আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারো শিবির-ছাত্রদলের উস্কানি

ইসু্যভিত্তিক আন্দোলন

মতা ছাড়ার পর বিএনপি ও জামাত মড়িয়া হয়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা হামলা চালাচ্ছে প্রতিপ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ওপর। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিবির-ছাত্রদল হামলা চালিয়েছে জাতীয় পার্টির সমাবেশে। অথচ তারাই জাতীয় পার্টিকে জোটে নেয়ার জন্য মড়িয়া। তাহলে এরশাদ জোট না যাওয়ায় এই হামলা? অবরোধের তৃতীয় দিনে রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির সমাবেশে হামলা চালিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।

তারা ভাংচুর করেছে সভামঞ্চ। হামলায় আহত হয়েছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদসহ 20-25 জন নেতাকর্মী। বুধবার বেলা সোয়া 1টায় পুলিশের সামনেই সশস্ত্র অবস্থ্থায় ছাত্রদল ও শিবিরের ক্যাডাররা এ হামলা চালায়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর থেকে বিকেল 4টা পর্যন্ত বিজয়নগর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জাতীয় পার্টি কর্মর্ীদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টির কর্মীরা টায়ার ও পুরনো আসবাবপত্রে আগুন জ্বেলে বিজয়নগরের রাস্তা বন্ধ করে দেয়।

ভাংচুর করে পুলিশের রিকুইজিশন করা একটি বাস। ছাত্রদল-ছাত্রশিবির লাঠিসোটা নিয়ে জাতীয় পার্টির কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে বিােভ-সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন কাজী জাফর আহমদ। প্রত্যদর্শীদের মতে, বুধবার বেলা সোয়া 1টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে থেকে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, নাজিমউদ্দিন আলম ও নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর নেতৃত্বে ছাত্রদল-শিবিরের একটি মিছিল বিজয়নগর দিয়ে মুক্তাঙ্গনে যাচ্ছিল। এ সময় বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসের কাছে হাসক প্রোডাকশনের সামনে ট্রাকে মঞ্চ বানিয়ে পুর্বনির্ধারিত কর্মসুচিতে জাতীয় পার্টির নেতারা বক্তব্য রাখছিলেন।

কাজী জাফর আহমদের বক্তব্য চলাকালে ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের মিছিলটি ওই মঞ্চের কাছে পেঁৗছে। জাতীয় পার্টির কর্মীরা অভিযোগ করেন, সাবেক এমপি নাসিরউদ্দিন পিন্টু নির্দেশ দেন জাতীয় পার্টির কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। আর তখনই ছাত্রদল ও শিবির কর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর ইটপাটকেল নিপে শুরু করে। জাতীয় পার্টির কর্মীরাও ইটপাটকেল নিপে করে প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে ছাত্রদল-শিবির কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

মঞ্চে অবস্থ্থানরত সিনিয়র নেতাদেরও তারা রেহাই দেয়নি। তাদের হামলায় কাজী জাফর আহমদসহ 20-25 জন আহত হন। হামলার সময় মঞ্চে ছিলেন কাজী জাফর আহমদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা, যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ। এক শিবিরকর্মী কাজী জাফরের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি ট্রাক থেকে রাস্তায় পড়ে যান। পরে জাতীয় পার্টির কর্মীরা কাজী জাফর আহমদকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নেন।

এ সময় রুহুল অমিন হাওলাদারও আহত হন। এছাড়াও আহত হন জাতীয় পার্টির নেতা আবদুল কাদের ভূঁইয়া, তরুণ বসু, বিপ্লব ফারুক আলম, সাবের হোসেন, সুলতান শেখ, আমির উদ্দিন আহমেদ, গাজী এমএ সালাম, আবদুস সাত্তার প্রমুখ। গুরুতর আহত জাতীয় পার্টির 56 নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন (30), কর্মী বেলাল (42), ছাত্রদলের আবদুল কাদের জুয়েলকে (25) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীরা জাতীয় পার্টির সমাবেশে ব্যবহার করা 6 টি মাইক নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়। ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীদের ইটের আঘাতে আল হাবিব কমিউনিটি সেন্টার ও ডলফিন স্টুডিওর জানালার কাচ ভেঙে যায়।

কাজী জাফর আহমদ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে উপস্থি্থত সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শান্তিপুর্ণভাবে সমাবেশ করে যাচ্ছিলাম। এ সমাবেশে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রদল ও শিবিরের ক্যাডাররা অতর্কিতে হামলা চালায়। আমাদের নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করে মাইক ছিনিয়ে নেয়। ট্রাকটিও ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। তিনি ঘোষণা দেন, এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিােভ ও সমাবেশ করা হবে।

এরপর বেলা সোয়া 2টার দিকে বিজয়নগর এলাকা দিয়ে বিএনপির একটি মিছিল মুক্তাঙ্গনের দিকে যায়। জাতীয় পার্টির মঞ্চের কাছে যাওয়ার পর জাতীয় পার্টির কর্মীরা বিএনপির অল্পসংখ্যক নেতাকর্মীকে ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে নয়াপল্টনের গলির ভেতরে পাঠিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে জাতীয় পার্টির বিুব্ধ কর্মীরা পুলিশের রিকুইজিশন করা বাস (ঢাকা জ 14-0028) ভাংচুর করে। বিজয়নগরে সংঘর্ষ চলার সময় পল্টন থেকে কয়েক শ' পুলিশ ধীরগতিতে এগিয়ে যায় ঘটনাস্থলের দিকে।

পুলিশ যাওয়ার আগেই ছাত্রদল-শিবিরকর্মীরা মিছিল নিয়ে মুক্তাঙ্গনের দিকে যেতে থাকে। এ সময় অনেকের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। বুধবার সকাল থেকেই মুক্তাঙ্গনের পল্টন ও জিরো পয়েন্টের দিকে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ কাউকেই যেতে দেয়নি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রবেশেও বাধা দেওয়া হয়। ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীরা যখন বিজয়নগর এলাকায় পেঁৗছে তখনই পল্টনের দিকের ব্যারিকেড খুলে দেয় পুলিশ।

বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির মঞ্চে হামলা চালিয়ে ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীরা মিছিল নিয়ে মুক্তাঙ্গনে প্রবেশ করে। তখন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে উদ্দেশ করে ব্যঙ্গত্মক শ্লোগান দেয়। এ সময় পুরো পল্টন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।