আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডুবন্ত ভেলা

মনের জানালা কয়দিন ধরেই অয়ন অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্ন গুলো প্রায় একইরকম । আজকেও তেমন একটি স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙ্গে অয়নের। স্বপ্নে সে দেখতে পাচ্ছে একটি প্রায় ডুবন্ত ভেলায় সে কোনরকমে ভেসে আছে, কাছাকাছি একটি নৌকা থেকে একজন লোক তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। স্বপ্ন তো স্বপ্নই এ আর এমন কি।

হাত মুখ ধুয়ে শেভ করে নাস্তা করতে বসলো সে। আজ তার সপ্তম ইন্টারভিউ। সব কিছু ঠিক থাকলে এই চাকরিটা তার হবার কথা। কারণ চাকিরদাতা তার বন্ধুর কি যেন হয়। কি যেন হয় এইটাই আশার বানী।

এর আগের যে সব জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছে সেখানে কি যেন হয় এইসব কোন ব্যাপার ছিল না। কিন্তু এখন আছে। সময়ের অনেক আগেই সে পৌছায় অফিসে, যেখানে তার ইন্টারভিউ হবে। মনে মনে আজকের স্বপ্নটাকে ধন্যবাদ দেয় সে, স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গেছে বলেই অনেক আগে পৌঁছাতে পেরেছে। নয়তো তার যে ঘুম তার উপর রাস্তার জ্যাম।

ইন্টারভিউ ভাল হয় অয়নের, চাকরিটাও হয়ে যায়। নিজের জমানো টাকা দিয়ে সে বন্ধু রিফাতকে শিক কাবাব আর পরোটা খাওয়ায়, বেতন পাবার পর আরো ভাল কিছু খাওয়াবে এমন আভাসও দিয়ে রাখে। সামনেই তার এই বন্ধুর বিয়ে, ভাল দেখে গিফটও কিনতে হবে তার জন্য। তার এই বিপদে বন্ধুটি না থাকলে কি যে হত। অথচ সে তার জানের বন্ধু না , অনেক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং এ পরিচয় হয়েছিল, এরপর আর যোগাযোগ ছিল না।

আজ অনেকদিন হল অয়নের সাথে দিপার যোগাযোগ নেই। ঠিক যোগাযোগ নেই তা বলা যাবে না, দিপা অনেকবার ফোন করেছে অয়নকে কিন্তু সে রিসিভ করে নাই। দিপাকে চমকে দেবার জন্য অয়ন নিজের ভেতর ছটফট করতে থাকে। ফোন করা উচিত হবে না , অনেক কিছু ফোনে বলা যায় না, দেখা যায় ফোনের বিপরীতে যে থাকে হুট করে ফোন রেখে দেয়। এবার দিপাকে হুট করে ফোন রাখার সুযোগ দিতে চায়না অয়ন।

দেখা করতে হবে যেকোন উপায়ে। দিপার বান্ধবী সামিয়াকে দিয়ে ফোন করায় অয়ন। ঠিক হয় শপিং মলে সামিয়া দিপার জন্য অপেক্ষা করবে, দিপা আসা মাত্র আড়াল থেকে অয়ন এসে দিপাকে চমকে দেবে। কিন্তু চমকে যায় অয়ন নিজেই। আবারও স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙ্গে অয়নের।

এবার স্বপ্নটাকে শুধু স্বপ্ন না দুঃস্বপ্ন বলতে চায় সে। স্বপ্নে সে আবারও দেখতে পাচ্ছে একটি প্রায় ডুবন্ত ভেলায় সে কোনরকমে ভেসে আছে, কাছাকাছি একটি নৌকা থেকে একজন লোক তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু নৌকায় লোকটি একা নয়, নৌকায় তার সাথে থাকা মেয়েটিকে তো এবার দিপার মতই লাগছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।