আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারত কেন মঙ্গলে যেতে চায়?

মঙ্গলগ্রহে সাফল্যের সঙ্গে একটি নভোযান পাঠাতে সক্ষম হয়েছে ভারত। চতুর্থ মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মঙ্গলের মাটি ছোঁয়ার লক্ষ্য নিয়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইশরো (আইএসআরও) এই মহাকাশযান পাঠিয়েছে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্স অরবিটার মিশন নামে ভারতের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন স্পেস সেন্টার থেকে গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ২টা ৩৮ মিনিটে এ মহাকাশযান যাত্রা শুরু করেছে।
ভারতের পাঠানো ক্ষুদ্রাকার ও মনুষ্যবিহীন এ যানটি ৩০০ দিন যাত্রা শেষে এই নভোযান মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছাবে।

ভারতের পাঠানো স্যাটেলাইটটি যদি মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে সফলভাবে পৌঁছাতে পারে তবে মঙ্গল অভিযানে রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পর চতুর্থ অভিযাত্রী দেশ হিসেবে ভারত নাম লেখাতে পারবে।
ভারতের মঙ্গল অভিযানে যাওয়া মনুষ্যবিহীন এ স্যাটেলাইটটিকে বলা হচ্ছে ‘মঙ্গলায়ন’ বা ‘এমওএম’। এ নভোযানটি মঙ্গলগ্রহে মিথেন গ্যাসের অনুসন্ধান করবে। এ ছাড়াও মঙ্গলের আবহাওয়া ও মানচিত্র তৈরির কাজও করবে।
যুক্তরাজ্যের মহাকাশ গবেষকেরা বলছেন, মঙ্গলে নভোযান পাঠানোর মাধ্যমে ভারত মহাকাশ জয়ের দৌড়ে শামিল হয়েছে।


অবশ্য যে দেশে হাজার হাজার শিশু অপুষ্টির অভাবে মারা যাচ্ছে সেদেশের ৭ কোটি  ২০ লাখ মার্কিন (৪৫০ কোটি রুপি) ডলার খরচ করে বিলাসী গবেষণার বিষয়টি যথেষ্ট সমালোচনাও তৈরি করেছে। তবে ভারতের গবেষকেরা দাবি করছেন, তাঁদের এ মহাকাশ গবেষণার পেছনে যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ রয়েছে। এর একটি হচ্ছে সাধারণ কারণ। মহাকাশ নিয়ে আগ্রহ। এর আগে চাঁদ নিয়ে ভারত গবেষণা করেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মতো মঙ্গল গ্রহ নিয়েও গবেষণা করছে ইশরো।
ইশরোর প্রকল্প প্রধান বলেছেন, গত দেড় বছর ধরে তিনিসহ প্রায় ৫০০ বিজ্ঞানী অসম্ভব পরিশ্রম করেছেন এবং মঙ্গলযান সফলভাবে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন।
কিন্তু এ পরিশ্রমের সঠিক কারণ কী? এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কী নতুন করে মহাকাশ জয়ের প্রতিযোগিতা শুরু করল ভারত?

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, চীন, ভারত, জাপানের মতো দেশগুলো মহাকাশে নিজেদের বিজয়রথ ছোটাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার খাতিরে এ ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। মঙ্গল অভিযানে চীনকে পেছনে ফেলার সুযোগ হিসেবে দেখছে ভারত। এখন পর্যন্ত মহাকাশ অভিযাত্রার ক্ষেত্রে প্রতিবারই ভারতকে হারিয়েছে চীন।

চীনের তৈরি রকেট ভারতের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এ ছাড়াও ২০০৩ সালে মহাশূন্যে ভারতের আগে মনুষ্যবাহী নভোযান পাঠিয়েছে চীন। এ ছাড়াও ভারতের আগে ২০০৭ সালে চাঁদেও নভোযান পাঠিয়েছে চীন। ২০১১ সালের নভেম্বর মঙ্গলে অভিযান চালিয়েছিল চীন। কিন্তু তাদের সে অভিযান সফল হয়নি।

১৯৯৮ সালে জাপানের অভিযান ব্যর্থ। মঙ্গলে সফল অভিযান চালিয়ে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে যেতে চাইছে ভারত।

ভারত এ অভিযানকে গর্বের বিষয় হিসেবেই দেখছে। ইশরোর স্যাটেলাইট সেন্টারের পরিচালক এসকে শিবকুমার বলেন, জাতির গর্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এতদিন মহাকাশ দৌড়ে ছিলাম না।

মঙ্গল মিশনের সাফল্য মানসিকভাবে ভারতকে এগিয়ে দেবে।

তবে সমালোচকরা কি ছেড়ে দিচ্ছেন? ভারতের একজন অর্থনীতিবিদ বলছেন, শুধু সুপারপাওয়ার খ্যাতির জন্য ভারতের এ অভিলাষ।

তবে ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তার ভাষ্য, সমালোচনা থাকবেই, ক্ষুধা-দারিদ্র্য থাকবেই। তাই বলে কী স্বপ্ন দেখার সাহস করা যাবে না? 

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.