আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিষেই মরেছিলেন আরাফাত: প্রতিবেদন

ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামের নেতা ইয়াসির আরাফাতের দেহাবশেষে বিষাক্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ পলোনিয়ামের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা।

আল-জাজিরা আজ বৃহস্পতিবার জানায়, সুইস বিজ্ঞানীরা আরাফাতের দেহাবশেষের নমুনায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়েও অন্তত ১৮ গুণ বেশি পলোনিয়ামের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন।

বিজ্ঞানীরা জানান, তাঁরা এ ব্যাপারে ৮৩ শতাংশ নিশ্চিত যে সাবেক এ নেতাকে পলোনিয়াম বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হয়েছেন যে পলোনিয়ামই তাঁর মৃত্যুর কারণ।

সুইজারল্যান্ডের লোজান্নায় অবস্থিত সেন্টার অব লিগ্যাল মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ১০৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা বলেন,  আরাফাতের পাঁজর ও মেরুদণ্ডের নিচের অংশে এবং মাটিতে মিশে যাওয়া মাংশপেশিতে অস্বাভাবিক মাত্রার পলোনিয়াম পাওয়া গেছে।

গত বছর নভেম্বরে ফ্রান্স, রাশিয়া ও সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের একটি দল ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরবর্তী রামাল্লায় আরাফাতের সমাধি থেকে তাঁর মৃতদেহ তুলে দেহাবশেষের নমুনা সংগ্রহ করেন।

যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ফরেনসিক বিজ্ঞানী ও সাবেক গোয়েন্দা ডেভ বার্সলে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, সুইস বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফলে প্রমাণিত হচ্ছে যে আরাফাতকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ইয়াসির আরাফাত পলোনিয়ামের বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন। ... আমরা আরাফাতের মৃত্যুর আসল কারণ খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু এর পেছনে কে বা কারা ছিল, সে ব্যাপারে এখনো কিছু জানতে পারিনি।

বার্সলে জানান, আরাফাতের পাঁজরে পাওয়া পলোনিয়ামের মাত্রা প্রায় ৯০০ মিলি বেকারেল (তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা মাপার একক হলো বেকারেল)। বিজ্ঞানীদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ১৮ থেকে ৩৬ গুণ বেশি।

ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামের নেতা আরাফাত ফ্রান্সের ক্লামায় অবস্থিত হাসপাতালে হেমোরেজিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বরে ৭৫ বছর বয়সে মারা যান।

পলোনিয়াম নরম, ধূসর-রুপালি বর্ণের এক প্রকার ধাতু। এটা ইউরেনিয়ামের আকরে পাওয়া যায়।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার মতে, পলোনিয়াম ২১০ নামের আইসোটোপটি উঁচুমাত্রায় তেজস্ক্রিয় কণা ছড়ায়। কিন্তু এসব কণা বাতাসে ভেসে কয়েক সেন্টিমিটারের বেশি যেতে পারে না। একটি কাগজ বা আমাদের দেহের ত্বকে মৃত কোষের যে আস্তরণ থাকে, তাতেই এটি ঠেকে যেতে পারে।

কিন্তু ০.১ মিলিগ্রামের মতো পলোনিয়াম খাবার অথবা পানীয়তে মিশিয়ে দেওয়া হলে তা প্রাণনাশক হতে পারে। পলোনিয়ামের বিষক্রিয়ায় এর আগেও কয়েকজন মারা গেছে বলে জানা যায়।

২০০৬ সালে পলোনিয়ামের বিষক্রিয়ায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কমিটির সাবেক কর্মকর্তা অ্যালেকজেন্ডার লিটভিনেনকোর মৃত্যু বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়।  

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।