আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেটামরফোসিস 6:

যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।

সাড়ে তিন বছর, একটা জীবনের তুলনায় খুব দীর্ঘ সময় নয়, যদিও অপোর জন্য দীর্ঘ সময় নি:সন্দেহে। অন্তত ওর দু-বছরের অপোকে আমার তাই মনে হয়। যেসব মানুষকে আমি একইসাথে বিযুক্ত করে দীর্ঘকালের জন্য যুক্ত করে রেখেছি তাদের মধ্যে অন্যতম।

মনে মনে খুঁজে যাওয়া এমন নারীদের কাউকে দেখতে ইচ্ছে করে মাঝে মাঝে; কোথাও একটা গভীর টান যেন বোধ করি, কুশল জানতে ইচ্ছে করে, কখনো স্পর্শ করতেও বাসনা জাগে। সদা পরিবর্তনশীল সম্পর্ক জালের মধ্যেও টিকে থাকা এমন সম্পর্ককে নির্মাণ করতে হয় খুব যত্নে, আদরে, ভালোবাসায় আর সবচেয়ে বেশি সততায়। কেবলমাত্র এদের কাছেই পুরোপুরি নগ্ন হওয়া সম্ভব হয়। কোনদিনই কংক্রিট কোন গঠনে আটকে না পড়ে একটা চির গতির সম্ভাবনা জাগিয়ে আপাত বিযুক্ত থেকে যুক্ত থাকা যায়। যখন অনেক আগেই মানুষ জেনে যায় সামনের মহাসড়কটির পর ঠিক কোন মোড়-টা রয়েছে হয়ত তখন থেকেই শুরু হয় এই নিরন্তর অন্বেষা।

পথটা পিচ্ছিল, প্রায়শই লাম্পট্যকে পাশ কাটিয়ে, আবেগকে স্তিমিত করে, হঠাৎ আগুনকে শান্ত করে কাউকে না পুড়িয়ে খানিকটা নিজে পুড়ে চলা। ভুল বোঝাবুঝি নাটকের একটা সফল মঞ্চায়নের পর নিজেকে গুটিয়ে নেয়া এবং একেবারে নিশ্চিত করে ভেতরে প্রবেশ করা। নারীদের অনেকদিনের গর্ব তারা ধারণ করতে পারে....এও একরকমের ধারণ, প্রতিপালন, সম্পৃক্তকরণ ও বিযুক্ত হয়ে যাওয়া। ওর সাথে যোগাযোগ হঠাৎ করেই; কয়েকটা অভিমানী টেঙ্ট ম্যাসেজ এবং জানতে যাওয়া নম্বরের মালিক কে। কেননা অপরিচিত নম্বর সাধারণত ওর ডাইরিতে থাকে না।

আমি বোঝা না বোঝার মধ্য দিয়ে উত্তর করি। আমার কন্ঠে ও মুগ্ধ, খুশী হয়ে ওঠে এবং সরল স্বীকারোক্তিতে বলে এখন তোমাকেই আমার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। একটু জমাট বেধে যাওয়া খোলশগুলো ভেদ করে ভেতরে যেতে তিনদিন পেরিয়ে যায়; আমরা আবার সচ্ছন্দ হয়ে উঠতে থাকি। ওর কন্ঠে শুধু বন্ধু বন্ধু উচ্চারণ; আমি বলি তোমার যেটা ইচ্ছে বসিয়ে নাও। একসময় আমি বলি তোমার এখনকার বিষণ্নতার কারণ কি? আমার তো মনে হয় না তুমি এতদিন একা থেকেছ, নতুন কি খবর বল।

আমার কিন্তু দুলা ডাকতে প্রবল আপত্তি আছে। ও আস্তে আস্তে খোলে.. বলে, আমার পর (একটা পুরুষতান্ত্রিক ধাক্কা খাই, যদিও পরমুহূর্তে মুচকি হেসে উঠি) ও খুব নি:সঙ্গ হয়ে গিয়েছিল, আমি বলি স্বাভাবিক; তারপর সে বিবরণ দিতে থাকে তার নতুন সম্পর্ক ও সম্পর্ক কেন্দ্রীক সামপ্রতিক সমস্যার। ও বলে, মনে মনে আমি তোমাকেই খুঁজছিলাম, তুমি কেমন চমৎকার করে সব বুঝিয়ে দিতে এখন আমাকে বোঝানোর কেউ নেই। তারপরও আমরা কিছুণের জন্য অভিমানী হই। আমার হঠাৎ জানতে ইচ্ছে করে ও কিভাবে পরিবর্তিত অবস্থাটাকে ধারণ করেছে।

আমি জিগ্গেস করি; ও উত্তরে বলে ' আসলে তোমাকে ভুলতে পারা সম্ভব নয়, মনে মনে কতদিন তোমাকে খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। ' আমি মুচকি হাসি কিছুটা অপরাধবোধে আক্রান্ত হই বলি তারপর?!! ও বলে, ' তারপর ও আমার জীবনে আসে, ও আমাকে খুবই ভালোবাসে' আমি বলি খুবই ভালো কথা কিন্তু এখন এমন বিশৃঙ্খলা কেন? ও নি:শব্দ থাকে। আমি মনোযোগ দিয়ে ওর পুরোটা শুনি বলি তোমার ওর সাথে আরো বেশি করে পরিষ্কার হওয়া দরকার, তোমাদের বোঝাবুঝি স্পষ্ট হওয়া দরকার। ও বোঝে। আমি ওকে ওর নতুন ভালোবাসার জন্য শক্তি দেই; ও শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে।

এখন ওদের সম্পর্কটি আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে, আমি বুঝতে পারি একটা মাত্রায় আমার সরে যাবার সময় হয়ে এসেছে। গতির অবধারিত উপজাত হিসেবে আমাকে ছুটে যেতে হবে; কিন্তু ঠিক কোথায় জানি না হয়ত মৃতু্যর দিকে। তবে আমি বিষণ্ন বোধ করি না; ওর জন্য যে দায়টা ভেতরে ভেতরে বোধ করছিলাম তার একটা উপশম হয়েছে। এবার আমি নিজের দিকে তাকাই; জীবনের প্রতিভায় মুগ্ধ হই। তবে সবচেয়ে খুশী হই আপাত ধরে নেয়ার কাঠামো থেকে মুক্ত হবার পদপেটি দিতে পেরে।

বুঝতে পারি এখানে আমি পাঁড় এনার্কিস্ট। তবে সবচেয়ে যেটা মজার তা হল জীবনের প্রতিভায় মুগ্ধ হওয়া। যে আপাত যুক্তি-শৃঙ্খলকে আমরা শ্বাশত বলে ধরে নেই সেটি যে মানুষের প্রতিভার কাছে কতটা অসহায় তা বারবার প্রমাণিত হয়। এটি এমন একটি উপলব্ধি যা মানুষকে একইসাথে স্থির ও গতিশীল করে এবং এমন নতুন কিছু করে যা অভাবিত, অভাবনীয়। শুধু মানুষের তৈরী থাকতে হয় সেই অভাবনীয়কে ধারণ করার মতা নিয়ে।

খুড়তে হবে আরো গভীর করে খুড়তে হবে, কারণ?! কোন কারণের আর প্রয়োজন নেই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।