আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘সংসদ সদস্যপদ হারাচ্ছেন সাকা চৌধুরী’

সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের বলা হয়েছে, কোনো সংসদ সদস্য নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে অন্যুন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি সদস্য থাকার যোগ্যতা হারাবেন।
ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের সংসদ সদস্যপদ আর থাকছে না, বলেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন।
বিএনপি নেতার সংসদ সদস্যপদ খারিজের প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে ইসির করার কিছুই নেই এখন; সংসদই ব্যবস্থা নেবে। সংসদ পরবর্তীতে ইসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলবে। ”
একাত্তরে গণহত্যার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর সালাউদ্দিন কাদেরের সদস্যপদ থাকা না থাকা নিয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।


বর্তমান নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা সংসদের দিকে তাকিয়ে আছেন।
“এখনো তো বিষয়টি শেষ হয়ে যায়নি। চূড়ান্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন দেখা যাবে,” বুধবার সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি।
মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন কাদেরের পরিবারের সদস্যরা ইতোমধ্যে বলছেন, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবে তারা।


চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের এনিয়ে ষষ্ঠবারের মতো সংসদে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। জাতীয় পার্টির আমলের মন্ত্রী সালাউদ্দিন বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হলফনামার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে অসত্য তথ্য দেয়ায় সালাউদ্দিন কাদেরের সদস্যপদ খারিজে স্পিকারকে ইসি অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তবে পরে তা আর এগোয়নি।
ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা সাখাওয়াত বলেন, “সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আমরা আসন শূন্য করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। স্পিকারকে তা জানিয়েছিলামও।

কিন্তু আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে তা আর হয়নি। ”
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল বা আদালতের দেয়া আদেশ অনুসারে ইসি আসন শূন্য করার গেজেট প্রকাশ করে জানিয়ে তিনি বলেন, নবম সংসদে ভোলা, টাঙ্গাইলে আসন শূন্য ঘোষণা করে ইসি গেজেট প্রকাশ করে। মহীউদ্দীন খান আলমগীরের আসনও শূন্য করা হয়েছিল, তবে আদালতের স্থগিতাদেশে ইসির কার্যক্রম এগোয়নি।
সালাউদ্দিন কাদেরের আসন শূন্য করার প্রক্রিয়ার বিষয়ে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সংসদ ব্যবস্থা নিতে [আসন শূন্য করতে] না চাইলে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী কমিশনও ব্যবস্থা নিতে পারে। এক্ষেত্রে সংসদকে বলতে পারে ইসি।


সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি সদস্য থাকার অযোগ্য হবে কি না, স্পিকার তা জানতে বিষয়টি ইসিতে পাঠাবে। ইসি সিদ্ধান্তে অযোগ্য হলে আর সদস্য থাকতে পারবেন না ওই সংসদ সদস্য।
পরে সংসদ সচিবালয় গেজেট বিজ্ঞপ্তি করে শূন্য পদ পূরণে ইসিকে ব্যবস্থা নিতে বলবে।
কারো সদস্যপদ হারানোর বিষয়টি স্পিকার সংসদকে জানাবেন। সংসদ অধিবেশনে না থাকলে পরবর্তী অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে হবে।


বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী ওই সময়ের আগে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা থাকায় সালাউদ্দিন কাদেরের সদস্যপদ শূন্য হলেও উপনির্বাচনের বাস্তবতা নেই বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।
সালাউদ্দিন কাদেরের এই সাজার মধ্যেই সংসদের চলতি অধিবেশনে যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের বিল সংসদে উঠেছে।
এই বিলটি পাস হলে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আপিল বিভাগে সালাউদ্দিন কাদেরের সাজা বহাল থাকলে এই বিএনপি নেতার পক্ষে পরবর্তী নির্বাচনেও অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে না।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।