আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কারাগার প্রেমের দারুন খবরটি না পড়লে পুরাই মিস...

এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কার্যালয়। এক দুপুরে নিজ অফিসে ঢুকতে গিয়ে থমকে দাঁড়ান তিনি। দেখেন এক তরুণী কাঁদছেন হাউমাউ করে। তার কাছে কান্নার কারণ জানতে চাইলেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা। এরপর ঘটনা যেভাবে এগিয়েছে তার কিছু প্রচলিত, কিছু একেবারেই নতুন।

ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির দুই বছরের প্রেম। সম্পর্ক দিনকে দিন ঘনিষ্ঠ হয়েছে আরও। কিন্তু বিয়ের কথা উঠলেই বেঁকে বসে ছেলেটি। বার বার ছেলেটির মন গলাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় মেয়েটি। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই প্রতারণার অভিযোগে ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা করে মেয়েটি।

পুলিশ গ্রেপ্তার করে প্রতারক প্রেমিককে। নিম্ন আদালত জামিন না দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয় কারাগারে। এরপর আবারও নিম্ন আদালতে জামিনের চেষ্টা করে ব্যর্থ ছেলেটি। তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। হাইকোর্ট ছেলেটির জামিন মঞ্জুর করে।

মুক্ত প্রেমিক কোনদিনও তাকে বিয়ে করবে না সে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে মেয়েটির মনে। এ কারণে ছেলেটির মুক্তি ঠেকাতে এটর্নি জেনারেলের কাছে ছুটে আসে মেয়েটি। তিনি এটর্নি জেনারেলকে বলেন, স্যার আপনি আমার জন্য কিছু করেন। হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এটর্নি জেনারেল তাকে জানান, মামলাটি খুবই দুর্বল।

তবুও নাছোড়বান্দা মেয়েটি কেঁদেই চলে। একপর্যায়ে এটর্নি জেনারেল রাজি হন হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যেতে। চেম্বার বিচারপতি আদালতে আবেদন উত্থাপন করেন তিনি। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার এ ধরনের আবেদন উত্থাপনে বিস্ময় প্রকাশ করেন চেম্বার বিচারপতি। মানবিক কারণেই এ আবেদন দায়ের করা হয়েছে বলে আদালতকে জানান তিনি।

এজলাসে উপস্থিত নারী আইনজীবীরাও হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের অনুরোধ জানান। এক পর্যায়ে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত ঘোষণা করেন। আটকে যায় ছেলেটির মুক্তির পথ। কিছুদিন পরই মেয়েটি আবার হাজির হয় এটর্নি জেনারেল দপ্তরে। এটর্নি জেনারেলকে জানান, স্যার ও আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে।

ও বলেছে আমি যেন তার মুক্তির ব্যবস্থা করি। কারাগার থেকে বেরিয়েই ও আমাকে বিয়ে করবে। এটর্নি জেনারেল তাকে পরামর্শ দেন কারাগারেই বিয়ের ব্যবস্থা করার। কারাগারেই বিয়ের আয়োজনের জন্য কারাকর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে মেয়েটি। ব্যবস্থা করে কারাকর্তৃপক্ষ।

১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়ে যায় তাদের। এবার আবার এটর্নি জেনারেলের কাছে ছুটে আসে মেয়েটি। স্বামীকে কাছে ফিরে পাওয়ার তাড়া তার। এটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘স্যার ওর মুক্তির ব্যবস্থা করেন। ’ মাহবুবে আলম আবার ছুটে যান চেম্বার বিচারপতির আদালতে।

আদালতে গিয়ে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আর আপিল চালানো হবে না। হাইকোর্টের আদেশ যেন বহাল রাখা হয়। চেম্বার বিচারপতি জানতে চান, কোন সুখবর কি আছে? মাহবুবে আলম সুখবরের কথা জানান। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন চেম্বার বিচারপতি। তবে বিপত্তি তখনও কাটেনি।

নিম্ন আদালত বন্ধ। এ কারণে ছেলেটির জামিননামা গ্রহণে মুখ্য মহানগর হাকিমকে হাইকোর্টের আদেশ দেয়া প্রয়োজন হয়ে পড়ে। মেয়েটি আবারও এটর্নি জেনারেলের কাছে আসে। কিন্তু এটর্নি জেনারেল বলেন, আমি রাষ্ট্রপক্ষ। আমি তো হাইকোর্টে এ আবেদন নিয়ে যেতে পারি না।

তুমি অন্য আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করো। অন্য আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদনটি হাইকোর্ট বেঞ্চে উত্থাপনের চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। পরে এটর্নি জেনারেল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে গিয়ে পুরো বিষয়টি উত্থাপন করেন। পরদিন মেয়েটির আইনজীবী আবারও আবেদন করেন। কাজ হয় এতে।

হাইকোর্টের আদেশে মুক্তি মেলে ছেলেটির। এ গল্পের মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটে এটর্নি জেনারেল অফিসে মেয়েটির মিষ্টি নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে। এ ভাল কাজটি তৃপ্তি দেয় এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.