আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পোশাকশিল্পের অস্থিরতা

পোশাকশিল্পের অস্থিরতা জাতীয় জীবনে গভীর সংকট সৃষ্টি করছে। এমনিতেই নির্বাচনী প্রতিক্রিয়া নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মতপার্থক্য অশনি সংকেত হয়ে বিরাজ করছে। এ অবস্থায় ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাকশিল্পের অস্থিরতা 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পোশাকশিল্পে অস্থিরতার পেছনে মালিকপক্ষের অনুদার মনোভাবই মূলত দায়ী। এই অনুদার মনোভাব মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে যে অনতিক্রান্ত দূরত্ব সৃষ্টি করেছে, তা পোশাকশিল্পের স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক নয়।

শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের অনুদার মনোভাব শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং এই ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ ঘটছে গার্মেন্ট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়। গার্মেন্ট শিল্প ৪০ লাখ মানুষের জীবিকার ঠিকানা হলেও সে অর্থ দিয়ে অন্য খরচ নির্বাহ দূরের কথা রাজধানীর বস্তি এলাকায় একটি রুম ভাড়া পাওয়াও দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। কম্বোডিয়া ও নেপালের মতো দুর্বল অর্থনীতির দেশের পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাংলাদেশের শ্রমিকদের চেয়ে অনেক বেশি। সে সব দেশে গার্মেন্ট মালিকরা যদি শ্রমিকদের জন্য সম্মানজনক মজুরি দিতে পারেন, তবে বাংলাদেশে কেন দেওয়া সম্ভব হবে না তা আমাদের বোধগম্য নয়। পোশাকশিল্পের মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে মালিকপক্ষকে যুক্তিগ্রাহ্য ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পোশাকশিল্পের অশান্ত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ফায়দা ওঠানোর জন্য বিভিন্ন মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের কেউ কেউ শ্রমিকদের শিখণ্ডী হিসেবে ব্যবহারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা মনে করি, এই অপচেষ্টা দেশের অর্থনীতির জন্য যেমন বিসংবাদ সৃষ্টি করছে, তেমনি রাজনীতির জন্যও সৃষ্টি করছে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত। রাজনীতির স্বার্থে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী খাত তৈরি পোশাকশিল্পে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাজতে হবে। আমরা মনে করি, পোশাকশিল্পে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের একযোগে কাজ করতে হবে।

যথা- দ্রুত মজুরি কাঠামো ঘোষণার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে সময়ক্ষেপণ বিভেদকারী শক্তিকেই শুধু মদদ জোগাবে- যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।