আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কারওয়ান বাজার মিডিয়াপল্লীতে ঢাকার থুক্কু জাতীয় উন্নয়ন ভাবনা

ট্রুথ নট সেইড টুডে, কুড টার্ন টু আ লাই টুমোরো সম্প্রতি পুরকৌশলী কাম সম্পাদক আনিসুল হকের কলাম মারফত জানতে পারলাম, নয়নাভিরাম ল্যান্ডমার্ক হাতিরঝিল নাকি ঢাকাই কবি সমাজে ব্যাপক ভাবালুতা সৃষ্টি করেছে। রঙ্গিন বাতি আর টলমল জলরাশির বিবরণ দিয়ে লেখক বলেছেন- 'ইহাই ঢাকা শহর। গরবে বুক ফুলিয়া যাইতেছে। মাথা উঁচু হইয়া যাইতেছে। ' ফকরুদ্দীনের সরকার জিন্দাবাদ, হাসিনার সরকার জিন্দাবাদ, (নব্য ঠিকাদার) সেনাবাহিনী জিন্দাবাদ।

লেখক বলেছেন এই প্রকল্পের বিশাল সাফল্য দেখে তার স্পর্ধা বেড়ে গেছে। এইবার ঢাকা থেকে যানজট দূর করতে হবে। ফ্লাইওভার-রেল-নৌপথ সব এস্তেমাল করা লাগবে। অতি উত্তম প্রস্তাব বীরবল। ঢাকায় গোড়া স্থাপন না করলে কবি যশ জোটে না।

সচেতন সুশীল সমাজে নাম লেখানো যায় না। যানজটের কারনে নুতুন গাড়ির গতিপরীক্ষা হয় না। শত কোটি টাকার ফ্লাইওভার, ল্যান্ডমার্ক না থাকলে মেলবোর্ন-সিঙ্গাপুরের সাথে পাল্লা হয় না। যেন ঢাকার বাইরের আটষট্টি হাজার গ্রামের মানুষের কোন অধিকার নাই। তাদের কাজ হাত পাখা ঘুরানো, কাদা-মাটি ভেঙ্গে ভ্যান চালিয়ে হাটে যাওয়া ও ক্ষেতে খামারে খেটে বাম্পার ফলন ফলানো।

তাদের পাকা রাস্তার দাবি মাত্র কয়েক লক্ষটাকার জন্য এম্পি হোস্টেলের দেয়ালে বাড়ি খেয়ে ফেরত আসে। ঢাকার অবারিত সুখ সাচ্ছন্দ্য শেয়ার করতে গ্রামবাসী মাঝে মধ্যে রোগে শোকে মঙ্গায় ঢাকায় এসে লাল-নীল বাতি দেখবে, সেটাই অনেক। সবচেয়ে ভালো হয় জমিজিরাত রেখে মালেশিয়া সৌদি গিয়ে হাড়গোড় পাস্পোর্ট জমা দিয়ে কাড়ি কাড়ি রেমিটেন্স পাঠালে। ওতে অর্থমন্ত্রীর সাফল্য অর্জিত হয়, ঢাকাবাসির ফুটানি করার পয়সা মেলে। বেশ তো নাগরিক চিন্তা আপনাদের।

ম্যাডাম এসে ১৩০০কোটি টাকার তিলোত্তমা ঢাকা দিয়েছিলেন। ঢাকাবাসীর পায়ে ভেট না দিলে ভোট পড়বে না, ক্ষমতায় থাকাও যাবে না। কারন ওখানে আছে দেশের নার্ভসেন্টার কারওয়ান বাজার মিডিয়া পল্লী। উজির-নাজির-মডেল-ব্যবসায়ী-নব্য নটি- পুরাতন জোকার সবাইকে ঢাকাই নাগরিক সমাজের মই বেয়ে সাফল্যের শিখরে উঠতে হবে। ঢাকার এক এক রাস্তার দুধারে যত বিশ্ববিদ্যালয় ও জ্ঞানচর্চা হয় তার তুলনা দেশের অন্য কোথাও দূরের কথা, বিদেশেও দেখি না।

মাঝে মাঝে মনে হয় ওসব রাস্তা দিয়ে যারা নিয়মিত যাতায়াত করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন তাদেরও একটা ডিগ্রী দেয়া উচিৎ। বাংলাদেশের সমস্ত সম্পদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রন আর অধিকার আগে করাচি-ইসলামাবাদের ছিল, এখন ঢাকার। স্বাধীনতার চেতনাও ঢাকায় পুঞ্জিভূত আছে, যেন ঢাকা-ভিন্ন বাকি গ্রাম দেশ যুদ্ধ করে নাই? স্বাধীন বাংলায় তাদের অধিকার নাই? অধিকার নাই জেনেও ইঞ্জিনিয়ার-সম্পাদক সাহেবের কাছে অনুরোধ করবো- অন্তত সহস্রাধিক গার্মেন্টসগুলো ঢাকার বাইরে সরিয়ে দেবার প্রস্তাব দিন। ঢাকা থেকে লেক্সাসে চড়ে অফিস করতে কি খুব কষ্ট হবে গার্মেন্টস মালিকদের? শুনেছি তারা কানাডা আমেরিকায় থেকে ব্যবসা পরিচালনা করেন। ঢাকা থেকে গার্মেন্টস কারখানা সরালে আপনাদেরই শান্তি বাড়বে।

গরীব খেটে খাওয়া গার্মেন্টস কর্মীদের ঢাকার নাগরিক হবার বেহুদা গর্বের প্রয়োজন নাই। খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারলেই তারা খুশি। ----------------------- লেখাটি পলিটিকালি কারেক্ট বেডটাইম স্টোরি সিরিজের অংশ। ফেইসবুকে প্রকাশিত ডেভিলস এডভোকেট ফরহাদ মাজহারঃপলিটিকালি কারেক্ট বেডটাইম স্টোরি-৯ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.