আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের সম্ভাবনা নিয়ে দুটো প্রশ্ন

আমরা এমন একটা পরিবেশ চাই, যেখানে শিশুরা তাদের পছন্দ-অপছন্দের ধাপগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে বড় হবে।

===ফয়সল সাইফ=== (১) বিবর্তনবাদ অনুযায়ী একটি প্রাণী থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে অন্য একটি প্রাণী এসেছে। মানে ভাল্লুক বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অবশেষে তিমিতে রুপান্তরিত হয়েছে। এটা আমি বলছি না, এটা প্রজাতির উৎস বইতে ডারউইন লিখেছেন। তো এই বিবর্তন প্রক্রিয়াটা আবার খুবই ধীর গতিতে সম্পন্ন হয়।

আপনি যদি কোনো বিবর্তনবাদীকে প্রশ্ন করেন, যে আপনি কেন কোনো প্রাণীর বিবর্তন প্রক্রিয়ার স্বাক্ষী হচ্ছেন না। তাহলে, সে বলবে- আপনার ছোট জীবন এই বিরাট প্রক্রিয়াটা দেখার জন্য যথেষ্ট নয়। মানে এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তো এই সময় সাপেক্ষ ব্যাপারটাতে থাকে একটা বিরাট পরিবর্তন কাল। ধরুন, এই পরিবর্তন কালের বিরাট সময়টা জুড়ে, ধীরে ধীরে শিকারের খোঁজে একটা ভাল্লুক পানিতে নামতে নামতে, অবশেষে নতুন একটা প্রজাতি ‘তিমি’ হয়ে গেল।

কিন্তু এই মধ্যবর্তী সময়ে সে ছিল, না ভাল্লুক-না তিমি। বিবর্তন প্রক্রিয়াটা যেহেতু দীর্ঘ একটা অবিরাম প্রক্রিয়া, সেহেতু এই সময়ের মধ্যে উক্ত ভাল্লুকের নানা রূপ ধারণ করার কথা। এর ফলে ভাল্লুক আর তিমির মাঝামাঝি পর্যায়ের প্রচুর প্রাণীর জন্ম-মৃত্যু সংঘটিত হওয়ার কথা। বিবর্তনবাদীরাও এ ব্যাপারে একমত হবেন। তো যদি সত্যিই ব্যাপারটা এভাবে ঘটে থাকে, তাহলে প্রত্যেক প্রাণীর যোগফল মিলিয়ে তাঁরা সংখ্যা ও বৈচিত্রে হতো মিলিয়ন মিলিয়ন।

আর কি আশ্চর্য! এখনো পর্যন্ত এমন একটা অদ্ভুত প্রাণীরও ফসিল রেকর্ড কোথাও নেই!!!!! তাহলে সব কি মারা যাওয়ার পর হাওয়া হয়ে গেছে? (২) মানুষের প্রযুক্তিজ্ঞান অসাধারণ। জাদু শক্তিকেও হার মানায়। সাধারণভাবে আপনি ভাবতেই পারবেন না, যে একটা নভোযান কী করে চাঁদে চলে যায়। কী করে একটা বিমান আকাশে ঊড়ে। কী করে মানুষ মুঠোফোনে নাম্বার ডায়াল করে নির্দিষ্ট ব্যাক্তির সাথে কথা বলে।

কী শক্তিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে পড়েছে গোটা দুনিয়া। ভাবলে সবকিছুই জটিল লাগে। কিন্তু এর চেয়েও একটি জীবকোষের গঠন বেশি জটিল। প্রযুক্তির এই সোনালী সময়ে, পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ল্যাবরেটরীতেও অজৈব বস্তুগুলোকে এক করে একটা জীবকোষ তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ একটা জীবকোষ তৈরীতে প্রয়োজনীয় শর্তের পরিমান এত বিপুল, যে এটাকে যুগপৎ ঘটনায় সংঘটিত হওয়ার ব্যাখ্যা দেওয়া পাগলামী।

একটি কোষের গঠন কাঠামোতে যেসব প্রোটিন ব্লক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাঁদের প্রতিটি অ্যাভারেজে ৫০০ অ্যামাইনো এসিড নিয়ে গঠিত। যুগপৎভাবে সংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় সে প্রোটিনগুলোর তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা ১০৯৫০ ভাগের একভাগ। অথচ আমরা জানি গাণিতিকভাবে ১০৫০ ভাগের চেয়ে কম কিংবা ক্ষুদ্রতর যেকোনো সম্ভাবনা বাস্তবে অসম্ভব। তা ছাড়া কোষের কেন্দ্রে অবস্থিত ডিএনএ একটি অবিশ্বাস্য ডাটা ব্যাংক। ডিএনএ বংশগতির সব তথ্যাবলী বহন করে।

গুনে দেখা গেছে, যে ডিএনএ তে যে পরিমাণ তথ্যাদি সংকলিত আছে তা যদি লিখে রাখার চেষ্টা করা হয়, তাহলে ৯০০ ভলিউম এনসাইক্লোপেডিয়ার এক বিশালাকায় লাইব্রেরী তৈরী করতে হবে। যেখানে প্রতি ভলিউম এনসাইক্লোপেডিয়ার জন্য ৫০০ পৃষ্ঠা বরাদ্দ থাকে। উল্লেখ্য ডিএনএ কেবলমাত্র বিশেষ ধরণের কিছু প্রোটিনের (এনজাইম) সহায়তায় বিভাজিত হয়। আবার এ এনজাইমগুলো সংশ্লেষনের মাধ্যমে তৈরী হওয়ার যাবতীয় তথ্যাদি ডিএনএ’র গায়ে সংকলিত থাকে। আর এই তথ্যাদি থেকেই সংশ্লেষণ প্রক্রিয়াগুলো বুঝে নেওয়া যায়।

তাই দেখা যাচ্ছে, দুটোই পরষ্পরের ওপর নির্ভরশীল। ফলে কোষ বিভাজনের সময় তাঁদের এক সঙ্গে উপস্থিত থাকতে হবে। এ কারণেই প্রাণ নিজে থেকেই উৎপত্তি লাভ করবে- এমন কাল্পনিক সম্ভাবনাটি বালিত হয়ে যায়। ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান্টিয়াগো ইউনিভার্সিটির বিবর্তনবাদী অধ্যাপক রেসলি অরগেল, সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগজিনের ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বরের প্রকাশনায় একটি প্রবন্ধে এ সত্যটি স্বীকারও করেন, যে- গঠনগতভাবে জটিল প্রোটিন ও অ্যামাইনো এসিড উভয়েই একই সময় একই জায়গা হতে উৎপন্ন হবে, এটা একেবারেই অসম্ভব। তার ওপর এদের একটি ছাড়া অন্যটির অস্থিত্বও অসম্ভব বলে মনে হয়।

তাই প্রকৃতপক্ষে প্রাণ কখনো রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তৈরী হতে পারতো না। বিবর্তনবাদীরা এটার কী ব্যাখ্যা দেবেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.