আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হোক



বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি রাজনৈতিক দলগুলোর ক্যান্টনমেন্ট? বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য কি ? স্বাভাবিক উত্তরটা আমরা সবাই জানি - জ্ঞান সৃষ্টি ও বিকাশ। আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিখ্যাত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে। দেখা যায় সরকার দলীয় ভিসি নিয়োগ থেকে শুরু করে আরও আজব কিছু ব্যাপার। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরেকটা কাজ করে - তা হল চাকরির বাজারে কোচিং সেন্টার হিসেবে কাজ করে আজকাল। ব্যাপারটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি।

ব্যাপারগুলো সবাই জানে - তাই আর কিছু বলার মানে হয় না। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে সবার আগে দূর করতে হবে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি। "পাওয়ার পলিটিক্স" - এই ক্যান্সার সংস্কারের ব্যাপার নয় - এটি কেটে ফেলার ব্যাপার। আমরা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জড়িত তারা সবাই খুব স্বচ্ছ ধারণা রাখি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে। এই জিনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, শৃঙ্খলা ও সাধারণ ছাত্রদের কর্মকাণ্ডের জন্যে বাঁধা ছাড়া আর কিছু নয়।

এটা সোজা কথায় নষ্ট রাজনীতি। ছাত্র সংগঠন হতে পারে কেবল মানবিক,বিজ্ঞানচর্চা কিংবা সাংস্কৃতিক লক্ষ্য নিয়ে। দেশের যে কোন সমস্যায় বর্তমান রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন থেকে এই সংগঠনগুলোই কেবল স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারে। রাজনৈতিক সংকটে বা সময়ের প্রয়োজনে আমরা সাধারণ ছাত্ররা যখন এগিয়ে এসেছি, তখনই কেবল সাফল্য এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/শিক্ষক ক্যাম্পাসের বাইরে রাজনীতি করতে পারেন।

আপনাদের কর্মকাণ্ডের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জড়িয়ে থাকে যা আমাদের সাধারণদের জন্যে লজ্জা ছাড়া কিছু বয়ে আনে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি একটা দেশের স্বাভাবিক ও মানসম্পন্ন না হয় তবে কখনই এই দেশ দাঁড়াতে পারবে বলে মনে হয় না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংগঠন হোক উন্নত বিশ্বের মতই স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত। এই মুহূর্ত থেকে কেউ ব্যাপারগুলো নিয়ে না ভাবলে ভবিষ্যতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই হয়ে উঠবে শিক্ষার কেন্দ্র, কেননা তারা দিন দিন মান উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছে যেখানে আমরা ঐতিহ্য আর মেধাবী সম্পদ ধুয়ে পানি খাচ্ছি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি যদি আবশ্যক ব্যাপার হয়, তবে তা প্রাইভেটেও হওয়া উচিত।

তাই নয় কি ? কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই, যারা জড়িত আছেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে - ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ধরে রাখার জন্যে কখনই ছাত্র রাজনীতিকে উৎসাহিত করবেন না ! পুরাতন কথাই বলি, গাছের গোড়ায় পানি দিন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত সমস্যার মূলে এই ছাত্র/শিক্ষকদের রাজনীতি যা সংস্কারযোগ্য নয়, কেবল বাতিল করলেই ভাল কিছু সম্ভব। কোন ভাবেই এই সমস্যা সংস্কারযোগ্য নয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।