আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখন অপেক্ষা হোয়াইটওয়াশের

মুক্তবাজার অর্থনীতিতে প্রতিটি পণ্যের বিজ্ঞাপনেই চমকপ্রদ একটি বিষয় উপস্থাপিত হয় খুব বেশি, তা হলো একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি। বিজ্ঞাপন দাতারা ফ্রির কথা বলেই গ্রাহকদের মনোযোগ আকৃষ্ট করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিংয়েও যেন এই ফ্রির প্রভাবটা পড়েছে ব্যাপকভাবে। একটি উইকেট পড়লে আরেকটি ফ্রি! ৩৭তম ওভারে অধিনায়ক মুশফিক আউট। ৩৮তম ওভারেই বিদায় নেন নাঈম ইসলাম।

পরের ওভারে নাসির হোসেনের উইকেটটি হারায় বাংলাদেশ। আর শেষ দিকে তো ফ্রির (উইকেট পতন) ছড়াছড়ি। ৪৬তম ওভারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ৪৭তম ওভারে মাশরাফি বিন মর্তুজা, ৪৮তম ওভারে সোহাগ গাজী, আর ৪৯ ওভারে রুবেল হোসেন। ছয় বল থাকতেই গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। তারপরও টাইগাররা ২৪৭ রানের বড় স্কোরই গড়ে কাল মিরপুরের শেরেবাংলায়।

যা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর টাইগারদের।

গতকাল টস জিতে মুশফিকের ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটি বড় বিস্ময়ের! কেননা কার্তিকের রাতে প্রচুর পরিমাণে শিশির পড়ে। রাতে মাঠ ভিজে যায়। বল পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় গ্রিপে নেওয়াই কঠিন। ফিল্ডারদের জন্য তো বটেই, বড় চ্যালেঞ্জটা স্পিনারদের।

ভেজা বল ঘুরানো তো আর চাট্টিখানি কথা নয়; তাই টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্তটা কতটা সঠিক তার উত্তর একমাত্র মুশফিকই দিতে পারেন! অবশ্য প্রথমে ব্যাটিং নেওয়ার একটা ব্যাখ্যা পাওয়া গেল ক্রিকেটবোদ্ধাদের কাছে। 'খেলা যেহেতু আগের উইকেটে, তাই পেসকে কাজে লাগাতেই হয়তো মুশফিক পরে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ' তাছাড়া এই উইকেটটি যে পেসারদের জন্য সহায়ক তা প্রথম ম্যাচ জয়ের পরই বলেছিলেন অধিনায়ক। যদি তাই হয়, তবে দলে কেন তিন পেসার নেওয়া হলো না? সবকিছুর পরও ম্যাচের ফলই আসল। জিতলে আর কোনো প্রশ্ন থাকে না, হারলেই যা সমস্যা! মিরপুরের উইকেটে ২৪৭ রান মন্দ স্কোর নয়।

তবে চ্যালেঞ্জিং বলাও কঠিন। দুর্দান্ত শুরুর পর মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের স্কোরটা বোধ হয় তিনশর কাছাকাছিই যাবে। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৩ রান। দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটেছে ১১০ রানের মাথায়। তারপরও কিনা এক ওভার আগেই অলআউট! উইকেটে এমনিতেই সুইং নেই।

ব্যাটসম্যানরা উপহার না দিলে দিনেরবেলা উইকেট পাওয়া তো পেসারদের জন্য দুর্গমগিরি অতিক্রম করার চেয়েও কঠিন। অথচ তরুণ দুই কিউই পেসারই বাংলাদেশকে আটকে দিল। ২৩ বছর বয়সী বাম হাতি পেসার কোরি এন্ডারসন ৪০ রানে চার উইকেট নিয়ে করেছেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। অথচ এটি ছিল তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচ। চার উইকেট নিয়েছেন আরেক পেসার জেমস নিশামও।

২৩ বয়সী এই বোলারের অভিজ্ঞতাও তো বেশি নয়, এটি ছিল তার পঞ্চম ম্যাচ।

কালকের ম্যাচটি শামসুর রহমান শুভর জন্য ছিল 'বিশেষ কিছু'। বাংলাদেশের ১০৮তম খেলোয়াড় হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হলো এই ওপেনারের। কিন্তু শুভর শুরুটা যে মোটেও শুভ হলো না! ৫৪ বল খেলে ২৫ রান করে আউট। ভালো তো নয়ই ওপেনারের জন্য ওয়ানডেতে ৪৬.২৯ স্ট্রাইক রেটটা দেখতেও অশোভন।

তবে শুভ না পারলেও আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল কাল ঠিকই হাফ সেঞ্চুরি আদায় করে নিয়েছেন। এন্ডারসনের শিকার হওয়ার আগে ৮৬ বল খেলে ৫৮ রান করেছেন তিনি। সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কাল তিনি আউট হয়েছেন মাত্র ৩১ রান করে। নাঈম শুরুটা করেছিলেন আগ্রাসীভাবেই।

কিন্তু তার ইনিংসটাও বড় হয়নি। সাজঘরে ফিরেছেন দলীয় খাতায় মাত্র ১৬ রান যোগ করেই। নির্ভরতার প্রতীক নাসির হোসেন এ ম্যাচেও ব্যর্থ। তবে সপ্তম উইকেট জুটিটা জমে উঠেছিল। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সোহাগ গাজী মিলে ৪৩ বলে ৪৮ রান যোগ করেন।

কিন্তু শেষ দিকে যেন উইকেট হারানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শেষ চার ওভারে চার চারটি উইকেট না পড়লে হয়তো বাংলাদেশের ইনিংসটা আরও বড় হতো। তারপরও মিরপুরের এই বৈচিত্র্যময় উইকেটে ২৪৭ রানই বা কম কিসে!

এ রান টপকাতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখে সিরিজ নিশ্চিত করেছে মুশফিক বাহিনী। এখন শুধু অপেক্ষা হোয়াইটওয়াশের।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।