আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বদলে যাওয়া 'সেন্টার অফ দি ইউনিভার্স' এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের র্যাংকিং

যে ঘড়ি তৈয়ার করে - সে - লুকায় ঘড়ির ভিতরে

পৃথিবীর ইতিহাসে একটা সময় ছিলো যখন পৃথিবীর তথা মানবসভ্যতার জ্ঞানের দিক থেকে মধ্যস্থান বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিলো মিশর, তুরস্ক, জেরুজালেম, সিরিয়া, ব্যাবিলন এই এলাকাগুলো। ঘুরে ফিরে দর্শন, ব্যবসা, শিল্প সাহিত্য ইত্যাদি সব মিলিয়ে মানব সভ্যতার উৎকর্ষতার সোনালী সময় গেছে এইসব জায়গায়। সমসাময়িক বা অব্যবহতি পরে চীন ও ভারতও সেই গৌরবের ভাগিদার। তারপরে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা পৃিথবীর মধ্যস্থানে চলে আসে। সভ্যতার ধারক হয়ে ওঠে সেই জায়গা।

ভূমধ্যসাগর নামটিই নির্দেশ করে পৃথিবীর মধ্যস্থান স্বীকৃতি দেওয়ার প্রবণতা থেকে। এতো গেলো প্রাচীন কালের কথা। আধুনিক সময়ে পৃথিবীর মধ্যস্থান করে নেয় বিলেত, যুক্তরাজ্য। শিক্ষার জন্য এক সময়ে পৃথিবী সেরা শিক্ষা মানেই বিলেতে যাওয়া। বিলেত ফেরত শিক্ষিত মানে ধন্য মানুষ।

বিলেতকে পিছনে ফেলে পৃথিবীর পরবতর্ী মধ্যস্থান হয়ে ওঠে আমেরিকা। বিগত কয়েক দশক শিক্ষা ও মানব সভ্যতার অগ্রনী দেশ হিসেবে সেই স্থানটি ছিলো আমেরিকার। কিন্তু আবারও সময় পাল্টাচ্ছে। খুব সম্ভবত পরবতর্ী পৃথিবীর মধ্যস্থানের দখলে শীর্ষে চলে আসছে দক্ষিন পূর্ব এশিয়া। সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া, চীন, জাপান এবং দক্ষিন কোরিয়া - এই এলাকায় ভবিষ্যত পৃথিবীর মধ্যস্থানের গৌরব অপেক্ষা করে আছে।

আর এন্ড ডি (রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট) ইনভেস্টমেন্ট থেকে শুরু করে বর্তমানে মানব সভ্যতার অগ্রনী যাবতীয় প্রযুক্তির নেতৃত্ত্বে রয়েছে এই এলাকার দেশগুলো। এরকম প্রযুক্তির মধ্যে নাম করা যায় বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, হাইটেক ম্যানুফ্যাকচারিং ইত্যাদি। একদিকে এশিয়ার এই উত্থান, অন্যদিকে আমেরিকার ক্রমশ অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য দিক থেকে পরাশক্তির অবস্থান থেকে পতন, সব মিলিয়ে আজ থেকে দশ বছর পরে পৃথিবীর মধ্যস্থান যে আমেরিকা থেকে সরে দক্ষিন পূর্ব এশিয়াতে চলে আসবে সেটা সম্পর্কে একটা মাঝারি গোছের ভবিষ্যতদ্বাণী করে রাখছি। এবার আসি আসল প্রসঙ্গে, যা লেখার কথা মাথায় রেখে এই পোস্টটি। দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার আয়তনে ছোট অথচ বিশাল অর্থনৈতিক পরাশক্তির দেশ সিঙ্গাপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের শিক্ষা মানচিত্রে নিজের স্থান প্রবল প্রতাপে এগিয়ে আসছে।

সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর (এন ইউ এস) সমপ্রতি বিশ্বের ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংয়ে আমেরিকার অনেক নামী দামী ইউনিভার্সিটিকে পেছনে ফেলে দিয়ে অবিশ্বাস্য ভাবে এগিয়ে গেছে। ইউনিভার্সিটিটি রিসার্চে ব্যাপক ইনভেস্টমেন্ট থেকে শুরু করে শিক্ষার ক্ষেত্রে অত্যান্ত আধুনিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে যার কারনে র্যাংকিংয়ে এর বিশাল অগ্রগতি। এশিয়ার ইউনিভার্সিটি হয়ে বিশ্বের শীর্ষ ইউনিভার্সিটির কাতারে দাড়াতে পেরে এনইউএস এশিয়ানদের জন্য গর্বের এবং কাংখিত একটি ইউনিভার্সিটিতে নিজেকে পৌছে দিয়েছে। যেটা অনেকের কাছে অজানা তা হলো এন ইউ এস 2005 সালের ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং-এ প্রযুক্তিতে বিশ্বের 9ম; 15তম বায়োমেডিসিন; 13তম সোস্যাল সায়েন্সে। ওভার অল র্যাংকিংয়ে এন ইউ এস -এর অবস্থান ছিলো 22তম যা কানাডার ম্যাকগিল (24), অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনি (23) কেও ছাড়িয়ে গেছে।

উল্লেখ্য যে র্যাংকিং প্রস্তুতকারী সংস্থাটি হলো টাইমস, যেটি লন্ডন ভিত্তিক একটি স্বতন্ত্র সংস্থা। সাইট: http://www.nus.edu.sg Click This Link Click This Link যারা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিংগাপুরে পড়াশুনা করতে চান তাদের বলবো, এর ওয়েবসাইটে এ্যাডমিশন সেকশনটি দেখুন। এরা খুব ই-ফ্রেন্ডলী। ওয়েব যাবতী ইনফো যেমন দেওয়া আছে তেমনি কোন অফিসে ইমেইল করলে চটপট উত্তর পাবেন। আধুনিক সিংগাপুরে ফোনের চেয়েও অনেক বেশি কার্যকর ইমেইল কমিউনিকেশন।

(লেখাটি উৎসর্গ হযবরল -কে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.