আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফাযায়েলে আমালের ওপর কিছু অভিযোগ পর্যালোচনা- অভিযোগ ১- ফেরেশতাদের ‘ভুল’

শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া (রহ) রচিত ফাযায়েলে আমালকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। এর জনপ্রিয়তা যেমন ব্যাপক, তেমনি ব্যাপক এর সমালোচনা। কারো অভিযোগ এর রাজনীতিবিমুখতার ওপর, মাওলানা আহমদ রেজা খান (রহ) এর অনুসারী ও সমমনাদের অভিযোগ- এটি ‘ওহাবী’দের কিতাব, আবার যাঁদেরকে তাঁরা ‘ওহাবী’ বলেন, তাঁদের অনেকের অভিযোগ এ কিতাবের হাদীসের মানের ব্যাপারে, বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনার ব্যাপারে। এসব অভিযোগ নিয়ে বইপত্র লেখা হয়েছে, হচ্ছে। সাস্প্রতিক কালে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগ, ‘ইসলামি’ ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসমূহে এরকম একটি বই পরিচিতি লাভ করেছে।

বইটির নাম-‘সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব ’। লেখক- জনাব মুরাদ বিন আমজাদ। ইন্টারনেটে বাংলায় তাবলীগ জামাত বিরোধী প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার এটি। গুগলে বইটির নাম লিখে সার্চ দিলেই এ বইয়ের প্রচার ও ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পাবেন। এছাড়া ইউটিউবে একটু খুঁজলেই তাবলীগ জামাতের বিরুদ্ধে তাঁর বিভিন্ন ভিডিও পাওয়া যাবে, যেগুলো এ বইয়েরই চর্বিতচর্বণ।

তো চলুন আজকে ‘সহীহ আক্বীদার মানদণ্ডে তাবলীগী নিসাব’ এর একটি অভিযোগ পর্যালোচনা করা যাক। অভিযোগ -‘ফেরেশতারাও কি ভুল করে? (হযরত উম্মে কুলসুমের স্বামী আবদুর রহমান অসুস্থ ছিলেন...)’ এ অভিযোগটি ইন্টারনেটে বেশ কিছু জায়গায় পাওয়া যাবে। যেমন- View this link (ঘটনা ৫) View this link View this link ইত্যাদি। যাহোক,‘সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব’এ বলা হয়েছে (পৃষ্ঠা ৫৬,৫৭,৫৮,৫৯) এখানে যে অভিযোগ গুলো করা হয়েছে ১.১/ রেফারেন্স নেই ১.২/ উল্লেখিত উম্মে কুলসুম (রাযি) ও আবদুর রহমান (রাযি) যদি সাহাবী হয়ে থাকেন, তবে তাঁদের নামের পাশে (রাযি) লেখা উচিত ছিল। আর এটি যদি শায়খ যাকারিয়া (রহ) এর এলাকার কোন ঘটনা হয়, তবে তো (রাযি) লেখার প্রয়োজন নেই।

রেফারেন্স উল্লেখ না থাকায় লেখক নিশ্চিত হতে পারেননি। তিনি মনে করেছেন, এটা মুদ্রণ ত্রুটিও হতে পারে। ১.৩/লেখকের অভিযোগ-এ ঘটনা উল্লেখ করার মাধ্যমে এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, ফেরেশতারা তো ভুল করেনই, আল্লাহ তায়ালাও ভুল করেন (আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন)। ১.৪/ তাঁর মতে, সালাত, দুআ ইত্যাদির কারণে আল্লাহ তা’আলা বিপদাপদ দূর করেন, কিন্তু এগুলোর মাধ্যমে হায়াত বাড়িয়ে দেয়ার বিশ্বাস আক্বীদাগত চরম ভুল এবং অবধারিতভাবে কুফর। পর্যালোচনা ১.১ ও ১.২ রেফারেন্স ও (রাযি) উল্লেখ সংক্রান্ত আপত্তি শায়খ যাকারিয়া (রহ) তাঁর ফাযায়েল সংক্রান্ত কিতাবগুলোর কোন কপিরাইট করেননি।

ফলে যে কেউ এগুলো ছাপাতে পারে। শুধুমাত্র পাক-ভারত উপমহাদেশেই ৭৪ টি প্রকাশনা সংস্থা ফাযায়েলে আমাল প্রকাশ করে। (Objections On Fazail E Amal : A Fundamental Analysis (page-4)-Maulana Abdullah Maroofi) বাংলাদেশে তাবলীগী কুতুবখানা/তাবলীগী ফাউন্ডেশন, দারুল কিতাব প্রভৃতি প্রকাশনা সংস্থা ফাযায়েলে আমাল প্রকাশ করেছে। তাবলীগী কুতুবখানা/তাবলীগী ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত অনুবাদে অনেক ক্ষেত্রেই রেফারেন্স বাদ দেয়া হয়েছে এবং কিছু ভুল-ত্রুটি রয়েছে। আলোচ্য ঘটনার ক্ষেত্রেও তা-ই ঘটেছে।

কিন্তু দারুল কিতাব কর্তৃক ২০০১ সালে প্রকাশিত সংশোধিত অনুবাদে ঘটনাটির রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে। চলুন ‘সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব ’বইটির প্রকাশকাল সম্পর্কে জানা যাক- ‘সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব ’ এর লেখক ২০১১ সালেও তিনি ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত ফাযায়েলে আমাল থেকেই ভুল খুঁজে যাচ্ছেন (পৃষ্ঠা ৮ দ্রষ্টব্য), এমনকি তাঁর বইয়ের ৩য় সংস্করণেও, যা দারুল কিতাব কর্তৃক ফাযায়েলে আমালের সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশের ১০ বছর পরে প্রকাশিত। ২০০১ সালে দারুল কিতাব কর্তৃক প্রকাশিত ফাযায়েলে আমাল থেকে- আরেকটি বিষয় পরিষ্কার করে দেয়া জরুরী- উল্লেখিত উম্মে কুলসুম (রাযি) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কন্যা নন, বরং তিনি উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা (রাযি)। আর আব্দুর রহমান (রাযি) হলেন আব্দুর রহমান ইবন আওফ (রাযি)। পর্যালোচনা ১.৩ ফেরেশতাদের ‘ভুল’ লেখকের মতে, আলোচ্য ঘটনা উল্লেখ করার মাধ্যমে এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, ফেরেশতারা তো ভুল করেনই, আল্লাহ তায়ালাও ভুল করেন (আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন)।

তিনি যদি উল্লেখিত ঘটনার উৎস এবং এ সম্পর্কে ইসলামের ইতিহাসের শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিসদের মতামত জানতেন, তবে হয়ত এ কথা বলার সাহস পেতেন না। কিন্তু আফসোস, তা না জেনেই তিনি ‘সংশোধন’ করতে নেমে পড়েছেন। ২০০১ সালে প্রকাশিত ফাযায়েলে আমালে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- দুররে মানসূর। দুররে মানসূর ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তাফসীর গ্রন্থ। লিখেছেন ইমাম জালালউদ্দীন সুয়ূতী (রহ), যিনি ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির।

তবে এ কিতাবের সব বর্ণনা-ই সহীহ- তা নয়। এ বর্ণনাটি সহীহ কিনা সে প্রসঙ্গে একটু পরেই আলোচনা আসছে। তার আগে জনাব ইয়াসির কাযী (আশা করি তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না, তিনি ডা. জাকির নায়েকের অন্যতম সহযোগী এবং পিস টিভির নিয়মিত আলোচক, মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন -http://en.wikipedia.org/wiki/abu_ammaar_yasir_qadhi) লিখিত ‘Introduction To Sciences Of The Quran’ থেকে ‘দুররে মানসূর’ সম্পর্কে জেনে আসি- অর্থাৎ, সারকথা হল, দুররে মানসূরে সহীহ এবং যঈফ, উভয় ধরণের বর্ণনাই ইমাম সুয়ূতী (রহ) একত্রিত করেছেন। অনলাইনে আপনি বিনামূল্যে দুররে মানসূর পড়তে পারেন, তবে আরবীতে। সূরা বাকারার ৪৫ নম্বর আয়াতের তাফসীরে ইমাম সুয়ূতী (রহ) আলোচ্য বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন।

অনলাইন ভার্সন থেকে স্ক্রীনশট এছাড়াও ঘটনাটি • ইমাম হাকিম (রহ) তাঁর ‘মুস্তাদরাক আলা আল সহীহাইন (হাদিস নং-৩০৬৬)’ গ্রন্থে • ইমাম যাহাবী (রহ) তাঁর ‘তালখীস মুস্তাদরাক’ গ্রন্থে • ইমাম বাইহাকী (রহ) তাঁর ‘শুআবুল ঈমান (হাদিস নং-৯৬৮৪)’ গ্রন্থে • ইমাম আব্দুর রাজ্জাক (রহ) তাঁর ‘মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক (হাদিস নং-২০০৬৫)’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বইটির লেখক তো এ ঘটনা উল্লেখ করার কারণে শায়খ যাকারিয়া (রহ)কে‘ভ্রান্ত আক্বীদা’র অনুসারী বানিয়ে দিয়েছেন এবং ‘সংশোধনের উদ্দেশ্যে’ নেমে পড়েছেন। সে অনুযায়ী ইমাম সুয়ূতী (রহ) ,ইমাম হাকিম (রহ), ইমাম যাহাবী (রহ) ইমাম বাইহাকী (রহ), ইমাম আব্দুর রাজ্জাক (রহ) ……………….. তাঁদের জন্যও কি তাঁর কলমে কিছু ‘সংশোধনমূলক’ কথা জমা আছে? ইমাম হাকিম (রহ) তাঁর ‘মুস্তাদরাক আলা আল সহীহাইন’ কিতাবটি লিখেছিলেন এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি এমন হাদিস সমূহ একত্রিত করবেন যেগুলো ইমাম বুখারী (রহ) ও ইমাম মুসলিম (রহ) তাঁদের সহীহ কিতাবদ্বয়ে সংকলন করেননি, কিন্তু সেগুলো সহীহ বুখারী-সহীহ মুসলিম সংকলনে অনুসৃত বিশুদ্ধতার মানদণ্ড অনুযায়ী সহীহ। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি পুরোপুরি সফল হননি। অনেক ক্ষেত্রে ‘হাদিসটি বুখারী/মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ’- এরকম মন্তব্য করলেও আসলে তা সঠিক নয়।

অনেকে বলেছেন, তিনি কিতাবটি সংকলন করার পর এটিকে ‘revise’ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ১ম খণ্ডের কাজ শেষ হওয়ার পরই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাই মুস্তাদরাক এর ১ম খণ্ডে ত্রুটির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই পরবর্তীতে ইমাম যাহাবী (রহ) তাঁর ‘তালখীস মুস্তাদরাক’ কিতাবে ‘মুস্তাদরাক আলা আল সহীহাইন’ এর হাদিসগুলো পর্যালোচনা করেছেন এবং ইমাম হাকিম (রহ) এর ভুলগুলো শুধরে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইমাম যাহাবী (রহ) র বক্তব্য The Mustadrak contains a good number of hadîth that conform to the conditions of authenticity of both (al-Bukhârî and Muslim) as well as a number of hadîth conforming to the conditions of either one of them. Perhaps the total number of such hadîth comprises half the book. There is roughly another quarter of the hadîth that have authentic chains of transmission, but that have something else about them or that have some defect. As for the rest, and that is about a fourth, they are rejected and spurious narrations that are unauthentic. Some of those are fabrications. I came to know of them when I prepared an abridgement of the Mustadrak and pointed them out. (Siyar A`lâm al-Nubalâ') ইমাম হাকিম (রহ) এর ‘মুস্তাদরাক আলা আল সহীহাইন’ ও ইমাম যাহাবী (রহ) এর ‘তালখীস মুস্তাদরাক’ এর অনলাইন ভার্সন থেকে আলোচ্য ঘটনা- •ইমাম হাকিম (রহ) এর ‘মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন’ থেকে (Click This Link)- • ইমাম যাহাবী (রহ) এর ‘তালখীস মুস্তাদরাক’ থেকে (http://islamport.com/d/1/mtn/1/22/471.html)- অর্থাৎ, ইমাম হাকিম (রহ) হাদিসটি বর্ণনা করে বলেছেন- এটি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ এবং ইমাম যাহাবী (রহ) তাঁর সাথে একমত পোষণ করেছেন। সুতরাং, এটি যে শায়খ যাকারিয়া (রহ)র এলাকার কোন উম্মে কুলসুম/আব্দুর রহমানের ঘটনা নয় এবং কোন ‘মিথ্যা বানোয়াট আজগুবি কিসসা কাহিনী’ নয়, তা আশা করি পরিষ্কার।

এবার 'সহীহ আক্বীদার মানদণ্ডে তাবলীগী নিসাব' এর আরেকটি বক্তব্য দেখা যাক- অথচ আলোচ্য ঘটনাকে ‘মিথ্যা বানোয়াট আজগুবী কিসসা কাহিনী’ বলার আগে ( ৫৯ নম্বর পৃষ্ঠা ) তিনি নিজে হাদিসটি যাচাই করে নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি, তিনি ধরেই নিয়েছেন, এটি শায়খ যাকারিয়া (রহ) এর এলাকার কোন ঘটনা বা সনদ বিহীন বর্ণনা। আর গত ৬ বছর ধরে তাঁর মুগ্ধ পাঠকেরা, যাদের অধিকাংশের দিন-রাত ব্যয় হয় চার ইমামের তাকলীদের বিরোধিতা করে - এ ব্যাপারে তাঁর তাকলীদ করে যাচ্ছেন, আর ব্যাপক উৎসাহের সাথে বহু হাস্যকর ভুলে ভরা বইটি মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ব্যবহার করছেন। ‘বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ’– এমন হাদিসের ব্যাপারে ‘সংশোধনের’ উদ্দেশ্যে যে সমস্ত প্রশ্ন ও অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে (পৃষ্ঠা ৫৭, ৫৮)- • এ বর্ণনা এ বার্তা বহন করে যে, ‘ফেরেশতা এবং আল্লাহ তায়ালাও ভুলের ঊর্ধ্বে নন,নাউযুবিল্লাহ’ • প্রথম দুজন ফেরেশতা ভুল করে এসেছিলেন? • ব্যাপারটা কি আল্লাহ তায়ালার অগোচরেই ঘটেছিল,নাকি আল্লাহ তায়ালা প্রথমে ভুল করে পাঠিয়ে পরে সংশোধন করলেন অন্য ফেরেশতা দিয়ে? • আজরাইল আ: ছিলেন কোথায়? • খৃষ্টানী আকিদার বীজ বপন সহীহ হাদিস অনুসরণের কী অসাধারণ দৃষ্টান্ত!!! এখন কথা হল, উক্ত ঘটনা দ্বারা কী প্রমাণ হয়? মুরাদ সাহেবের মতে- ‘জনাব শায়েখ উক্ত ঘটনার মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন, মানুষরাই শুধু ভুল করেনা বরং ফেরেশতা এবং আল্লাহ তায়ালাও ভুলের ঊর্ধ্বে নন, নাউযুবিল্লাহ’ (পৃষ্ঠা ৫৭) শায়খ যাকারিয়া (রহ) তো কোথাও বলেননি যে, তিনি উক্ত ঘটনার দ্বারা এসব কথা বুঝাতে চেয়েছেন। তাহলে তিনি কিভাবে বুঝলেন? তিনি নিশ্চয়ই ‘ইলমে গায়েব’ জানেন না? শায়খ যাকারিয়া (রহ) তো এটিকে উল্লেখ করেছেন আরেকটি হাদিসের ব্যাখ্যায়। হাদিসটি হল- অর্থাৎ, তিনি আলোচ্য হাদিসটিকে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাযে মনোনিবেশ করার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ফেরেশতারা ভুল করেন –এমন কোনো আক্বীদা প্রমাণে নয়। আর হাদিসটি সেরকম কোনো আক্বীদা প্রমাণও করে না। প্রথম দুই ফেরেশতাকে আল্লাহ তা’আলা যে হুকুম দিয়ে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা তা-ই পালন করছিলেন। তৃতীয় ফেরেশতার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আর আল্লাহ তা’আলা তাঁদেরকে ভিন্ন ভিন্ন হুকুম দেয়ার বর্ণনার মাঝেও কোন ‘ভ্রান্ত আক্বীদা’র গন্ধ নেই।

আল্লাহ তা’আলার হুকুমের রহস্য তিনিই ভাল জানেন। হয়ত এর মাধ্যমে বিপদাপদে নামাযের গুরুত্ব বুঝানোই ছিল এটি ঘটানোর উদ্দেশ্য। আর শায়খ যাকারিয়া (রহ) তো সেই উদ্দেশ্যেই এটি বর্ণনা করেছেন, যা শায়খ কর্তৃক ঘটনাটির প্রয়োগক্ষেত্র থেকেই পরিষ্কার। একটি হাদিসের অর্থ যখন নানা রকম হতে পারে, তখন যদি কেউ সবচাইতে অসম্ভাব্য এবং নিকৃষ্টতম অর্থ ধরে নিয়ে এর বর্ণনাকারীর আক্বীদার ওপর হামলা চালায়, তখন কি সেটিকে সংশোধনের প্রচেষ্টা বলা উচিত? হাদিসের যে অর্থ লেখক করেছেন, তা যদি উল্লেখিত ইতিহাসশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসগণও করতেন, তাহলে তো তাঁরা এর বর্ণনায় ‘ভ্রান্ত আক্বীদা’ থাকার কারণে তা প্রত্যাখ্যান করতেন। কিন্তু তা তাঁরা করেননি।

আর ইমাম হাকিম (রহ) এবং ইমাম যাহাবী (রহ) তো একে বুখারী-মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ বলে রায় দিয়েছেন। আর এভাবে ‘সংশোধনের উদ্দেশ্যে’ হাদিস থেকে মনগড়া অর্থ বের করে এর উল্লেখকারীকে ‘ভ্রান্ত আক্বীদা’র অনুসারী বলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে পারে, তার একটি উদাহরণ দেখা যাক। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত (বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত-খণ্ড ৮, হাদীস নং-৬৮০৮) এখন সমস্যা হল, লেখক ফাযায়েলে আমালের হাদিসটির অর্থ যে মনগড়া পন্থায় বের করেছেন, তা যদি তিনি সহীহ মুসলিমের হাদিসটির ব্যাপারে প্রয়োগ করেন, তাহলে কী দাঁড়ায়? • এ হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী লোকটির রূহ কবযের ব্যাপারে দুই দল ফেরেশতা (এক দল রহমতের, এক দল শাস্তির) বিবাদে লিপ্ত হলেন। উভয় দলেরই তো আল্লাহ তা’আলার হুকুম পালনার্থে আসার কথা। কারণ (পৃষ্ঠা ৫৮)- তাহলে বিবাদ কীভাবে সম্ভব? তাহলে কি একটি দল আল্লাহর হুকুম না থাকা সত্ত্বেও ভুল করে চলে এসেছিলেন? (নাউযুবিল্লাহ) • এ হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী বিবাদের মীমাংসা হয়েছিল মানুষরূপী আরেকজন ফেরেশতার পরামর্শ অনুযায়ী।

ফেরেশতারা বিবাদে জড়ানোর পর আল্লাহ তা’আলার কাছে আবার হুকুম জানতে না চেয়ে আরেকজন মানুষরূপী ফেরেশতার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করলেন? অথচ (পৃষ্ঠা ৫৮)- ‘সহীহ আক্বীদার মানদন্ডে তাবলীগী নিসাব’ এর লেখকের ‘সংশোধন’ পদ্ধতি অনুসরণ করলে এ প্রশ্নগুলোও তো উত্থাপিত হয়। কিন্তু অন্তরের বক্রতামুক্ত একজন সাধারণ মুসলমানও বুঝবেন যে, এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা, যা আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় ও হুকুমে ঘটেছে। কিন্তু সমস্যা হল, ফাযায়েলে আমালের ক্ষেত্রে আমাদের আহলে হাদিস ভাইরা এ ধরণের ব্যতিক্রমী ব্যাপারগুলো ভুলে বসে থাকেন। সুতরাং, কেউ যদি মুরাদ সাহেবের মত ‘সংশোধনের উদ্দেশ্যে’ হাদিসের মনগড়া অর্থ বের করে এর উল্লেখকারীকে দোষারোপ করার অভ্যাস অনুসরণ করতে থাকে, তবে সে ইমাম মুসলিম (রহ) এর ব্যাপারে কি করবে, তা সহজেই অনুমেয়। সহীহ মুসলিমের হাদিসটি নিঃসন্দেহে সহীহ।

আর এ ব্যাপারেও কোনো মুসলমানের সন্দেহ থাকার কথা নয় যে, দুই দল ফেরেশতার কেউই ভুল করেননি। বরং উভয় দলই আল্লাহ তা’আলার হুকুমের ফরমাবরদারী করেছেন। আর মানুষরূপী ফেরেশতাও আল্লাহর হুকুমেই পরামর্শ দিয়েছেন, তাই বাকিরা তাঁর অনুসরণ করেছেন। পুরো ঘটনা আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছানুযায়ী ঘটেছে, যাতে আমরা তাওবার গুরুত্ব বুঝতে পারি। আর তাই ইমাম মুসলিম (রহ) হাদিসটিকে সহীহ মুসলিমের ‘কিতাবুত তাওবা’য় উল্লেখ করেছেন, ‘কিতাবুল আক্বাঈদ’ বা ‘কিতাবুল ঈমান’ এ নয়।

আর ঠিক তেমনিভাবে শায়খ যাকারিয়াও (রহ) হযরত উম্মে কুলসুম (রাযি) এর হাদিসটিকে বর্ণনা করেছেন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাযে মনোনিবেশ করা সংক্রান্ত হাদিসের ব্যাখ্যায়, আক্বীদা সংক্রান্ত কোন হাদিসের ব্যাখ্যায় নয়। হাদিসটি হল (যা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছে)- আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন। পর্যালোচনা ১.৪- দুআর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা কারো বিপদাপদ…………… অভিযোগটি আবার স্মরণ করা যাক- (পৃষ্ঠা ৫৮,৫৯ ) সুতরাং, লেখকের মতে, সালাত, দুআ ইত্যাদির কারণে আল্লাহ তা’আলা বিপদাপদ দূর করেন বটে, কিন্তু এগুলোর মাধ্যমে হায়াত বাড়িয়ে দেয়ার বিশ্বাস আক্বীদাগত চরম ভুল এবং অবধারিতভাবে কুফর। তাঁর মতে, এটি শুধু মানুষের হায়াত নয়, বরং সকল প্রাণীর হায়াতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

তাঁর দলিল- অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর। কারণ- এটি কুফর সংক্রান্ত অভিযোগ। তাবলীগ জামাতে একটি ঘটনা বহুল প্রচলিত। ঘটনাটি অনেকটা এরকম- এক ব্যক্তি সফরে ছিলেন। পথিমধ্যে তাঁর সওয়ারী মারা গেল।

তিনি নামায পড়ে আল্লাহ তা’আলার কাছে দু’আ করলে তাঁর সওয়ারী জীবিত হয়ে গেল। এরকম দুটি ঘটনা ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ) তাঁর ‘The Criterion Between The Allies Of The Merciful & The Allies Of The Devil’ (Download link- http://www.islamhouse.com/p/204492) বইয়ের ১১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন- আহলে হাদিস ভাইদের নিকট ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ) তো খাঁটি তাওহীদপন্থী হিসেবে বিবেচিত। শায়খ আলবানি (রহ) বলেছেন (এখানেও পাবেনঃ http://i-onlinemedia.info/?p=856) - তো আল্লাহ তা’আলা কারো দুআ(১ম ঘটনা) বা নামাযের (২য় ঘটনা) উসীলায় তাঁর মৃত ঘোড়া/গাধাকে জীবিত করে দিলেন- এমন ঘটনার বর্ণনাকারী যদি সালাফে সালেহীনের অনুসারী বিবেচিত হন, তাহলে আল্লাহ তা’আলা কারো নামাযের উসীলায় আরেকজন মানুষকে জীবিত করে দিলেন- এমন ঘটনার বর্ণনাকারীর প্রতি কেন কুফর/শিরকের অপবাদ? ইমাম ইবন কাসীর (রহ)ও এ জাতীয় ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তাঁর রচিত ‘তাফসীরে ইবনে কাসীর’ আহলে হাদিস ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তাফসীর। শায়খ আলবানি (রহ) বলেছেন (Click This Link এখানেও পাবেনঃ http://ionlinemedia.info/?p=856)- ড. আবু আমিনা বিলাল ফিলিপস তাঁর ‘Usool at Tafseer’ গ্রন্থে তাফসীরে ইবনে কাসীর এবং আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া সম্পর্কে বলেছেন- (আশা করি আপনারা ‘পিস টিভি’র কারণে ড. ফিলিপসকে চেনেন।

মদীনা এবং রিয়াদ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন-http://en.wikipedia.org/wiki/bilal_philips) সুতরাং, ডঃ বিলাল ফিলিপস এর মতে, ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ কে সবচেয়ে বিশুদ্ধ ইতিহাস গ্রন্থ এবং তাফসীর ইবন কাসীর কে সবচেয়ে বিশুদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে আমাদের বাংলাভাষী ভাষায় সালাফি/আহলে হাদিস ভাইয়েরা তাঁদের ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে ‘তাফসীরে ইবন কাসীর’ এবং ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’র ব্যাপক প্রচার করছেন। এ দুটো বইয়েও সালাত, দুআ ইত্যাদির কারণে আল্লাহ তায়ালার হুকুমে মৃত ব্যক্তি/প্রাণীর পুনরায় জীবন লাভের কয়েকটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। ইমাম ইবন কাসীর (রহ) রচিত তাফসীরকে যেহেতু আহলে হাদিস ভাইরা বিশুদ্ধতম তাফসীর হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে থাকেন, সুতরাং তাঁর আক্বীদায় ‘অবধারিতভাবে কুফর’ জাতীয় কিছু থাকার কথা নয়। তাছাড়া এমনিতেও ইমাম ইবন কাসীর (রহ) এর বিরুদ্ধে ‘অবধারিতভাবে কুফর’ এর অভিযোগ তোলার দুঃসাহস কোন সুন্নী মুসলমানের হওয়ার কথা নয়।

ইমাম ইবন কাসীর (রহ) সূরা বাকারা আয়াত ২৪৩ এর তাফসীরে উল্লেখ করেছেন- ইমাম ইবন কাসীর (রহ) এর ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ থেকে (ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত)- স্মরণ করুন, ‘সহীহ আক্বীদার মানদণ্ডে তাবলীগী নিসাব’এর লেখকের মতে, উম্মে কুলসুম (রাযি)এর সালাতের কারণে আল্লাহ তায়ালা তাঁর স্বামীর হায়াত এক মাস বাড়িয়ে দিয়েছেন, এই বিশ্বাস- • অবান্তর • আক্বীদাগত ভাবে চরম ভুল • অবধারিতভাবে কুফর এখন, ‘কারো ইবাদাত ও দুআর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কারো বিপদাপদ দূর করে দেন বটে, কিন্তু হায়াত বৃদ্ধি করে দেন না’ (পৃষ্ঠা ৫৮,৫৯)- মুরাদ সাহেবের এই উক্তি ও আক্বীদা যদি সঠিক হয়, স্ত্রীর সালাতের ফযীলতে স্বামীর হায়াত এক মাস বেড়ে যাওয়ার বিশ্বাস যদি হয় অবান্তর, আক্বীদাগতভাবে চরম ভুল এবং অবধারিতভাবে কুফরী (পৃষ্ঠা ৫৮), তবে তাঁর এ সমস্ত অভিযোগ কি নিচে উল্লেখিত ইমামদের ওপরও বর্তায় না? • ইমাম হাকিম (রহ), ইমাম আব্দুর রাজ্জাক (রহ), ইমাম যাহাবী (রহ), ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী (রহ) – হযরত উম্মে কুলসুম (রহ) এর ঘটনা (যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলোচ্য অভিযোগের সূত্রপাত) উল্লেখ করার কারণে। আর ইমাম যাহাবী (রহ) আর ইমাম হাকিম (রহ) তো এ ঘটনাকে বুখারী এবং মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ হিসেবে রায় দিয়েছেন। • ইমাম বায়হাকী (রহ) - হযরত উম্মে কুলসুম (রহ) এর ঘটনা (যা ফাযায়েলে আমালেও বর্ণিত), সালাত এবং দুআর কারণে মৃত ঘোড়া এবং গাধা জীবিত হওয়ার ঘটনা এবং এক আনসারী সাহাবীর মৃত্যুর পর তাঁর মায়ের দুআর কারণে তাঁর আবার জীবন লাভের ঘটনা উল্লেখ করায়। • ইমাম ইবন তাইমিয়া (রহ) - হযরত ওয়াসলা বিন আসিম (রহ) এর দুআর কারণে তাঁর মৃত ঘোড়া জীবিত হওয়ার ঘটনা এবং আরেক ব্যক্তির দুআর কারণে তাঁর মৃত গাধা জীবিত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করায়। • ইমাম ইবন কাসীর (রহ) – তাঁর তাফসীরে হযরত হিযকীল (আলাইহিস সালাম) এর দুআর কারণে এক মৃত গোত্রের পুনরায় জীবন লাভের ঘটনা, ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ য় সালাত এবং দুআর কারণে মৃত ঘোড়া এবং গাধা জীবিত হওয়ার ঘটনা এবং এক আনসারী সাহাবীর মৃত্যুর পর তাঁর মায়ের দুআর কারণে তাঁর আবার জীবন লাভের ঘটনা উল্লেখ করায়।

• প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম আবু বকর ইবন আবুদ দুনিয়া (রহ) - তিনি তো ‘মৃত্যুর পর জীবিত যারা’ নামে একটি বই-ই লিখেছেন। ইমাম ইবন কাসীর (রহ) ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ য় এ বইটির কথা উল্লেখ করেছেন এবং এ বই থেকে বিভিন্ন ঘটনাও বর্ণনা করেছেন। (খ-৬, পৃ-২৩০, ইফাবা) • যাঁরা উল্লেখিত ইমামদেরকে ভ্রান্ত আক্বীদার দোষে দোষারোপ করেন না, বরং হাদিস যাচাই- বাছাই এবং দ্বীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দেন এবং তাঁদের লিখিত বই পড়তে জনগণকে উৎসাহিত করেন। এরপর এ আক্বীদা সম্পর্কে ‘আক্বীদাগত চরম ভুল এবং অবধারিতভাবে কুফর’- এ মন্তব্যটি আরেকবার বিবেচনা করুন । শেষ করার আগে ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) এর একটি উপদেশ উল্লেখ করতে চাই।

আশা করি পাঠক তাঁর সম্পর্কে অবহিত আছেন। তিনি পিস টিভির অন্যতম প্রধান আলোচক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর ডাঃ জাকির নায়েক বলেছিলেন - ‘প্রথমে আহমেদ দীদাত (রহ) এর দ্বারা আমি প্রভাবিত হই। তাঁর কারণে আমি দাওয়াতী ময়দানে এসেছিলাম। ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) ছিলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি আমাকে বলেছিলেন, আপনি দুটি বিষয়ে (দাওয়াত ও চিকিতসাবিদ্যা) স্পেশালাইজড হতে পারবেন না।

........................ পিস টিভির উর্দু আলোচকদের মধ্যে তাঁর আলোচনা ছিল সবচেয়ে ভাল। (এরপর তিনি ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) এর সাথে তাঁর পরিচয় ও বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা বলেন। ) আমরা চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওনার যে সমস্ত পুরনো রেকর্ডিং আছে সেগুলোর কোয়ালিটি ইম্প্রুভ করে পিস টিভিতে সম্প্রচার করার। ’ ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) আলিমদের ব্যাপারে বেপরোয়া ভাবে বাজে মন্তব্যকারীদেরকে সতর্ক করেছেন। কিন্তু আফসোস! তাঁর এ সুন্দর কথাগুলোকে এক উর্দুভাষী ব্যক্তি তাঁরই ওপর শিরকী আক্বীদার অপবাদ লাগানোর কাজে ব্যবহার করেছে।

নিচে যে লিঙ্ক দেয়া হয়েছে তা ঐ ব্যক্তির বক্তব্যের লিঙ্ক। এর ১ ঘণ্টা ৯ মিনিট থেকে ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) এর বক্তব্য আছে। ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) এর এই বক্তব্যের অন্য কোন ভিডিও আমার পক্ষে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এই লিঙ্ক দিতে হল। যা হোক, ডঃ ইসরার আহমেদ (রহ) এর বক্তব্য (১ ঘণ্টা ৮ মিনিট থেকে) “শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ) মুশরিক হতে পারেন না, মাওলানা রূমী (রহ) মুশরিক হতে পারেন না।

যদি ইনারা মুশরিক হন, তবে আপনি তাওহীদপন্থী কোথা থেকে খুঁজে আনবেন? এগুলো মাথা থেকে পুরোপুরি বের করে দেয়া উচিত; এর জন্যই আমি এত পরিশ্রম করেছি। আসলাফের ব্যাপারে এ ধরণের বাজে মনোভাব সহজে মানুষকে ছাড়ে না। নিজের ইলমের কমতি, বুদ্ধির কমতি, এসব বিষয়ের সাথে গভীর পরিচয় নেই, এসব বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা নেই, আর সেজন্য শিরকের ফতোয়া লাগানো হচ্ছে শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ) র ওপর, মাওলানা রূমী (রহ)র ওপর। ” নিঃসন্দেহে আল্লাহ ছাড়া হেদায়েত দানকারী কেউ নেই। যদি এ লেখার সাথে একমত হন, তবে শেয়ার করতে থাকুন।

বি. দ্র. : মন্তব্য করার সময় তা যাতে পোস্টের বিষয়বস্তুর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।