আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পবিত্র মাস মহররম ও আশুরার ফজিলত

মহররম মাস হচ্ছে আরবি বছরের প্রথম মাস। মহররম মাসের অনেক বড় ফজিলত রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত- হজরত রাসূলে পাক (সা.) বলেন, রমজানের ফরজ রোজার পর উৎকৃষ্ট হলো মহররম মাসের রোজা (মুসলিম শরিফ)। হজরত আদম (আ.)-এর জমানা থেকে সর্বশেষ নবী (সা.) পর্যন্ত সবার কাছে মহররম সম্মানিত মাস। মোবারক মাস ও ইবাদতের মাস হিসেবে গণ্য হয়ে এসেছে।

এ মাসের মধ্যে একটি বিশেষ দিন আছে, ১০ মহররম তারিখে যাকে আশুরা দিবস বলা হয়, যার মর্তবা অনেক বেশি।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসূলে পাক (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে আগমন করলেন, তখন তিনি সেখানকার ইহুদিদের আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা এই দিনে রোজা রাখছ কেন? তারা উত্তরে বলল, এটি একটি বিরাট সম্মানিত দিন। এই দিনে আল্লাহপাক হজরত মূসা (আ.) এবং তার উম্মতকে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরাউন ও তার বাহিনীকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস করে দেন। তাই হজরত মূসা (আ.)-এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এ দিনে রোজা পালন করেন বিধায় আমরাও এ দিনে রোজা রাখি।

এতদশ্রবণে হজরত রাসূল (সা.) বলেন, হজরত মূসা (সা.)-এর নাজাতে কৃতজ্ঞতা আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা তোমাদের চেয়ে বেশি উপযুক্ত ও অধিক হকদার। অতঃপর হজরত রাসূলে পাক (সা.) নিজে ওই আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং মুমিনদেরও রোজা রাখার হুকুম প্রদান করেন (বুখারি ও মুসলিম)।

হজরত ইবনে আব্বাসী থেকে আরও বর্ণিত- তিনি বলেন, যখন হজরত রাসূলে পাক (সা.) আশুরার রোজা রাখেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে রোজা রাখার জন্য হুকুম প্রদান করেন তখন তারা আরজ করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ এ দিনটি এমন যে দিনের প্রতি ইহুদি ও খ্রিস্টান জাতির লোকরা সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। (অথচ আমরা তাদের বিরোধিতা করার জন্য আদিষ্ট) এতদশ্রবণে হজরত রাসূলে পাক (সা.) বলেন, আমি যদি আগামী বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকি তাহলে মহররমের ৯ ও ১০ তারিখে দুদিন রোজা রাখব। (মুসলিম)।

হজরত আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলে পাক (সা.) বলেন, আশুরার রোজা পালনে আমি আল্লাহপাকের কাছে আশা পোষণ করি যে, তিনি আমার বিগত বছরের গুনাহরাশি ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত_ তিনি বলেন, তোমরা ৯ ও ১০ মহররম রোজা পালন করে ইহুদিদের বিরোধিতা কর। (তিরমিযি)। আমার ভাই ও বোনেরা, আপনারা এ বরকতময় মাস মহররমে বিশেষ করে আশুরার দিনে সাধ্যানুযায়ী শরিয়ত সমর্থিত নেকির কাজগুলো সম্পন্ন করুন।

সাবধান এদিন উপলক্ষে এমন সব কাজ থেকে দূরে থাকবেন যেগুলো শরিয়ত সমর্থন করে না। আর আপনারা নবীর পরিবার-পরিজনদের ভর্ৎসনা ও অশ্রাব্য, অপমানমূলক কথাবার্তা থেকে দূরে থাকুন। এ আশুরার দিনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হজরত আদম ও হাওয়া (আ.)-এর তওবা কবুল করেন। এ দিনেই নূহ (আ.)-এর কাশতি জাহাজ মাটিতে লেগে ছিল এবং মহাপ্লাবন থেকে নাজাত লাভ করেছিল। ১০ মহররম ইব্রাহীম খলিল নমরুদের আগুন থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।

এ দিনেই হজরত ইদ্রিস (আ.) আসমানে গিয়েছিলেন। এদিনেই হজরত আইয়ুব (আ.) রোগমুক্ত হয়েছিলেন। এ দিনে হজরত ইউনূস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এ দিনেই হজরত সুলাইমান (আ.) রাজত্ব ফিরে পেয়েছিলেন। এ দিনেই হজরত ইমাম হোসাইন ও নবীর বংশধর কারবালায় শহীদ হয়েছিলেন।

এ দিনেই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল আবার এদিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে, কেয়ামত কায়েম হবে। এ দিনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। বিশ্ব মুসলিম মিল্লাতের কাছে এ দিনটি অনেক পবিত্র। আমরা ভাব-গাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করব। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।

আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।

 

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে ৬৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.