আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আটকে গেছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক সহায়

বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, জাইকাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের প্রতিশ্রুতির প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড় করতে পারছে না সরকার। প্রশাসনিক দুর্নীতর অভিযোগ, প্রশাসনিক অদক্ষতা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, দফতরের সমন্বয়হীনতার কারণে বিপুল পরিমাণ এ বৈদেশিক সহায়তা ও ঋণ আটকে আছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয় গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার চুক্তি বাতিল করেছে দাতারা। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরতও চলে গেছে। শুধু পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকেই বিশ্বব্যাংক প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। যদিও শর্তসাপেক্ষে পরে ওই পরিমাণ অর্থ অন্য প্রকল্পে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা (জাইকা), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকসহ (আইডিবি) ৩২টি দাতা সংস্থার অনেকেই প্রতিশ্রুত ঋণ বা সহায়তার প্রস্তাব ফিরিয়ে নিয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অদক্ষমতা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েনের কারণেই প্রতিশ্রুতির এই অর্থ ছাড় করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতাও রয়েছে বলে মনে করে অর্থ মন্ত্রণালয়। কেননা সরকারের নেওয়া বিভিন্ন আর্থিক সংস্কার কার্যক্রমের আপডেট সম্পর্কে সঠিক সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের অবহিত করা হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীরাও চুক্তি অনুযায়ী ঘোষিত সময়ের মধ্যে অর্থ ছাড়ে আগ্রহ দেখায় না। ফলে বছরের পর বছর প্রতিশ্রুতির এই অর্থ আটকে থাকে পাইপ লাইনে। ইআরডি সূত্র জানায়, আর্থিক খাতের সংস্কার কার্যক্রমে ধীরগতি প্রশাসনিক অদক্ষতা সর্বশেষ পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগের কারণে উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে টানাপড়েন চলছে। এ কারণে গত ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২৯৮ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে অর্থ ছাড় হয়েছে ২২২ কোটি ডলার। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে ৫৯৬ কোটির বিপরীতে ছাড় হয় মাত্র ১৭৭ কোটি ডলার। ২০১১-১২ অর্থবছরে ৪৭৬ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও পাওয়া যায় মাত্র ২১২ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০১২-১৩ অর্থবছরেও একই অবস্থা বিদ্যমান ছিল। সে বছর প্রতিশ্রুতির অর্ধেক অংশই ছাড় করা সম্ভব হয়নি। ফলে বর্তমানে পাইপলাইনে রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার ৮৫৬ কোটি ডলার বা (১৪ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা) আটকে রয়েছে।

সূত্র জানায়, দুর্নীতি রেশ ধরে চলতি অর্থবছরেও উন্নয়ন সহযোগীরা সময়মতো অর্থ ছাড় করছে না। সরকারও তাদের সঙ্গে যথোপযুক্ত আচরণ করতে পারছে না। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মোট প্রতিশ্রুতির ৪২ কোটি ২৭ লাখ ডলার ছাড় করেছেন। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এমন কি নানা কারণে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ২০১০ সালের পর এতে সরকার বা উন্নয়ন সহযোগী কেউই আগ্রহ দেখায়নি।

এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, বাস্তবায়ন অক্ষমতার অভিযোগ এনে বড় অঙ্কের অর্থায়ন বাতিল করেছে উন্নয়ন সহযোগীরা। গত ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাতিল হয় প্রতিশ্রুতির ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৮ কোটি ৪০ লাখ, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১০৮ কোটি ৭০ লাখ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৫০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরেও ১৫ কোটি ডলার বাতিলের ঋণচুক্তি বাতিলে করেছে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি। এ ছাড়া আরও কয়েকটি প্রকল্পের ঋণচুক্তি বাতিলের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.