আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামহোয়ারে এক বিকেলের আড্ডা

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

পিয়াল ভাইয়ের সাথে কথা ছিল ঠিক আড়াইটায় আমি নাভানা টাওয়ারের সামনে থাকবো। উনি সেসময়ে সেখানে হাজির হবেন। কথামত আমি যখন সেখানে পৌছে গেলাম তখন পিয়াল ভাইয়ের ফোন এল, আমি এখন কিভাবে আসবো! বনানী চলে এসেছি! কিন্তু পথ আর খুজে পাচ্ছি না। পৃথিবীতে আমার দেখা সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট দেশপ্রেমী এই মানুষটার সবচেয়ে রহস্যময়ী একটা ভুলমনস্কতা আছে, রোড-ল্যান্ডমার্ক ভুলে যাবার। হাসতে হাসতে মরার দশা আমার।

আমি বলি ফ্লাইওভারের দিকে চলে আসেন, তারপরে বামে মহাখালীর রাস্তা। একদম শেষ মাথায় এসে গুলশান -1 সার্কেল। বামপাশেই নাভানা। হোটেল জাকারিয়ার সামনে এসে আবার ফোন। এবার কোথায়? আমি বলি - স্ট্রেইট আসতে থাকুন, যখন দেখবেন আমি সামনে, সে পর্যন্ত আর কোথাও থামবেন না।

অবশেষে পৌছানো গেল। আমাদের গন্তব্য সামহোয়ারইন। কিন্তু আপাতত যেতে হবে কেএফসিতে, আমাদের পথ-প্রদর্শক সেখানে। কেণ্টকি ফ্রাইড চিকেনের নতুন দোকান। আমি ও পিয়াল দুইজনই দুপুরের খাবার সেড়ে বেড়িয়েছি।

কিন্তু হারল্যান্ড স্যানডারসের 1930 সালে উদ্ভাবিত ফ্রেসেস্ট, জুসিয়েস্ট চিকেন রান্নার নতুন প্রণালী চেখে দেখতেই হলো পিয়াল ভাইয়ের বন্ধুর জোরাজুরিতে। সামহোয়ারইনে যখন আমরা পৌছাই অফিসটা পুরোপুরি সুনসান ছিল। লাঞ্চ কাম মিটিং শেষে তাদের ফিরতে একটু দেরী হচ্ছিল। পরিচয় হলো হাসিনের সাথে। হাসিন আমাদেরকে দেখে হৈহৈ করে উঠল।

পরিচয় করিয়ে দিলের শাহানাসহ অন্যান্য সব স্টাফদের সাথে। হেড অফ অপরচুনিটিস অরিল্ড ক্লোকারহ্যাং ও এডিটর ফারিহা আমাদের কে নিয়ে আলাপচারিতায় মেতে উঠলেন। অরিল্ড আমাদেরকে তার লক্ষ্যের কথা জানালেন, সমাজের দর্পন হিসাবে ব্লগটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, সে কথা জানালেন। যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে চুড়ান্তরকমের। সংবাদ থাকবে একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলের, যা ধারণ করবে সমাজের সকল ডাইভারসিটি একই প্লাটফর্মে।

তাদের অন্যতম একটা প্রোডাক্ট আওয়াজের কথা বললেন। ভীনদেশী একজন মানুষ বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি, ধর্মের সেনেসিটিভ সব বিষয়ের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কিভাবে ঢুকে গেলেন, আর কত সহজভাবে তা ব্যাখ্যা করলেন আমাদের সম্মুখে - আমি রীতিমত অভিভূত হয়ে গেলাম। বললেন, ব্যক্তিগত আক্রমন ও পর্নোগ্রাফী ছাড়া আর কোন বিষয়েই তাদের মডারেশন করার ইচ্ছে নেই। যার যার ব্লগ তার নিজের কপিরাইট বহন করে। সব প্রকাশিত লেখার দায়িত্ব তার নিজেকে নিতে হবে।

আমরা অনেক কথা বলি, অনেক সম্ভাবনার কথা শুনি। ঘন্টা দেড়েক কিভাবে কেটে যায় টের পাইনা। আগুনের পরশমনিতে প্রশ্ন করতে করতে বোধহয় একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। অরিল্ডকে পেয়েও সে অভ্যাস আমাকে পেয়ে বসেছিল। তবে তিনি জানালেন, যেকোন সময় যেকোন ব্লগার তাদের ফিডব্যাকের জন্য সামহোয়ারইনে যোগাযোগ করতে পারেন, ব্লগারদের জন্য সামহোয়ারইনের দরজা সবসময় উন্মুক্ত থাকবে।

বিদায় নেয়ার সময় অরিল্ড আমাকে ও পিয়াল ভাইকে দুটো টি-শার্ট উপহার দিলেন। একটা চমৎকার বিকেল অতিবাহিত করে আমারা রাস্তায় নামি। পিয়াল ভাই যথারীতি বাইক স্ট্রার্ট দিয়ে আবার জানতে চান, কোনদিক দিয়ে যেতে হবে যেন!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.