আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলাম ধর্মের গ্যারাকলে মিঃ ফিলিপ রথ !!!



মিঃ ফিলিপ রথ , একজন ভদ্রলোক! তিনি নাস্তিক ছিলেন পরে আস্তিক হয়েছেন !ধর্মনিয়ে তার প্রচন্ড আগ্রহ , অনেক ধর্ম যাচাই করে তিনি ইসলাম গ্রহন করেছেন । ইসলাম গ্রহন করলেতো আর হবেনা ইসলামের শিক্ষা অর্জন করতে হবে , এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগও করতে হবে , তাই মিঃ ফিলিপ রথ একজন ইসলাম ধর্মের শিক্ষক খুজতে লাগলেন , এবং পেয়েও গেলেন কয়েকজন । তিনি ৫ জন ধর্ম শিক্ষক নির্বাচন করে তাদের প্রতেকের কাছে ১ ঘন্টা করে ধর্ম শিক্ষা নিতে শুরু করলেন । ধরি মিঃ রথের ধর্ম শিক্ষকদের নাম ১)ডক্টর মাওলানা শাহ সুফি কুতুবুদ্দিন আল চিশতি আল কাদেরি আল হাসানি আল হোসেনি ২)ডক্টর শায়েখ বিলওয়াল সালাফি ৩)ডক্টর মুফতি মাওলানা ইসমাইল আল দেওবন্দি ৪)ডক্টর মাওলানা মিরযা তাহের আল আহমদি ৫)ডক্টর শায়েখ আবদাল রহমান আল আফগানী এরা প্রতেকেই ইসলাম ধর্মের উচ্চ শিক্ষা প্রাপ্ত। মিঃ রথ সুন্দর একটা ইসলামি নাম খুজছেন ,তিনি মনে প্রানে মুসলিম তাই তা নামটাও তেমন হতে হবে তাই তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ ) এর পালক পুত্র জায়েদ এর নাম পছন্দ করে নিজের নামটাও জায়েদ রাখলেন ।

আজ প্রথম ক্লাশ তার ডক্টর মাওলানা শাহ সুফি কুতুবুদ্দিন আল চিশতি আল কাদেরি আল হাসানি আল হোসেনি সাহেবে বয়ান দিচ্ছেনঃ “একজন মুসলিমকে অবশ্যই এক জাদরেল পীরের হাতের বায়াত হতে হবে নাইলে তার নাজাত নাই । বড় পীর আব্দুল কাদের (রাঃ ) হলো সবার চেয়ে বড় তিনিই রুহানি ভাবে সব করেন , তিনি মরনের পর মুনকার নকিরের সওয়ালের উত্তর দিয়ে দিবেন তিনি জান্নাতে নিয়ে নিবেন , তার কাছে অন্য কারো কোনো তুলনা নাই এমনকি নবীদেরও তিনি আহলে বাইত তাই তার আহলদের হাতে হাত রাখলেই মুক্তি , নামাজ কালাম , রোজা কিছুর দরকার নাই সব বাতেনে হয়ে যাবে , লেখাপড়ার দরকার নাই নিজ পীর ছিনাদিয়ে রুহাই জ্ঞান কলবে ঢুকিয়ে দিবেন , মাজারে যাও , ওরস করো আর এই ওযিফা দিলাম আমল কর । পাক পাজ্ঞাতন সব , সব জ্ঞান আলী (আঃ) থেকে আসে অন্য জ্ঞান ভুল । সৌদি হজ করা যাবেনা ওরা ওহাবি , ওরা ইয়াজিদি ওরা কাফের । ওহাবি দের থেকে ইয়াজিদের বংশধর থেকে হেফাজতে থাকো ।

আমাদের আকিদা ছাড়া বাকি সব ভুল , বাকি সবাই মুসলিম নামের কাফের , আমরাই সঠিক । নবী নুরের তৈরি , হাজের নাজির । নবী সাঃ গায়েবের খবর জানেন , তিনি মারা জাননি, তিনি আল্লাহর নুরের অংশ , তিনি কবরে জিবিত। আল্লাহ নিরাকার ও সর্ব জায়গায় বিরাজমান , নিজ পীর আল্লাহর মত সন্মান পাবে , পির আল্লাহ থেকে যুদা না, আল্লহর অনেক কাজই তো কুতুব অলি আওলিয়ারা করে দেন । তোমারে জান্নাতে নিবো আমি নিজে , কারন বড় পীরের পা আমার গর্ধানে আছে ।

এবার কিছু নজরানা দিয়ে বাড়ি যাও বাবা “ প্রথম ক্লাশ শেষ এবার মিঃ ফিলিফ রথ ওরফে জায়েদ ২য় ক্লাশে আসলেন , ক্লাশ নিচ্ছেন ডক্টর শায়েখ বিলওয়াল সালাফি সাহেব , তিনি বয়ান শুরু করলেনঃ “ এই জগতে একমাত্র মহান সংস্কারক হলো শায়েখ নাসীরউদ্দিন আলবানী , তার সকল কথা অন্ধভাবে মানলে নাজাত নিচ্চিত , কিন্তু কোনো মাযহাব মানা যাবেনা, মাযহাবের কথা কুরান হাদিসে নাই । তাকলিদের কথা কুরান হাদিসে নাই । তাই মাযহাবি ভন্ডদের মানা যাবেনা । এরা ফিকাহের নামে মাযহাবের নামে উলটা পালটা মাসালা তৈরি করে , এরা কাফির । মানুষের শুধু শায়েখের বর্নীত ও যাচাই করা হাদিস ও কুরান মাওতে হবে ।

অন্য কিছু না না । সকল পীরেরা ভুয়া এরা এরা ধর্ম বেচে খায় আর এরা শির্ক ও বেদাতে লিপ্ত । এরা কাফের , এরা মাজার পুজা করে ও পীরেরে সেজদা করে শির্ক করে । একমাত্র সঠিক মত হলো সালাফিয়াত অন্যরা কাফির। নবী মাটির তৈরি , নবি গায়েব জানেন না , নবী হাজের নাজির না , নবী সাঃ মারা গেছেন , তিনি আমাদের মত মাটির তৈরি মানুষ ।

আর আলয়াহ সাত আসমানের উপর । আল্লাহর হাত পা চোখ নাক আছে । আমরাই সঠিক বাকি সব ভুল । ৩য় ক্লাশ শুরু বয়ান শুরু করলেন ডক্টর মুফতি মাওলানা ইসমাইল আল দেওবন্দি সাহেব । “ ইসলামে ৪ টা মাযহাব আছে , হানাফি , মালেকি , সাফেয়ি , হাম্বলি এই ৪ মাযহাবের মধ্যে তোমায় যেকোনো একটা মানতেই হবে ।

নাইলে উপায় নাই । যারা মাযহাব না মানার কথা বলে তারা ফেতনা তৈরি করছে তারা ইহুদিদের দালাল । একমাত্র সত্যিকার ধর্মীয় শিক্ষা হলো ভারতের দেওবন্দের নেসাব বাকি সব খ্রিষ্ট্রানদের তোরি , পীর গ্রহন করতে হবে তবে মাজার পুজারী রিজভিদের থেকে বেদাতিদের থেকে দূরে থাকবে । এরা সয়তানের চ্যালা । এরা কাফের ।

এরা ইসলামের শত্রু , এরা শির্ক করে । নবী সাঃ মাটির তৈরি নুরের মানুষ । তিনি মাটির হলেও আমাদের মত মানুষ নয় , তিনি মহা মানব । তিনি কবরের মধ্যে জিবিত আছেন, মানে হায়াতুন নবী । নবী হাজির নাজির না ।

তিনি গায়েব জানেন না । নবী শেষ নবী , খাতামান নবী তিনি ছাড়া আর কোনো নবী আসবেনা । ইসলামে কোনো সাহাবিকে ছোটো করা যাবেনা । মওদুদি বাদ থেকে দূরে থাকতে হবে । কুরান হাদিস ইজমা কিয়াস মানতে হবে ।

রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালাতে হবে , কুরান দিয়া রাস্ট্র চালাইতে হবে । মাজে মজে তাবলিগে চিল্লা লাগাইতে হইবে । ইসতেমায় যেতে হবে বছর বছর । পরিবা পরিকল্পনা মানা যাবেনা নবীর উম্মত বাড়াইতে হবে । মুখ দেন যিনি আহার দেন তিনি ।

কাদিয়ানি মিথ্যুক ও ভন্ড নবী, তাকে অমুসলিম বলবে , তারা কাফের । আমরাই যারা মাযহাব মানি আমরা ছাড়া বাকি সব কাফের । “ ৪ র্থ ক্লাশ। লেকচা শুরু করলেন ডক্টর মাওলানা মিরযা তাহের আল আহমদী সাহেব । “ আমরা শেষ যুগে আইসা গেছি , ইসলামে আছে ইমাম মাহদি আসবে তিনি আলহামদুলিল্লা আইসা গেছেন , ইসা আঃ ও ইমাম মাহদি আর কেউ নন , তিনি আমাদের গোলাম আহমেদ কাদিয়ানি আঃ তিনিই হলেন শেহ নবীর উম্মত হিসেবে নবী হযরত ইসা আঃ নিজেই ।

তাকে না মানা ও তার আওলাদ ও খলিফাদের হাতে হাত দিয়ে বায়াত না হলে আপনি মুসলমানই না। এখন ফেতনার যুগে দাজ্জাল রুপি খ্রিষ্ট্রান ইহুদি সভ্যতাকে কলম যিহাদের মাধ্যমে আল্লাহ মাহদি মসিহ আঃ পাঠিয়েছেন । নুহু আঃ এর কিস্তির মত আল্লাহ তাকেও রহমতের কিস্তি দিয়েছেন , বর্তমানে তার খেলাফতের যুগ চলছে । আপনি তার হাতে বায়াত হলে জান্নাতে তিনি নিজে নিয়ে যাবেন । ধর্মের নামে যুদ্ধ নিষিদ্ধ করা হইলো , রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করা হইলো ।

আমরাই একমাত্র সহি মুসলিম বাকি সব কাফের । “ এবার ৫ম শিক্ষক এসে বয়ান শুরু করলেনঃ “ডক্টর শায়েখ আবদাল রহমান আল আফগানী । মানুষের তৈরি সকল আইন কুফুরি । আল্লাহর আইনের জন্য যিহাদ করতে হবে , হাতে অস্ত্র নিয়ে কতল করতে হবে । প্রয়োজন হলে আফগান যাও ওখানে ট্রেনিং নিয়ে যুহাদ কর , মরলে সোজা জান্নাতে যাবা , শহিদ হবা।

সকল তরুনদের বোজাতে হবে । একমাত্র আল্লহর আইনে প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের জান মাল সব দিতে হবে । রাস্ট্র ক্ষমতা দখলের জন্য খিলাফতের জন্য প্রয়োজনে বোমা মেরে , ককটেল মেরে হত্যা করতে হবে । এটাই ইসলাম যারা আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে তারা সব কাফের মুশরেখ । তাদের কিতাল করা ফরজ ।

দরকার হলে আত্মঘাতি হামলা করতে হবে । নাস্তিক পাইলে সাথে সাথে জাহান্নামে পাঠাইতে হবে । আমরা ছাড়া আর কেউ সঠিক পথে নেই । আসো তোমাকে আফগান পাঠাই , আল্লার পথের সৈনিক হবার জন্য ট্রেনিংয়ে পাঠাই । হে শহিদ পথের যাত্রী , টানা টানা হুরের মেহমান চলো আমার সাথে ।

এবার মিঃ ফিলিপ রথ ভয় পেয়ে গেলেন , এমনিতেই তিনি খুব ভিতু । এই যিহাদ বোম শুনে ভয়ে দিলেন দৌর । একটা ঔষধের দোকান থেকে ঘুমের ট্যাবলেট কিনে খেয়ে নিতে হবে । মাথার তার ছিড়ে গেছে তার । একটু ঘুম দরকার ।

তিনি সারাদিন ইসলামের লেকচার শুনে ক্লান্ত । আর লেকচারে নিজেকে সঠিক ও অন্যকে ভুল ও কাফির বলায় তিনি বিভ্রান্ত !! কে সঠিক ? এই প্রশ্ন তার মনে। না আজ আর কোনো চিন্তা না । যে ধর্মে এত দল সেখানে তিনি কারো কথা মানবেন না ইসলামে থাকলে। তিনি নিজে পড়ে বুজে মানবেন তার কোনো শিক্ষক দরকার নাই ।

কাল চিন্তা করে দেখতে হবে । আর যাই হোক নাস্তিক হওয়া যাবেনা নাস্তিকদের বড় বিপদ এখন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.