আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুমিনদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে

ইসলাম অপর মানুষের মনে আঘাত দেওয়ার প্রবণতাকে নিরুত্সাহিত করেছে। ইসলামের এই দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে কবির ভাষায়— ‘কারও মনে দিও না ব্যথা, যে ব্যথা লাগে কাবার গায়’। পবিত্র কোরআনে বিনা অপরাধে কোনো মুমিন নর-নারীকে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। এক মুমিনের প্রতি অন্য মুমিনের সহানুভূতিশীল হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন— ‘যারা বিনা অপরাধে মুমিন নর-নারীদের কষ্ট দেয়, তারা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।

’ —সূরা আহযাব-৫৮মানুষ মাত্রই একে-অপরের ভাই। পৃথিবীর সব মানুষই আদমের সন্তান। আমাদের সবারই পূর্বপুরুষ হজরত আদম (আ.) এবং বিবি হাওয়া। আদম হাওয়ার সন্তান হিসেবে মুমিনদের জন্য ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরালো করা ইমানী দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনের সূরা আশ-শুআরা’র  ২১৫ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন : ‘এবং আপনার অনুসারী মুমিনদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করুন।

’ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একাধিক হাদিসেও পরস্পরের প্রতি সহনুভূতিশীল হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

বোখারী শরীফে হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আল্লাহপাক বলেন : যে লোক আমার কোনো প্রিয়জনকে কষ্ট দেয়, তার বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে রেখেছি। আর এক হাদিসে বর্ণিত আছে, একবার আবু সুফিয়ান, হজরত সালমান সুহাইব ও হজরত বেলাল (রা.) এই তিনজন একদল সাহাবার কাছে আগমন করলে ওই তিনজন সাহাবা (রা.) মন্তব্য করলেন : ‘আল্লাহর তরবারিগুলো আল্লাহর দুশমনদের থেকে যথোপযুক্ত প্রতিশোধ গ্রহণ করেনি। ’ এ কথা শুনে হজরত আবু বকর (রা.) বললেন : কুরাইশ বংশীয় সম্মানীয় এক নেতার ব্যাপারে তোমরা এ ধরনের অভিমত ব্যক্ত করলে? অনন্তর তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে এসে পুরো বিষয়টি খুলে বললেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন : আবু বকর! ‘সম্ভবত তুমি ওই তিনজনের মনে ক্ষোভ জন্ম দিয়ে এসেছ।

আর তাই যদি হয়, তবে আল্লাহকেও ক্ষুব্ধ করেছ। ’ হজরত আবু বকর (রা.) সঙ্গে সঙ্গে ওই তিনজনের কাছে গিয়ে বললেন : ‘ভাইয়েরা! তোমরা কি আমার কথায় মনে কষ্ট পেয়েছ?’ তারা বললেন : ‘না ভাই, আল্লাহপাক আপনাকে মাফ করে দিন। ’

উপরোক্ত হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, রাসূলুল্লাহ (সা.) হজরত আবু বকর (রা.)-এর মতো শীর্ষ সাহাবিকেও কারও মনে ন্যূনতম কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে উত্সাহিত করেছেন। ইসলামী সমাজ পবিত্র কোরআন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মানবতাবাদী ও ভ্রাতৃত্ববন্ধনের শিক্ষায় গড়ে ওঠায় তা মুসলমানদের অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত করে। তারা ইতিহাসের নিয়ামক শক্তিতে পরিণত হয়।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার তওফিক দান করুন। আমিন।  

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।