আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কালও অন্ধকারে ছিলেন মন্ত্রীরা, সচিবালয়ে স্থবিরতা

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা গতকালও অন্ধকারে ছিলেন। দিনভর অপেক্ষা করেও জানতে পারেননি তাঁরা মন্ত্রিসভায় থাকছেন কি না। নতুন মন্ত্রীরা শপথ নিয়ে বসে আছেন দপ্তরের অপেক্ষায়। নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন জনপ্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তো অধৈর্য হতে পারি না।

আমরা চেষ্টা করছি, যাতে বিরোধী দল আসে। আমরা সব কটি পন্থায় চেষ্টা করছি তাদের আনার। এ জন্যই কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ’ মন্ত্রিসভার আকার সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি যদি সরকারে যোগ দেয়, তাহলে পরিকল্পনা এক রকম, না দিলে অন্য রকম।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির জন্য অপেক্ষা করার পাশাপাশি ১৮-দলীয় জোট এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতাকে সরকারে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

তাঁদের কয়েকজনকে উপদেষ্টা করার প্রস্তাব দিয়ে দর-কষাকষি চলছে। পাশাপাশি পুরোনো মন্ত্রীদের মধ্যে অনেকে নির্বাচনকালীন সরকারে থাকার আগ্রহ নিয়ে নানা তদবির করে যাচ্ছেন। এসব সামাল দিতেই মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন এবং মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন চূড়ান্ত করতে দেরি হচ্ছে।

গতকালও বেশির ভাগ মন্ত্রী সচিবালয়ের দপ্তরে যাননি। গুরুত্বপূর্ণ কোনো বৈঠকও হয়নি।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদকে সভাপতিত্ব করতে বলা হলেও তিনি প্রথমে আসতে রাজি হননি। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপে বৈঠকে যান তিনি। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, ভূমিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে গতকাল কোনো ফাইলে স্বাক্ষর হয়নি। মন্ত্রী পর্যায়ে বা সচিব পর্যায়ে বড় কোনো বৈঠকও ছিল না। ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম দপ্তরে এসে কিছুক্ষণ থেকে চলে যান।

প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানও অফিস করছেন না। ফলে এই মন্ত্রণালয়ে কাজ আটকে গেছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী গতকাল অফিসে যাননি। ফলে এসব মন্ত্রণালয়ের কাজ-কর্ম খুব একটা হয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকসহ কয়েকজন আরও আগেই বিদায় নিয়েছেন।

আর শপথ নেওয়ার দুদিন পরও দপ্তর পাননি নতুন মন্ত্রীরা।

সব মিলিয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বেশির ভাগই কয়েক দিন ধরে অফিস করছেন না। এ কারণে কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের অনেকে সচিবালয়ের দপ্তরে যাচ্ছেন না, কেউ কেউ সরকারি বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন।

মন্ত্রীপাড়া হিসেবে পরিচিত মিন্টো রোডে গতকাল বিদায়ের প্রস্তুতি দেখা গেছে।

ঢাকার অন্যান্য এলাকায় মন্ত্রীদের সরকারি বাড়িতেও একই চিত্র ছিল। ভূমি প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল সরকারি বাড়িতে থাকা নিজের মালামাল সরাতে শুরু করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকও মিন্টো রোডের বাড়িতে থাকা নিজস্ব মালামাল গোছগাছ করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন গণপূর্তের একজন কর্মকর্তা। এ ছাড়া আরও কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বাড়ি ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা গতকালও রাত আটটা পর্যন্ত সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন।

কিন্তু তাঁরাও জানতে পারেননি, মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন বা থাকছেন না। তবে আজ মন্ত্রিসভার আকার ও মন্ত্রীদের দপ্তর পুনর্বণ্টনের বিষয়টি সুরাহা হতে পারে।

১১ নভেম্বর মন্ত্রিসভার সদস্যরা পদত্যাগ করেও পদে রয়েছেন। এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে গত সোমবার আরও আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হলেন। এখন উপদেষ্টা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যা ৬৭।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।