আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পারলে না............।

কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে

মুঠো ফোনের আয়নায় আলোর কাঁপন থেকে চোখ ফেরালাম । হাত ঘড়িতে সময় এখন সকাল ১১। ৩০ ...... তারমানে দেশে এখন মধ্যরাত , মা ঘুমে.. বড় কোন বিপদ না হলে কল করবেন না । মুঠো ফোন এর চোখ নাচানি কে অনায়েসে অবহেলা করা যায় । দূরে কোথাও থেকে তেজপাতা ঘ্রান মেশানো বাতাস আছড়ে পরছে আমার নাকে ।

একটু না বেশ খানিক টা অবাক হয়ে জোরে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলাম আবার ...। । আশ্চর্য সত্যি ই তাজা সবুজ তেজপাতার সুবাস । পৃথিবীর অপর প্রান্তে ফেলে আসা ,আমার লেখা লিখির একনিষ্ঠ শ্রোতা,একমাত্র প্রিয়বন্ধু ফরেস্ট একাডেমীর তেজপাতা গাছ সৃতি তে উকি দিল । অধিকাংশ সময় দিনের এই প্রহরে ই সবচাইতে বেশি কাছে পেতাম ওকে ।

কিন্তু এখন তো ওখানে রাত ? নাহ মাথা কিছুতেই কাজ করছে না , পাশ কাটিয়ে না গিয়ে দরুন মুগ্ধতায় সুবাস টা কে আপন করে নিয়ে হাতের কাজে মনোযোগ দিলাম । তিন টা ব্লগে বেশকিছু গল্প পূর্ণতার অপেক্ষায় , যা আমার হৃদয় এর খোরাক । কয়েকজন নাট্যকার এর সাথে আলোচনা চলছে ,গল্প পরিমার্জন করে নাট্যরূপ দেয়ার। তবে স্বস্তির কথা এই যে চলচ্চিত্র কাহিনী টা আপাতত কোনোমতে দাড় করানো গেছে। জী মেইল এর চিঠি গুলো খোলা হয়নি ,ইয়াহু আমাকে লাল ঝান্ডা উড়িয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছে ,অনেক গুল প্রিয়মুখের ,প্রিয়কিছু বার্তা জমে আছে সেখানে ।

হটমেইল কে বিদায় জানিয়ে , লিঙ্কডিনের রক্ত চক্ষু কে ভেংচি কাটলাম । কিন্তু শখ করে যে ফেসবুক কে আলিঙ্গন করলাম ,সেখান থেকে মুক্তি র পথ হারিয়েছি আমি । মুখবই এর আট জানালায় দুইটা গ্রুপ মেসেজ আর ছয় জন ভিন্ন জগতের শুভাকাঙ্ক্ষীর , শুভকামনা র প্রাপ্তি আমাকে ঘুমের জগতে সপ্নবিলাসে ঠেলে দিচ্ছে সব গুলো জানালাতে একটা মেসেজ ই কপি পেস্ট করলাম। সপ্তাহের এই একটা ছুটির দিন নিজের মত পাগলামি করার একটা পাগলা ইচ্ছে আমাকে তাড়া করতেই , হোম থিয়েটারে মুভি চালু করলাম ,গঙ্গা ফড়িং ইচ্ছের রাশ টানতে ,হাসির ছবি ই সেরা মনে হল। ফেসবুক এর গোপন সংবাদদাতা টিকটিকি খান টিক টিক করাতে অনিচ্ছা সত্ত্বে ও গ্রুপ মেসেজে ওপেন করতে হল, " এটা আমাদের কাছা কাছি মনন এর তিন জনের সময়ে অসময়ে ভাললাগা গুলোর নিরাপদ আশ্রয়" ।

এই গ্রুপ মেসেজ এ আমরা তিন জন আছি ,১আমি ২আমার উপর সারাক্ষন বিরক্ত থাকা , আমার লেখার চমৎকার বিশ্লেষক, প্রিয়ব্লগার একজন , আর অন্যজন একজন বড় আপু । এই মুহূর্তে যদিও মিহিসুরে আমার ইচ্ছা আমাকে জানান দিচ্ছে এখানে আসা চলবে না । তারপর ও বলতে দ্বিধা নেই এরা আমার জীবনের এই এপিসোডে সহ শিল্পীর ভুমিকায় চমৎকার ভাবে সহয়তা করে যাচ্ছেন । মেসেজ আসলো.....................। ।

" ফোন রিসিভ করছ না কেন ? " নাম্বার এর সাথে সেভ করা নাম দেখে বিট মিস হোল ... কয়েকবার এর চেষ্টা তেও কল রিসিভ করার সাহস সঞ্চয় করতে পারলাম না , প্রতিবার আলোর নাচন এর সাথে ভেসে আসা নাম টা আমাকে ,অতীতের অতল জলে আহ্বান করছিল । ওর সীমানায় ঘিরে থাকা ,যে কেউ এভাবে আমার এই প্রতি দিনের রবোটিক জীবনধারা থেকে,কিছুক্ষনের জন্য হলেও অসময়ের বৃষ্টিতে ভেজার মত আনন্দিত করে তোলে । আর এই আপু তো সবচাইতে কাছের প্রিয়জন ই ছিলেন ,রুম মেট ছিলেন রোকেয়া হল এ । এত বছর পর ও ছবি দেখে ঠিক চিনে নিয়েছিলাম । আপু র আমাকে চেনার কথা না , অজান্তে যদি ,কোনভাবে প্রকাশ হয়ে যায় , তা ছাড়া অযৌক্তিক এক অভিমান আমাকে পেয়ে বসল ......... এত দিন পরে কেন ? চোখ বন্ধ করে মুখ বই ফেলে মনবহি তে চলে গেলাম ,যেখানে লগ ইন করতে লাগে না কোন মেইল ঠিকানা বা গোপন সংখ্যা , যেখানে ছবিগুলো সবসময়ই অনলি মি করা ।

বন্ধুর তালিকায় আছে সুধু এক আই ডি ............ মনের এ্যালবামে কভার পিকে বাধ ভাঙা হাসির জোয়ারে আপুর হাত ধরে উড়তে থাকা দুইজনের মুখ ভেসে উঠল ,সত্যি এতটা উচ্ছল ,প্রাণবন্ত আফুরন্ত প্রাণশক্তি নিয়ে চলা পজিটিভ কাউকে ভালবাসতে পেরে ,আমি পূর্ণ । ছবি তুলতে যেয়ে ক্যামেরার চোখে সেতু কে দেখেছি প্রথম " এইচ এস সি তে জাতীয় মেধা তালিকায় থাকা ছাত্র ছাত্রী দের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে " । ওর সার্টিফিকেট গ্রহন এর ছবি সহ একদিন কোচিং এ দেখা করে এসছিলাম, বিশাল ফ্রেমে বাধানো ছবি বিস্ময়ে বোবা হয়ে দেখতে যেয়ে ,আনমনে ছুয়েছিল আমার হাত । ," একটুকু ছোঁয়া লাগে একটুকু কথা শুনি ,তাই নিয়ে মনে মনে রচি মম ফাল্গুনী "তে ই কেটে যাচ্ছিল আমার উন্মাতাল দিন গুলো। প্রতিটা পদক্ষেপ জেনে নিতে খুব বেশী সময় লাগেনি ।

পরিবারের ইচ্ছা কে বিসর্জন দিয়ে সবার অমতে সুধু মাত্র ওকে কাছে পাব ভেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ চলে এলাম । কমার্স ফ্যাকাল্টি ,হয়ে উঠলো আমার নিজস্ব প্রাঙ্গণ । দূরে নিরাপদ দূরত্ব থেকে , ভালোবাসে গেলাম একটু ও ফুসরত মিলল না । অন্যদিকে আমার মত সাধারণ এক মুখচোরা ,বিভিন্ন সাপ্তাহিক এ গল্প লেখা একজন কে সৃতি ঘেটে চিনে নেবার সামান্য সময় ও যে সেতু দের কাছে থাকতে নেই। কে ই বা না জানে সে কথা ।

এই গল্পের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক ,ব্লগের ভিতরে ,বাইড়ে , জীবিত মৃত , ব্লগার , ফেসবুকার কার সাথে কোন সম্পর্ক নাই , যদি সামান্য তম মিল ও কেউ খুজে পেয়ে থাকেন, তবে সেটা জার জার নিজস্ব কল্পনা হিসেবে বিবেচিত হইবে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.