আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনাদের পাড়ার রাজাদা (কাহিনি - ২)



শ্রীনিবাসদা পাড়ার উচ্চারণে 'চিনিদা' হয়ে গিয়েছিলেন অনেক আগেই। একবার তিনি আমাদের পাড়া থেকে পৌরসভা নির্বাচনে দাড়িয়ে লালেদের (বামপন্থী) কাছে হেরে যান। রাতে চিনিদার কিছু পোষ্টার সেটে দিয়ে আমরা আগেই একটা ক্রিকেট সেট আদায় করে নিয়েছিলাম। লালদের কাছ থেকে একটা ফুটবলের আশ্বাস পেয়েছিলাম। হেরে যাওয়ার পর আমরা আর চিনিদার বাড়িমুখো হইনি।

আমরা 'চিনিতঙ্কে' ভুগতে লাগলাম আর চিনিদা 'লালাতঙ্কে'। আমাদের কারো কাছে লাল রঙের কোনো জিনিস সেটা, কলম, জামার বোতাম, জামা, জুতো,যাইহোক না কেনো দেখা গেলে চিনিদার হাত থেকে নিস্তার নেই। আমাদের মধ্যে কুমুদ মাঝে মাঝে পান চিবোত- চিনিদার ভয়ে ছেড়ে দিল। আমার মেজদা 'বাটা'য় চাকরী করতেন। তখন বাটার পাওয়ার গ্রুপ স্পোর্টস গুডস তেরী করতো।

মেজদা পাওয়ারের একটা লাল গেঞ্জী আমাকে দিয়েছিলেন। একদিন বিকেলে সাদা প্যান্টের ওপর লাল গেঞ্জীটা পরে,চুলে টেরী কেটে পাড়ার মেয়েদের একটু ভরকি দিতে বেড়িয়েছি পরবিতো পর একেবারে চিনিদার সামনে। আমার গেঞ্জীতো প্রায় ছেড়ে ছেড়ে। অনেক কষ্টে হাতেপায়ে ধরে গেঞ্জী প্যাকেটে পুরে খালি গায়ে বাড়ি ফিরলাম। এসেই সোজা রাজাদার কাছে।

রাজাদা সবশুনে বলল ঘাবড়াসনে, পরের ঘটনা রাজাদার কাছে শোনা। রাজাদা সন্ধ্যেবেলা চিনিদার বাড়ীতে গিয়ে হাজির। বৌদি (চিনিদার স্ত্রী) স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। বার্ষিক পরীক্ষার খাতা দেখে লাল কলম দিয়ে মার্কিং করছিলেন। রাজাদা বৌদিকে বললেন, লাল কলম দিয়ে মার্কিং চলবেনা।

পাড়ায় কেউ লাল রঙ ব্যবহার করতে পারবেনা- এটা চিনিদার ফতোয়া। কোন বিবাহিতা মহিলা সিঁদুর ব্যবহার করতে পারবেনা এটাও চিনিদার ফতোয়া। রাজাদা চিনিদাকে বললেন, চিনিদা আপনি নিজের হাতে বৌদির সিঁদুর মুছে লাল হঠাও অভিযান শুরু করুন। বৌদি চিনিদাকে শুধু জুতোতে বাকী রেখেছিলেন। অবশ্য মেজদাকে বলে রাজাদার জন্য একটা লাল গেঞ্জির ব্যবস্থা করতে হয়েছিল।

চিনিদা আবারও নির্বাচনে দাড়ান এবং হেরে যান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.