আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবিতজন (১ম পর্ব)- শোভন মুহাম্মাদ

======================================================================================= জীবিতজন (১ম পর্ব)- শোভন মুহাম্মাদ =======================================================================================

ছেলেটা ক্লান্ত হয়ে ঘাড় থেকে নামিয়ে রাখলো বস্তাটা। প্রচন্ড খাটনি হচ্ছে। বস্তার ভিতরে একটা মেয়ে। বয়সে তার চেয়ে বড় হতে পারে। ওজন বেশীই বলা যায়।

ছেলেটা বস্তার মুখটা একটু খুলে দিল। আগুনে ঝলসে বিভৎস হয়ে আছে মুখ। সেদিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো ছেলেটি। উঠে দাড়িয়ে দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন।
“এমন করছো কেন?”
“কি বলছ?” ছেলেটা অবাক হয়ে দেখল দিব্যি কথা বলছে মেয়েটা।

দেখার পর থেকে এই প্রথম কথা বললো। এর আগে ছেলেটিকে দেখে পশুর মতো চিৎকার করেছে শুধু।
“খামোখা খাঁটনি করছো। আমি বাঁচবোনা”
“অবশ্যই বাঁচবে। ”
“আমার শরীর যেভাবে পুড়েছে বাঁচার কোন আশাই নেই।

বরং বাড়তি খাটনি করে তুমি মারা যাবে”
“তোমাকে মরতে দিচ্ছিনা। সারা পৃথিবীতে আর কোন মানুষ বেঁচে আছে কিনা কে জানে। তোমাকে মরতে দেয়া যায়না। ”
“মানুষ আছে। আর তাদের জন্যই আমার এ অবস্থা।


এমন আশংকাই করেছিলো ছেলেটি। কিন্তু মুখে বললো, “বাদ দাও।   তোমার নাম বলো?”
“নাম বলবো না। নাম বলার মতো অবস্থা নাই আমার। ”
ছেলেটা হাসলো, “কোন খারাপ অবস্থা নাই তোমার।

এই বস্তাটা আসলে লাইফ সাপোর্ট ব্যাগ। তোমার সারা শরীরে মির্দারাইটন দেয়া হয়েছে। তোমার শরীর সাড়ছে। তবে এটা সত্যি সময় মতো তোমাকে হাসপাতালে পৌছানোটা আমার জন্য একটা চ্যালেন্জ। সম্ভবত আমরা দুজনেই মারা যাবো তাতে।

কিন্তু তাতে কি আসে যায়? তোমাকে বাচাঁতে না পারলে আমারইবা বেঁচে কি হবে? নিঃসঙ্গতা আর ভালো লাগে না আমার। ”
“দুজনে মারা যেয়ে লাভটা কি? তুমি বেঁচে থাকো। হয়তো বা নিঃসঙ্গতা কেঁটে যাবে তোমার। মানুষ আরো আছে তাতো বললামই তোমাকে। ”
“হ্যাঁ তা আছে।

আমার নিজেরই একটা ছেলে আছে। দু বছর বয়স। ”
“তোমার ছেলে আছে? বলো কি? তোমার বয়স কতো?”
“১৭ বছর। বাবা আরো আগে বিয়ে দিয়েছিল আমার। তোমার বয়স কতো?”
“১৩ বছর।


“১৩?আমি তো ভেবেছিলাম ১৯ হবে। ওজন বেশী লাগছিলো। ”
“ওজন বেশীই আমার। তুমি আর পাগলামো কোরোনা। ছেড়ে দাও আমাকে।


“বাচ্চাটার জন্য বাঁচ?”
“কোন দরকার নাই। ওর একটা মা দরকার-বয়স কালে স্ত্রী।   কিছুই কি দিতে পারবো আমি ওকে? আমার বাচাঁ না বাঁচায় তাই কিছু আসে যায়না। ”
“তুমি পাগল। ”
“হতে পারি।

বহু দিন নিঃসঙ্গ দিন কেটেছে আমার। ছেলেটাকে শীতল কক্ষে আটকে রেখেছিলাম ভাইরাসের ভয়ে। সম্পূর্ণ একা ছিলাম তখন। দুঃস্বপ্ন দেখতাম প্রতিদিন। পাগল হয়ে যেতে ও পারি।


“ছেলেটাকে এখন কোথায় রেখে এসেছ?”
“সেখানেই যাচ্ছি আমরা। ও একা একা থাকতে পারে। ট্রেনিং দেয়ে আছে। তাছাড়া ওইটা একটা স্বয়ংক্রিয় শিশুপালন কেন্দ্র। তাই কোন ভয় নেই আমার।



Normal 0
false false false
EN-US X-NONE BN-BD


/* Style Definitions */ table.MsoNormalTable {mso-style-name:"Table Normal";
mso-tstyle-rowband-size:0;
mso-tstyle-colband-size:0;
mso-style-noshow:yes;
mso-style-priority:99;
mso-style-parent:"";
mso-padding-alt:0cm 5.4pt 0cm 5.4pt;
mso-para-margin-top:0cm;
mso-para-margin-right:0cm;
mso-para-margin-bottom:10.0pt;
mso-para-margin-left:0cm;
line-height:115%;
mso-pagination:widow-orphan;
font-size:16.0pt;
mso-bidi-font-size:14.0pt;
font-family:"Calibri","sans-serif";
mso-ascii-font-family:Calibri;
mso-ascii-theme-font:minor-latin;
mso-hansi-font-family:Calibri;
mso-hansi-theme-font:minor-latin;}
======================================================================================= ফেসবুকে,,,,,, =======================================================================================

সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।