আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্লোজআপ ওয়ান

সুন্দরী বালিকাদের যত্ন করে কামড়াই

গান গেয়ে দর্শক আর বিচারকদের মুগ্ধ করার প্রাণপণ চেষ্টায় রত প্রতিযোগীরা। লক্ষ অনেক, বস্তুর পাশাপাশি খ্যাতি, ইলেকট্রনিক আর প্রিন্ট মিডিয়াতে হুলিয়া আর জীবনসারাৎসার প্রকাশের মোহ। অনেকেই খুব চমৎকার গান পরিবেশন করেন, তাঁরা যে অনেক পরিশ্রম আর উৎকণ্ঠার ভেতরে যাচ্ছেন, বোঝা যায় একেকজনের চেহারা দেখলেই। সব মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি ভালো। আমি টিভি দেখি কম, তবে এমন গোছের একটি ভারতীয় অনুষ্ঠান দেখেছিলাম, যেটি আবার মার্কিন একটি অনুষ্ঠানের আগাগোড়া চোথা মেরে করা।

আমরা ভারত ভারত বলে অনেক জুজুবাজি করি, কিন্তু ভারতীয় অনুষ্ঠানের এমন কার্বন কপি করা যায় না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এমনকি পরবর্তী রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হলে প্রতিযোগীদের প্রতিক্রিয়াটা পর্যন্ত ঠিক খাঁটি বলে মনে হয় না, এর পেছনেও কোন চোথাবাজ কোরিয়োগ্রাফার আছে বলে সন্দেহ হতে থাকে। বিচারক একজন আছেন, শ্রদ্ধেয় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, তিনি প্রতিযোগীদের গান শুনে মন্তব্য করেন, কিছুটা কাব্যিক, শিল্পরসে জরজর ভাব আনার চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুনলে হাসি পায়। সেই তুলনায় কুমার বিশ্বজিৎ বা সামিনা চৌধুরী অনেক সাবলীল। উপস্থাপক দেবাশিস বরাবরের মতো দুর্বিনীত ও বিরক্তিকর একটি চরিত্র, একসময় একুশে টিভিতে তিনি পথের প্যাঁচালি নামের একটি রোড শো-তে উপস্থাপনা করতেন, সেই ঘোর তার বোধহয় আজও কাটেনি, খুবই বিরক্ত লাগলো যখন দেখলাম তিনি প্রতিযোগীদের পাইকারী দরে তুমি-তুমি করে ডেকে যাচ্ছেন।

তুমি ডাকটা আন্তরিকতার প্রকাশ, কিন্তু ডাকের পেছনে গলার স্বরেরও একটা ভূমিকা আছে। দেবাশিস লোকটি তাঁর স্বরে সেই আন্তরিকতা প্রকাশে মারাত্মকভাবে ব্যর্থ, তাঁর আচরণ দেখে মনে হলো প্রতিযোগিতা করতে এসে তাঁর কাছে যাবতীয় তরুণতরুণী মাথা বিক্রি করে দিয়ে গেছে। অভদ্রতাকে প্রশ্রয় দিয়ে কী লাভ অনুষ্ঠানের আয়োজকদের? গেলোবারের ক্লোজড আপ শিল্পীদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতে সাদা পাৎলুন পরিয়ে একটি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে পরবর্তী প্রতিযোগীদের হৃদয়ে উৎসাহের সঞ্চার ঘটাতে, সেটিও হতাশাব্যঞ্জকভাবে ভারতীয় অনুষ্ঠানের ছাপচিত্র। সামান্যতম সৃজনশীলতা কি আশা করা যায় না অনুষ্ঠানের ওস্তাগরদের কাছ থেকে? তবুও ভালো লাগে, প্রতিযোগীরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে এখানে আসেন, গান গাওয়ার সময় অনেকের চেহারাতেই সেই স্বপ্নটুকুর ছাপ দেখা যায়, আবার পরবর্তী পর্বে উত্তরণে ব্যর্থ প্রতিযোগীদের আশাহত চেহারাও দেখলাম তিরিশ সেকেন্ড ধরে ধারণ করে দর্শকদের দেখানো হয়। এই অংশটুকু না করলেও বোধহয় চলতো, নাটুকে রস যোগ করে মেগাসিরিয়াল না বানালেও দর্শক আগ্রহ নিয়েই দেখতো।

আমাদের টিভিতে র্যাবের গুলিতে নিহত সন্ত্রাসীর মুখে উড়ে এসে বসা মাছি জুম করে দেখানো হয়, শিল্পীদের স্বপ্নভগ্ন চেহারা দেখানোটাও অনেকটা সে পর্যায়ের অশ্লীলতা বলেই মনে হলো আমার কাছে। গতকাল বহুদিন পর এক প্রতিযোগীর মুখে একটা গান শুনলাম ... কুমার বিশ্বজিতের বহুদিন আগে গাওয়া ... চন্দনা গো, রাগ কোরো না, অভিমান করে বলো কী আর হবে ... ক্লোজ আপ ওয়ানের পাপ ক্ষমা করে দিলাম এই গানটা শোনানোর পুণ্যে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।