকে ছিটকে পড়তে হয় তা-ও এড়িয়ে গেলো এসব সংস্থা। উপরন্তু যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের ব্যাপারে তারা নিজেদের তদন্ত আছে বলে দাবি যেমন করেনি, তেমনি দেয় নি আগামীতে কোনো তদন্ত বা অনুসন্ধান করার ঘোষণাও। আর তাই সঙ্গত কারণেই খ্যাতনামা এই চার সংবাদ প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থান নানা প্রশ্ন ও বিতর্কের জন্ম দিলো।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বিশ্বমিডিয়ার এমন আচরণ তাহলে কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালে জামায়াতের আন্তর্জাতিক মিডিয়া লবিস্ট নিয়োগের প্রভাব? এ আশংকার পরিচয় মেলে বিবিসির প্রকাশিত খবরে। অজ্ঞাতপরিচয় বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হননি। ‘নিহতে’র সংখ্যা বড়জোর ৩ থেকে ৫ লাখ হতে পারে। অজ্ঞাতপরিচয় সমালোচকদের বরাত দিয়ে এ রায়কে বিবিসি যে উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলছে, উল্টোভাবে উল্টোভাবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি বিষয়ে তাদের এই খবর প্রকাশকেই উদ্দেশ্য প্রণোদিত বললে অত্যুক্তি হবে কি? বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন সংবাদসংস্থা বাংলানিউজের সুত্রমতে, গোয়েন্দা তথ্যে প্রকাশ ব্যাংকিং ব্যবসাসহ জামায়াত ইসলামীর বার্ষিক আয় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১০ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের কনসালটেনসি ফার্ম কেসিভি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গড়তে ২৫ মিলিয়ন ডলার বা ১৮২ কোটি টাকা অগ্রিম দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ দেয় জামায়াত।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপপ্রয়োগের জন্য করা ওই চুক্তিপত্রে সই তো করেন জামায়াতের খাজাঞ্চি হিসেবে পরিচিত মীর কাসেম আলী। ২০১০ সালের ১০ মে করা ওই চুক্তিতে কেভিসির পে জেনারেল কাউন্সেল অ্যান্ডু জে ক্যামেরস এর স্বারও তো পাওয়া যায়। ২০১১ সালের ৬ অক্টোবর কাসেম আলীকে লেখা এক চিঠিতে কেভিসির আন্তর্জাতিক কার্যক্রমবিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্ট অ্যামোস জে হোসস্টাইন উল্লেখ করেন, তার (কাসেম) স্বার্থরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.