আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসির ভাবনায় আগামী ৭ দিন

কমিশনাররা বলছেন, রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য তারা খুব বেশি হলে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন। সংবিধান অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে হলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
কিন্তু তাতে শেষ মুহূর্তে কোনো জটিলতা তৈরি হলে তফসিল পরিবর্তনের সময় থাকবে না। এ কারণে তার আগে তফসিল ঘোষণার একটি ছকও কমিশনাররা ভেবে রেখেছেন। আর শেষ পর্যন্ত কোন পথে ইসি এগোবে- তা নির্ভর করছে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে যাওয়া নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের সম্ভাব্য ঘটনাপ্রবাহের ওপর।

    
এ কারণে এ সপ্তাহ ঘিরেই দশম সংসদ নির্বাচনের ‘হিসাব’ কষছে নির্বাচন কমিশন। অবশ্য এর মধ্যেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরবে ইসি।
নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ভোট হতেই হবে। সরকারের ধারাবাহিকতাও রাখতে হবে। নির্বাচন করতে সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে আমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে।

একটি নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর তফসিল তো দিতেই হবে। ”
দেশের মানুষের মতো কমিশনও সমঝোতার আশায় দলগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই কমিশনার বলেন, তারা সব দলের অংশগ্রহণেই নির্বাচন চান।
“নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কী হবে, কী করতে হবে তা এ সময়ে স্পষ্ট হয়ে যাবে।

আমরাও আমাদের সিদ্ধান্ত নেব। প্ল্যান অফ অ্যাকশন অনুযায়ী চলব। ”
২৭ অক্টোবর থেকে নির্বাচনকালীন ক্ষণ গণনা শুরু হলেও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির বিপরীতমুখী অবস্থানে গত কিছুদিন ধরেই চলছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা।
‘নির্দলীয়’ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি গত তিন সপ্তাহে দশ দিন হরতাল করেছে। আর এর মধ্যেই নির্বাচনকালীন ‘সর্বদলীয়’ সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।


দুই দলকে সমঝোতায় আনতে ব্যবসায়ী ও দুই বাম দলের উদ্যোগ এ পর্যন্ত সাফল্যের দেখা পায়নি। গত ২৬ অক্টোবর দু্ই নেত্রীর মধ্যে বহু প্রত্যাশিত ফোনালাপ হলেও তাতে তিক্ততা বরং বেড়েছে।   
এরই মধ্যে ১৮ নভেম্বর, অর্থাৎ সোমবার বসছে সংসদের মুলতবি অধিবেশন।   প্রধানমন্ত্রী এর আগে বলেছেন, বিরোধী দল সংসদে এসে সঙ্কট সমাধানের আলোচনা তুলবে এই আশাতেই তিনি অধিবেশন শেষ করেননি, চালু রেখেছেন।     
এদিকে ‘সর্বদলীয়’ সরকার গঠনের জন্য মন্ত্রীরা ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে দিয়ে রেখেছেন।

শুক্রবার শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ফেরার পর মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের কাজে হাত দেবেন বলে এর আগে ইংগিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।    
এ সপ্তাহেই বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বসবেন।
নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে বড় দুই দলকে সংলাপে বসানোর ক্ষেত্রে নিশা দেশাইয়ের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।

একই আহ্বান জানিয়েছে ভারত, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
সব মিলিয়ে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহই বলে দেবে, কী হবে তাদের সেই ‘প্ল্যান অফ অ্যাকশন’।
 
 
এর প্রস্তুতি হিসাবে প্রয়োজনে পুনঃতফসিল এবং ভোটের পর ফলের গেজেটে প্রকাশ ও শপথ শেষ করার সময় হিসাব করে দুটি বিকল্প নিয়ে ভাবছেন ইসির কর্মকর্তারা।  
ইসি সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, তৃতীয় সপ্তাহে [১৭-২৩ নভেম্বর] সব প্রস্তুতি শেষ করে পরিস্থিতি দেখে শেষ সপ্তাহে [২৪-৩০ নভেম্বর] তফসিল দিলে নির্বাচনের সব আনুষ্ঠানিকতা সারার পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে।
আর তা না হলে ১ ডিসেম্বর রোববার থেকে ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় থাকছে ৪৭ দিন।

এরপর ২৪ জানুয়ারি পর‌্যন্ত গেজেট প্রকাশসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার জন্য সময় পাওয়া যাবে মাত্র এক সপ্তাহ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ইতোমধ্যে বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ‘শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত’ সমঝোতার অপেক্ষায় থাকবেন তারা।
এই ‘শেষ মুহূর্ত’ নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ নাকি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ- এমন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেন, “আপনারাই তো হিসাব করে দেখছেন। আমাদেরও বেশি সময় দেয়ার থাকবে না। ”
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিক জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি অবহিত করতে রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চেয়ে ইতোমধ্যে আবেদন করেছে ইসি।


ওই বৈঠকে সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব তফসিল ঘোষণার আগে সার্বিক প্রস্তুতি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরবেন।
পাশাপাশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতিও এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখা তফসিল ঘোষণার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করছে। আচরণবিধি চূড়ান্ত করে পাঠানো হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়ে। ভেটিং হয়ে এলে প্রয়োজনীয় ‘ম্যানুয়াল’ ও মনোনয়ত্রের মুদ্রণ শেষ করা হবে।


জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে ধরে তফসিলের আসনওয়ারি খসড়া প্রস্তুত করা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার।
বিগত নবম সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া সিইসির ভাষণের ভিডিও বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে সংগ্রহ করছে জনসংযোগ শাখা।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সিইসির এবারের ভাষণে সব দলকে ভোটে আসার আহ্বান থাকছে।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.