আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেটামরফসিস অ্যাট বাঙলা কলেজ (১)

ভস্ম হই। মৃত্যুর চুমু আমার কপোল ছুঁয়ে যায়। বেঁচে উঠি আবার। নতুন দিনের আশায়। বেঁচে উঠি বারবার।



(ইচ্ছে ছিল ছুটির দিনে উপন্যাসটা লিখি। কিন্তু বব ডিলান শুনতে শুনতে, বৃষ্টি বৃষ্টি আবহাওয়ায় নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। উপন্যাস রাতে লিখব। এখন এটা লিখি। ব্লগের রাজনীতির লেখার মাঝে আমার লেখা বেমানান।

তবু লিখি। ) সরকারী বাঙলা কলেজে আমার সবচেয়ে বেশী পরিবর্তন হয়েছে। স্কুলে আমি ছিলাম নার্ডি পড়ুয়া টাইপের বোকাসোকা একটা ছেলে। কলেজে উঠে সেই খোলশটা ছাড়ানোর সুযোগ পেলাম। মেটমরফসিস বোঝাতে আগের কিছু কথা বলা দরকার।

ব্যাপারটা নিজের ঢোল নিজে পেটানোর মত শোনাবে। অসহনশীল মানুষকে ঠিক এ জায়গা থেকে বিদায় নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি। তবু ঘটনার প্রয়োজনে বলি। আমার নার্ডি রূপটা আসলে দশম শ্রেণীতে প্রেমের পড়ার আগ পর্যন্ত বহাল ছিল। চিটাগাং কলেজিয়েট স্কুলে ঢুকি নবম শ্রেনীতে।

তো আমার পরিচিত জনের কাছে আমি ছিলাম এক আইডল ধরনের। আশেপাশের পোলাপাইন আমার কাছে আসত পরামর্শ টর্শ চাইতে। স্বভাবতই এট্টু ভাবে থাকতাম। তখন প্রচুর প্রচুর বই পড়তাম। আমার পড়ার গতি ছিল ভয়াবহ।

তাই গোগ্রাসে গিলতাম সব কিছু। আমার বন্ধু বান্ধব ছিল সেই ধরনের, নার্ডি টাইপের। দশম (কিংবা নবম) শ্রেনীতে প্রেমে পড়ার পর টের পেলাম আই এম নো গুড এস এ ড্যাশিং লাভার। সেই থেকে পড়া লেখা ছেড়ে ড্যাশিং হিরো হবার চেষ্টা। এইটাকে আমার পরিবর্তন না বলে একটা চেষ্টা বলা যেতে পারে।

বলা বাহুল্য কৈশোরের সে প্রেম কখনই সফল হয়নাই। টেস্ট পরীক্ষার আগে আগে সর্তক হয়ে গেলাম। টেস্টে আমাদের সেকশনে প্রথম হলাম এবং অন্যান্য সেকশনের মধ্যেও ভাল স্থানেই ছিলাম। তার আগের ব্যাচেই আঠারো জন স্ট্যান্ড করেছিল বলে আমাদের উপর অগাধ আশা ছিল তাদের। কলেজিয়েট স্কুলে বরাবরই ছাত্রদের বেসিকের উপর জোর দেয়।

আমার বাবা ছিলেন আরেক কাঠি উপর। তাই আমার বেসিক স্ট্রং করার প্রচুর চেষ্টা করা হলেও আমার কখনই ৫০০ প্রশ্ন ব্যাঙ্ক মুখস্ত থাকত না। নিজেকে জ্ঞানী ভেবে কখনও চেষ্টাও করি নাই। ফলাফল যা হবার তাই হল- প্রতিটা অবজেকটিভে আমার ৩০-৩৫ এর বেশী নম্বর ছিল না। প্রশ্ন ব্যাঙ্কের সেই শেষ স্বর্ণালী বছরে আমি নম্বর খরায় আক্রান্ত হয়ে মেট্রিক পাস করলাম - স্ট্যান্ড তো দুরের ব্যাপার।

এছাড়া অবশ্য অন্যান্য ছোটখাট কারনও ছিল - কিন্তু সেগুলো উল্লেখ করে গল্পের মূল পয়েন্টটা নষ্ট করতে চাই না। যেটা ঘটল সেটার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। কলেজ ভর্তি গুলো হল সব নাম্বারের ভিত্তিতে। তাই আমার পছন্দ লিমিটেড হয়ে পড়ল। আমার বাবা কার সাথে যেন কথা বলে দেখলেন এক সরকারী কলেজে পড়লে ট্রান্সফার করা সম্ভব হয় আরেক সরকারী কলেজে।

সে লোক কি কি সব আশ্বাসও দিল আব্বাকে। তাই আমি ভর্তি হলাম বাঙলা কলেজে। বলা বাহুল্য সেই লোক কখনও তার আশ্বাস রাখেননি। (পরের পর্বে থাকবে আমার প্রতি সবার দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন এবং আমার উপলব্ধি)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।