আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এদেশে থাকি

অসম প্রতিযোগিতা এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা হওয়া সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিপণন ও গ্রাহক সেবার সুবিধার্থে একখানা গাড়ী নামিয়েছিলাম রাস্তায়। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জ্বালাতন আর জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির নিয়ত আতঙ্কে এই গাড়ী নিয়ে এখন ত্রিশঙ্কু অবস্থা। কারণ বছরের শুরুতেই ফিটনেস, ইনস্যুরেন্স, ট্যাক্স, ভ্যাট ইত্যাকার বাবদ বিশাল অংক পরিশোধ করার পরেও রাস্তায় নিত্যকারের যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে। পথের শৃঙ্খলা আনয়নের চেয়ে বিভিন্ন যানবাহনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ত্রুটি অনুসন্ধানই যেন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রধানতম কাজ। ঢাকা শহরে যারা দুর্ভাগ্যক্রমে কোনো ধরণের বাহনের মালিক হয়েছেন তারা জানেন এব্যাপারে।

যখন তখন হাতের ইশারায় গাড়ি থামানো এবং কাগজ পত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোনো ত্রুটি ধরা নাপড়লে শেষে গাড়ীর নাট-বল্টু পর্যন্ত ঘাটাঘাটি শুরু করে দেন সার্জেন্ট মহোদয়গণ। কারণ হাতে একখানা 'দন্ড পুস্তিকা'। ওটার সদ্ব্যবহারতো অন্তত করা চাই! আর ঐ পুস্তিকা ভীতিই গাড়ীর মালিক বা চালকদের সার্জেন্ট মহোদয়গণের পকেটের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে থাকে। কেননা সার্জেন্টরা যেকোনো অজুহাতে আপনাকে একটা মামলার রশিদ ধরিয়ে দিতে পারে। এরপর আপনাকে নুন্যতম দুইশত টাকা গোনা সহ বিভাগীয় দপ্তরে হাজির হয়ে লম্বা লাইন দিতে হবে।

আর জরিমানা মাফ করাতে চাইলেতো কথাই নাই! কিছুদিন পূর্বে ঢাকার ব্যস্ততম রাস্তায় এক সুদর্শন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা পশ্চিমি ভঙ্গিমায় হাত তুলে সরবরাহের কাজে নিয়োজিত গাড়ীটি থামিয়ে দিলেন। আণুবীক্ষণিক দৃষ্টিতে সকল কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চালককে বললেন, এই কাগজে গাড়ী চালানো যায়না। আমি এগিয়ে গিয়ে আর কি কাগজ চাই জিজ্ঞেস করাতে বললেন, সেটা বিআরটিএ'র কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন। আমি বললাম, এর বাইরে বিআরটিএ'র আর কোনো কাগজাদি নাই। এরপর উনি আমাকে বললেন, আপনি চাকরি করে কোম্পানির জন্য এত কথা বলছেন কেনো? আমি কোম্পানির মালিক পরিচয় দেবার পর উনি ততোধিক রুষ্ট হয়ে দায়িত্ব পালনরত সরকারী কর্মকর্তার সাথে তর্ক করা যায়না বলে সতর্ক করলেন।

ব্যবসায়ীক নানান প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকুলতার সম্মুখীন হওয়ার পর আমার মত হয়তো অনেকেই রাস্তায় গাড়ী চলাচল সংক্রান্ত ব্যাপারেও নিত্য-নৈমিত্তিক অভিজ্ঞতালব্ধ হচ্ছেন। এইতো সেদিন! একজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা গাড়ী ও কাগজপত্র সংক্রান্ত কোনো ত্রুটি নাপেয়ে নগদ নারায়ণে ইতস্তত হলেন। তারপর নিজ গৃহে ব্যাবহারের জন্য কিছু বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতির আবদার করে বসলেন। সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিনিধি এবং চালক তাদের অপারগতা প্রকাশ করলে সে মালিক পক্ষের ব্যক্তিগত নম্বর সংগ্রহ সহ পরবর্তীতে যোগাযোগ করতেও কুণ্ঠিত হন নাই! চারিপাশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্র যন্ত্রের চাঁদাবাজি এবং নিয়মের শৃঙ্খলে অনিয়মের এই সবকিছু দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, কেনইবা জন্মেছিলাম এদেশে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.