আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিজেই যখন পন্য-2

এখানে নীল জল টলমল করে,এখানে নীলের ছায়া পড়ে

লাস ভেগাস ঘুরে ঘুরে আমার বেশ কিছু বিষয় নজর কেড়েছে। তাদের সুরম্য হোটেল বা তাদের এন্টারটেইনমেন্ট গুলো যদি বাদ ও দেই, সেখানে দেখার মতো যে বিষয় টা সবাইকে আগ্রহী করবে তা হলো মানুষ। হারেক রকম, হরেক বয়সী মানুষ। একটা রাস্তা, স্ট্রিপ, তাকে ঘিরে এতো এতো মানুষের আনা গোনাএই রাস্তার বাইরে সাধারন বসতিতে তো কোন ভীর নেই। যত ভীড় সব এখানে এসে থেমে গিয়েছেএটাকে কেন্দ্্র ধরলে পরিধি থেকে মানুষ জন এসে জমা হচ্ছে এই জায়গায়।

টানা চার দিন সেই রাস্তায় এমাথা ওমাথা হেটেছি,সন্ধ্যার পর গাড়ি তে করে বের হওয়া বোকামী। সস্তা বাস পাস, 5 ডলারে 24 ঘন্টা। যখন মানুষ ক্লান্ত হয়ে যায় আর পা চলে না তখন বাসে উঠে। গায়ে গায়ে মানুষ, তবু কেউ কারো গায়ে ধাককা লাগে না। সাদা -কালো, এশিয়, ইউরোপিয়ান, এমেরিকান ঝাকে ঝাকে মানুষ।

সবাই দল বাধা। কারো পরিবার সাথে, কেউ এসেছে বন্ধুদের সাথে,কেউ বা তার প্রেমিকা বা স্বামীর সাথে। বিভিন্ন হোটেল গুলোতে একা একা ঘুরতে গিয়ে প্রায় ই প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়েছে- বিবাহিত? স্বামীর সাথে এসেছো? বা লিভ টোগেদার, তোমার পার্টনারের সাথে, ? টাহলে বেশ কিছু ডিল আছে তাদএর জন্য....ঐ গুলো গছায়ে দিবে। এতো না শুনে বেশ অবাক হয়। মনে করে এই কোন পাগল।

এই পাগল ঘুরতে ঘুরতে মানুষ দেখে তা তো বলা যায় না। আর ও সুযোগ পেয়ে যাই যখন এয়ারপোর্ট এ গিয়ে দেখি ফ্লাইট কেনসেল। 3দিন লটকায়ে থাকতে হবে ওখানে। হাজার হাজার মানুষ বসে আছে। কত মানুষের সাথে কথা হলো।

সবাই ঘুরতে এসেছে। সেই থুর থুরে বুড়া বুড়ি থেকে নিয়ে 17-18 বছরের বালক বালিকা। কেউবা তাদের বাবা মায়ের সাথে। অনেক কথা হলো, অনেকের সাথে। এই শহরে এখন যদিও সববয়সী আর রুচির মানুষের কথা চিন্তা করেই হোটেল গুলো বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করে , তার পর পরও এি শহরের মূল আকর্ষন সেই চিরায়ত জুয়া, মদ,আর নারী।

পরিবারের সাথে যারা আসে তাদের কথা বাদ দিয়ে শুধু যদি 18 এর উপর বয়েসী যারা বন্ধু বা প্রেমিকা সাথে নিয়ে এসেছে তাদের কথা ধরি তা হলে বলতে হয়, ষেখানে ছেলে মেয়ে প্রায় অর্ধেক অর্ধেক। এই মেয়ে গুলো এসেছে তাদের বন্ধু, বা প্রেমিকের সাথে। তারাও জানে তারা এখানে কি ধরনের শো দেখবে। এি এডালট শু গুলোতে কতটা নারী প্রদর্শনী হয় তাও তারা জানে। আমার খুব অবাক লাগে, তাদের পার্টনার রা না হয় মেয়েদের এই সব দেখে উত্তেজনা অনুভব করে, কিন্তু মেয়েটা? সে কি অনুভব করে?সে কেন যায়?সে কি তাহলে যায় শিখতে, আর ছেলেটা যায় উপভোগ করতে?মেয়েটা কি নিজেকে সেই ভাবে নিজেকে তৈরী করতে চায়, যেমনটা দেখে তার পার্টনার একই রকম ভাবে উপভোগ করবে? খুব অবাক হলাম।

এতো এতো মেয়ে দেখে একটা বিষয় স্পস্ট হলো, এখনও মেয়েদের নিজেদের পছন্দ অপছন্দ তৈরী হয় নি। বিশেষ করে পার্টনারের প্রতি এই ক্ষেত্রে তাদের তেমন চাহিদা নাই। বা স্বপ্ন নাই বা কল্পনা নাই। এই বিষয়টা তারা তার সঙ্গির উপর ই ছেড়ে দিয়েছে। এখন ও তারা সঙ্গির পছন্দ যেভাবে সেভাবেই সাজাতে পছন্দ করে।

কিন্তু এই বিশেষ ক্ষেত্রে তারা তাদের সঙ্গি কে কিভাবে চায় ,কিরকম দেখতে চায় তা ণিয়ে তাদের কোন ব্যাক্তিগত ধারনা নেই। তাই তার সঙি তার সাথে বসে অন্য মেয়ের শরীর নাচানো দেখে সেও আপ্লুত হয়। এই 50% মেয়ের জন্য সমহায়ে ছেলে প্রদর্শনী আয়োজন হয় না যেমন টা হচ্ছে বাকী 50% ছেলের জন্য। এই প্রদর্শনী কে যদি বলি নারী পন্য, তবে বলব এই নারী পন্যের ক্রেতার অর্ধেক নারী। যেদিন নারীর ছেলেদের শারীরিক গঠন, উপস্থাপন নারীর কাছে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠবে সেদিন এই নারী পন্যের পাশা পাশি পুরুষরাও পন্য হয়ে উঠবে।

অনেক ছেলেকেই প্রেমিক হয়ে উঠার পর বেশ সাজগুজ করতে দেখা যায়,কারন প্রেমিকা তাকে সেভাবে দেখতে পছন্দ করে, এখনকার ছেলেদের ফ্যাশান হাউজ গুলোও কিন্তু ভাল ব্যাবসা করছে। ছেলেদের কসমেটিকস এর ও কমতি নেই। সেই সব পণ্যের কমার্শিয়ালে ছেলেরা পন্য, নারী উপভোগকারী। আর ও হবে...........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.