আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতারক ৪ (ধারাবাহিক ওয়েস্টার্ন গল্প)

timursblog@yahoo.com

আজ শেষ পর্ব । ভাল লাগলে আরো দেব । (আগের পর্ব দ্রষ্টব্য) 'গোটহেড পাসটা ভুতুড়ে বলে লোকে । অনেক খুন খারাবীও হয়েছে এখানে । আমি জানিনা ঠিক কী ধরনের বিপদ হতে পারে ।

আমার মন বলছে বিপদ আছে এখানে । ' গোটহেড পাসের খুব কাছে চলে এসেছে ওরা, সামনে বাঁয়ে দেখা যাচ্ছে গোটহেড ক্লিফ, এইখানে এসে ঘোড়ার গতি বাড়িয়ে টেটামের ঠিক পাশে এসে গেল উইন্টার, হাতে উঠে এসেছে হ্যামার তোলা কোল্ট .৪৪ । পিস্তলের নলটা টেটামের পাঁজরে চেপে বলল চাপা গলায় 'টুঁ শব্দ না করে ঘোড়া থেকে নামো । ' রাশ টেনে ঘোড়া থামিয়ে অবাক চোখে ওর দিকে চাইল টেটাম 'তোমাকে নিরাপত্তার জন্য নিয়ে এলাম, আর তুমি আমার ক্ষতি করতে চাইছ যেন চোদ্দশো ডলার পেয়ে মন ভরেনি তোমার !' 'চোপ! চোরের মায়ের বড় গলা! যা বলছি তাই কর, নেমে কোট খুলে গানবেল্টটা খোল । ' উপায়ন্তর না দেখে আদেশ পালন করল প্রাইস টেটাম ।

'হ্যাটটাও খোল, হ্যাঁ এবার জিনিস তিনটে আমার দিকে ছুঁড়ে দাও' নিজের কোট আর হ্যাটও খুলে ফেলেছে মার্শাল । টেটামের কোট আর হ্যাট গায়ে চাপিয়ে নিজেরগুলো ছুঁড়ে দিয়ে বলল 'এসব পরে আমার ঘোড়ায় চাপো, আমি চড়ব তোমার ঘোড়াটায় । ' বিড়বিড় করে গাল বকতে বকতে মার্শালের ঘোড়া ক্যাননবলে সওয়ার হল টেটাম । চাঁদের আলোয় এখন দূর থেকে কেউ কালো কোট আর উঁচু টপ হ্যাটে শাদামুখো রোয়ান ঘোড়ায় সওয়ার উইন্টারকে দেখলে টেটাম বলে ভুল করবে । 'এবার আগে বাড়ো' বলে রোয়ান ঘোড়ার লাগাম ধরে মৃদু ঝাঁকুনি দিল মার্শাল ।

গোটহেড পাসে ঢোকার মুখে হঠাৎ শিষ দিয়ে উঠেছিল টেটাম, কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা ভেবে থেমে গেল । 'ও, এই তাহলে সংকেত!' টিটকিরি দিয়ে উঠল 'প্রাণে বাঁচতে চাইলে একদম মুখ বুঁজে থাকো । ' একটা চোখ বাঁদিকের গোটহেড ক্লিফের ওপর, স্পষ্ট একটা কিছু নড়তে দেখল মার্শাল, কিন্তু নিরাপদেই পার হয়ে গেল ওরা পাসটা । কোন আততায়ীর বুলেট ছুটে এলনা । ভুঁরু কোচকাল মার্শাল ।

একট কিছু বাদ পড়ে যাচ্ছে, বিদ্যুতচমকের মত চিন্তাটা মাথায় খেলল তার । টপহ্যাট! উঁচু টুপিটা নিশ্চয়ই ঘাপটি মেরে বসে থাকা স্নাইপারের কাছে শত্রু-মিত্র ফারাক করার জন্য! একটানে টপহ্যাটটা খুলে স্যাডল হর্নের ওপর রেখে টেটামের দিকে চাইল । টেটামকে দেখে মনে হচ্ছে কাঁকড়া বিছে কামড়েছে ওকে 'না! না! গুলি করনা প্লিজ!' অদৃশ্য আততায়ীর উদ্দেশ্যে চেঁচাল সে । কিন্তু চিৎকারটা পুরো গলা থেকে বের হল না, তার আগেই কড়াৎ করে গর্জে উঠল একটা রাইফেল । গুলি খেয়ে জিন থেকে ছিটকে পড়ে গেল টেটাম প্রাইস, গুলির শব্দে চমকে গিয়ে ক্যাননবল ছুটে গিয়ে রোয়ান ঘোড়াটার পাশে চলে এল , আরোহীকে মাটিতে ফেলে রেখে ।

রোয়ান ঘোড়াটা থেকে নেমে নিজের ঘোড়ার পাশে দাঁড়াল উইন্টার । তীক্ষ্ন চোখে ক্লিফের দিকে তাকিয়ে আছে সে, ক্লিফের ঢাল বেয়ে নামছে অজ্ঞাত আততায়ী । 'চিৎকার করলে কেন তুমি?' জিগ্যেস করল সে । 'হারামী মার্শালটা মরুক চাওনা তুমি?' এখনও উইন্টারকে টেটাম ভাবছে সে, রাইফেলটা বাঁ হাতে ধরা তার । 'কনরাড পেইটন, রাইফেলটা ফেলে দাও ।

' 'উইন্টার ?!?' 'হ্যাঁ, "সুখী মানুষ" আমি । বলেছিলাম না সব আপেলেই পোকা থাকে, দেখা যায় আগে কিংবা পরে? এখন রাইফেলটা ফেলবে তুমি? নাকি ওটা নিয়ে ডুয়েল লড়ার ইচ্ছা আছে তোমার ? 'ঠিক আছে' হতাশভাবে বলল পেইটন । 'আমি জানি কখন হেরে গেছি আমি' বলে আস্তে করে রাইফেলটা হাত থেকে ছেড়ে দিল । কিন্তু ওটা মাটিতে পড়ার আগেই যেন যাদুমন্ত্রের মত একটা ডেরিঞ্জার উঠে এল পেইটনের ডান হাতে । কাল বিলম্ব না করে কোল্টের ট্রিগার টানল উইন্টার, কিন্তু একটু দেরি হয়ে গেছে! ডেরিঞ্জারের মুখে আগুনের হলকার সাথে সাথে মাথার একপাশে হাতুড়ির বাড়ির মত আঘাত অনুভব করল উইন্টার ।

কোনমতে ঘোড়ার জিন আঁকড়ে ধরে মাটিতে পড়ে যাওয়া ঠেকাল সে । মাথাটা একটু পরিস্কার হলে তাকিয়ে দেখল, মাটিতে চিৎ হয়ে পড়ে আছে কনরাড পেইটন । মিনিট পনের পরে ডক বোগাননের স্যালুনে টলতে টলতে ঢুকল উইন্টার, রক্তে ভেসে যাচ্ছে তার মুখের একপাশ । 'ডক, তোমার ডাক্তারি বিদ্যাটা এবার একটু জাহির কর । ' দীর্ঘশ্বাস ফেলল ডক 'এই হাতুড়ের কাছে এলে শেষ পর্যন্ত? খতম করেছো ওই খুনে জোচ্চোর দুটোকে?' মাথা নাড়ল লী ।

টুপিটা খুলে ক্ষতটা পরখ করল ডক, 'চাঁদি ছিলে দিয়ে গেছে, কিন্তু জব্বর শক্ত তোমার মাথার খুলি !' মন্তব্য করল সে । দ্রুত অভ্যস্ত হাতে পট্টি বেঁধে দিল সে ডকের মাথায় 'সত্যিই তোমার নামে একটা চিঠি এসেছে মার্শাল । চিঠিটা খুলল লী, ফোর্ট ডিক্সন থেকে কমিশনার হিউগো ল্যান্ডার্সের লেখা । 'প্রিয় লী, সাবধানে থেকো, খুনে বাটপাড়দের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে একদল লোক আইন নিজের হাতে নিতে বেরিয়ে পড়েছে । কোন মানুষের চেহারা পছন্দ না হলেই ওরা সটান ঝুলিয়ে দিচ্ছে গাছে ।

সাহায্যের প্রয়োজন হলে ফোর্টে খবর দিও --এইচ. ল্যান্ডার্স । 'এবার বোঝা গেল, শহরে এত লিঞ্চিং হচ্ছে কেন!' অবাক গলায় বলল লী । 'ভাবনা নেই. দুটো মড়াখেকো শকুন তো গেছে, আগেও তো হয়েছে এমন । ল্যান্ডার্স আর শহরবাসীর সহযোগিতায় সব সামলে নেব !' -শেষ-


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।